মৌলভীবাজার সংবাদদাতা:: মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় কুচাই ফাঁড়ি চা-বাগানের শ্রমিকেদের অর্ধেক উৎসব ভাতা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় ৪ ঘণ্টা কাজ বন্ধ রেখে বিক্ষোভ করেছেন তাঁরা। আজ শুক্রবার সকাল ৯টার পর থেকে ২০০-৩০০ শ্রমিক বাগানের ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে অবস্থান নেন। পরে বাগানের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা কাজে ফিরে যান।
কয়েকজন শ্রমিক বলেন, কুচাই ফাঁড়ি চা-বাগানে ৮৫৪ জন স্থায়ী নারী-পুরুষ শ্রমিক আছেন। বাগানের মালিকপক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা-শ্রমিক ইউনিয়নের চুক্তি অনুযায়ী, বছরে প্রত্যেক শ্রমিক ৫২ দিনের মজুরির (দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা হিসাবে) সমপরিমাণ উৎসব ভাতা পান। ওই ভাতার ৪০ শতাংশ দোলপূর্ণিমা উৎসব ও বাকি ৬০ শতাংশ শারদীয় দুর্গাপূজার আগে দেওয়া হয়ে থাকে। আগামী রোববার থেকে দোলপূর্ণিমা শুরু হবে। উৎসবে বাগান কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের আপাতত ভাতার ২০ শতাংশ টাকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এতে শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়। শ্রমিকেরা ভাতার টাকা নেবেন না বলে জানিয়ে দেন। এ দিকে আজ সকাল নয়টার দিকে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে বাগানের ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে বাগানের কর্মকর্তাদের কাছ থেকে এ ব্যাপারে আশ্বাস পেয়ে বেলা একটার দিকে তাঁরা কাজে ফিরে যান।
ডানকান ব্রাদার্স’ নামের একটি বহুজাতিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান কুচাই ফাঁড়িসহ পার্শ্ববর্তী শিলুয়া চা-বাগান পরিচালনা করছে। দুটি বাগানের দায়িত্বে থাকা ব্যবস্থাপক শহীদুল ইসলাম খান বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাঁদের কোম্পানির ১৫টি চা-বাগান আছে। অর্থসংকটে কর্তৃপক্ষ সব বাগানেই দোল পূর্ণিমা উৎসবে উৎসব ভাতার অর্ধেক টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কুচাইয়ের শ্রমিকেরা তা মেনে নিতে পারছেন না। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ বিষয়ে তাঁরা কথা বলবেন। উৎসবভাতার বাকি টাকা কবে দেওয়া হবে, তা আগামীকাল শনিবার জানানো হবে। শ্রমিকেরা এ আশ্বাসে কাজে ফিরে গেছেন।
বাগানের শ্রমিক পঞ্চায়েত কমিটির সদস্য পূরণ মুন্ডা, হীরামোহন তেলী, কবিতা রাজবংশীসহ ১০-১৫ শ্রমিক বলেন, অতীতে তাঁদের বাগানে এ রকম ঘটনা ঘটেনি। হঠাৎ করে বাগান কর্তৃপক্ষ অর্ধেক বোনাস প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সবার মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আগামী রোববারের মধ্যে বোনাসের পূর্ণ টাকা না পেলে তাঁরা কঠোর কর্মসূচি দেবেন বলে হুঁশিয়ার করেন।