Sylhet ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজরাইলকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব

দীর্ঘ দুই দশক পলাতক থাকার পর কক্সবাজারের মহেশখালীর আলোচিত সিরিয়ার কিলার মো. লোকমান ওরফে আজরাইলকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

বুধবার ভোরে র‍্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া দ্বীপের একটি গোপন আস্তানা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

আজরাইল মহেশখালীর আলোচিত জিয়া বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড এবং নবনিয়োগ শাখার (রিক্রুটমেন্ট উইং) প্রধান হিসেবে পরিচিত।তার বিরুদ্ধে ৪ হত্যা মামলা ও ৪ হত্যাচেষ্টাসহ কমপক্ষে ১০ মামলার রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের মহেশখালীতে খুন, ডাকাতি, অপহরণ, ঘের দখল-পালটা দখলের অন্ধকার জগতে লোকমান ওরফে আজরাইল এক সুপরিচিত নাম। সশস্ত্র সন্ত্রাসী তৎপরতা ও লক্ষ্যবস্তুর প্রতি নৃশংসতার ভয়াবহতায় ধীরে ধীরে মহেশখালীর মূর্তিমান আতঙ্কের নামান্তর হয়ে উঠলেও নানান কৌশলে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে। ২০০৬ সাল থেকে অপরাধ জগতে সদর্প পদচারণার পর অবশেষে গ্রেফতার হলেন লোকমান। তাকে মহেশখালী থানার দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহেশখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে মর্মে র‍্যাব সূত্রে জানা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৮ ডিসেম্বর লোকমান ও তার বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে কক্সবাজার জেলার প্রথম শহিদ শরীফ চেয়ারম্যানের ছোট ছেলে এবং কালামারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বরত চেয়ারম্যান ও মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওসমান গনিকে কুপিয়ে ও গলায় গুলি চালিয়ে হত্যা করেন। এছাড়া ২০১১ সালের ২১ মে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জলদস্যু দমনে সহায়তা করার সন্দেহে কুরআনের হাফেজ আব্দুল গফুরকে কুপিয়ে হত্যা করার পর তার দ্বিখণ্ডিত মস্তক হতে হাত দিয়ে মগজ বের করে নেন তারা।

লোকমান ও তার সহযোগিদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই মেলেনি মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান গনিরও৷ নিজেদের আধিপত্য নিশ্চিত করতে ২০১২ সালের ২৯ মার্চ কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে। একই বছরের ১১ জুন কুপিয়ে ও বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মৎস্যজীবী বেলাল হোসেনকে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, লোকমান উপজেলার সক্রিয় প্রধান ডাকাত গ্রুপ জিয়া বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। একজন ক্রমিক খুনি (সিরিয়াল কিলার) হিসেবে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বিদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ভাড়াটে খুনি হিসেবেও তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ঘের দখলকারী হিসেবে তার এবং তার দলের পরিচিতি স্থানীয়ভাবে সর্বজনবিদিত।

গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকা র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, দীর্ঘদিন নিবিড় অনুসরণের পর আমরা আসামি লোকমানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। কক্সবাজারে সক্রিয় বিভিন্ন নামে বাহিনীগুলোর সশস্ত্র ক্যাডারদের আইনের আওতায় আনতে র‍্যাবের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

নিরীহ কারও নামে মামলা হলে আইনি প্রক্রিয়ায় প্রত্যাহার: আইজিপি

আজরাইলকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব

প্রকাশের সময় : ০৬:১৩:৫৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

দীর্ঘ দুই দশক পলাতক থাকার পর কক্সবাজারের মহেশখালীর আলোচিত সিরিয়ার কিলার মো. লোকমান ওরফে আজরাইলকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

বুধবার ভোরে র‍্যাব-১৫ এর একটি আভিযানিক দল বঙ্গোপসাগরের সোনাদিয়া দ্বীপের একটি গোপন আস্তানা থেকে তাকে গ্রেফতার করে।

আজরাইল মহেশখালীর আলোচিত জিয়া বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড এবং নবনিয়োগ শাখার (রিক্রুটমেন্ট উইং) প্রধান হিসেবে পরিচিত।তার বিরুদ্ধে ৪ হত্যা মামলা ও ৪ হত্যাচেষ্টাসহ কমপক্ষে ১০ মামলার রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কক্সবাজারের মহেশখালীতে খুন, ডাকাতি, অপহরণ, ঘের দখল-পালটা দখলের অন্ধকার জগতে লোকমান ওরফে আজরাইল এক সুপরিচিত নাম। সশস্ত্র সন্ত্রাসী তৎপরতা ও লক্ষ্যবস্তুর প্রতি নৃশংসতার ভয়াবহতায় ধীরে ধীরে মহেশখালীর মূর্তিমান আতঙ্কের নামান্তর হয়ে উঠলেও নানান কৌশলে ছিলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধরাছোঁয়ার বাইরে। ২০০৬ সাল থেকে অপরাধ জগতে সদর্প পদচারণার পর অবশেষে গ্রেফতার হলেন লোকমান। তাকে মহেশখালী থানার দুটি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মহেশখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে মর্মে র‍্যাব সূত্রে জানা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৮ ডিসেম্বর লোকমান ও তার বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে কক্সবাজার জেলার প্রথম শহিদ শরীফ চেয়ারম্যানের ছোট ছেলে এবং কালামারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বরত চেয়ারম্যান ও মহেশখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ওসমান গনিকে কুপিয়ে ও গলায় গুলি চালিয়ে হত্যা করেন। এছাড়া ২০১১ সালের ২১ মে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে জলদস্যু দমনে সহায়তা করার সন্দেহে কুরআনের হাফেজ আব্দুল গফুরকে কুপিয়ে হত্যা করার পর তার দ্বিখণ্ডিত মস্তক হতে হাত দিয়ে মগজ বের করে নেন তারা।

লোকমান ও তার সহযোগিদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞ থেকে রেহাই মেলেনি মহেশখালীর মাছ ব্যবসায়ী, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ওসমান গনিরও৷ নিজেদের আধিপত্য নিশ্চিত করতে ২০১২ সালের ২৯ মার্চ কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় তাকে। একই বছরের ১১ জুন কুপিয়ে ও বুকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় মৎস্যজীবী বেলাল হোসেনকে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, লোকমান উপজেলার সক্রিয় প্রধান ডাকাত গ্রুপ জিয়া বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। একজন ক্রমিক খুনি (সিরিয়াল কিলার) হিসেবে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বিদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ভাড়াটে খুনি হিসেবেও তিনি নিয়মিত দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ঘের দখলকারী হিসেবে তার এবং তার দলের পরিচিতি স্থানীয়ভাবে সর্বজনবিদিত।

গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্বের ভূমিকায় থাকা র‍্যাব-১৫ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার হোসেন শামীম বলেন, দীর্ঘদিন নিবিড় অনুসরণের পর আমরা আসামি লোকমানকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। কক্সবাজারে সক্রিয় বিভিন্ন নামে বাহিনীগুলোর সশস্ত্র ক্যাডারদের আইনের আওতায় আনতে র‍্যাবের তৎপরতা অব্যাহত থাকবে।