হাওড়ে ফসল রক্ষা বাঁধের দায়িত্ব পেতে রীতিমতো প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) পেতে লেনদেন না করতে কর্মকর্তাদের কড়া সতর্কবার্তা উপেক্ষা করেই চলছে গোপন আঁতাত। রাজনৈতিক প্রভাবে পিআইসি পেতে লেনদেনে সম্পৃক্ত হয়েছেন মাঠ পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তাও। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুপারভিশন কর্মকর্তাদের (এসও) ঘুস দিয়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি বরাদ্দ নিতে দরকষাকষি করা হচ্ছে।
আগে যেখানে আওয়ামী লীগ নেতারা সম্পৃক্ত ছিলেন, এখন সেখানে এসেছেন অন্য একটি রাজনৈতিক দলের নেতারা। বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব পেতে ছোট-বড় ১৩৭টির মধ্যে ৫৩টি বড় হাওড়ে প্রতিবছরই ফসল রক্ষা বাঁধ দিতে পিআইসি গঠন করা হয়। গতবারের চেয়ে এবার ব্যয় অর্ধেকে নেমে আসায় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মধ্যে উৎকণ্ঠাও আছে। যুগান্তরের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে এসব তথ্য। সুনামগঞ্জের শাল্লা, তাহিরপুর, দোয়ারাবাজার উপজেলার বেশ কয়েকজন কৃষক প্রায় অভিন্ন তথ্য দিয়ে যুগান্তরকে জানান, পিআইসি পেতে যেভাবে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে তাতে প্রতিবছরের মতো এবারও লুটপাটের শঙ্কা রয়েছে। জেলার প্রতিটি উপজেলায়ই এখন পিআইসি কমিটি পাওয়ার প্রতিযোগিতা। বাঁধ নির্মাণে কী এত মধু, জানি না। তবে ২০১৮ সালে পিআইসি শুরু হওয়ার পর থেকে কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে পিআইসি নিজের পকেটে নিয়ে লুটপাট করেছেন। এবার সেই স্থানে যুক্ত হয়েছেন স্থানীয় কয়েকজন নেতা। তাই লুটপাট ঠেকাতে এখনই এসব নেতার আয়োজনে ‘ছাই’ দিতে হবে।
জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেটের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, হাওড়ের ফসল রক্ষা বাঁধ নিয়ে যাতে ভবিষ্যতে কোনো অভিযোগ না আসে, এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপের (ডব্লিউএমজি) আওতায় আনা সম্ভব হলে ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে কোনো অভিযোগ আসবে না। তাই ডব্লিউএমজির আওতায় এলাকার সব কৃষককে পৃথকভাবে সম্পৃক্ত করা হবে। ‘জমি যার জলা তার’-এর আওতায় কৃষকনির্ভর হাওড়, কৃষকনির্ভর হবে বাঁধও।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে সম্ভাব্য সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যদি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোনো এসও’র বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায়, তাৎক্ষণিকভাবে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা এলাকার মানুষের সহযোগিতা চাই। কেউ যেন টাকা দিয়ে পিআইসি নিতে আগ্রহী না হন।
জানতে চাইলে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া যুগান্তরকে বলেন, বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ আমার কানে আসার পর কড়া সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। কিছু কিছু স্থানে আমি নিজেও গিয়েছি। টাকা দিয়ে যাতে কেউ পিআইসির দায়িত্ব না নেন, এ ব্যাপারে গণশুনানিতে সচেতনতা তৈরি করা হচ্ছে। এরপরও যদি দলীয় প্রভাব বিস্তারে সহযোগিতা চায়, তাহলে তার আম-ছালা দুটোই যাবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক নেতাদেরও এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। পিআইসি নিতে লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেলে নেওয়া হবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। কোনো ধরনের অপসংস্কৃতি আমি সহ্য করব না। হাওড় এলাকার মানুষের একমাত্র ফসলের কথা বিবেচনা করার পরও যদি কেউ দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন, তাহলে সেই দায়িত্ব তার নিজের। প্রমাণ পেলে একচুল পরিমাণও ছাড় দেব না। যত বড় প্রভাবশালীই হন না কেন তাকে শাস্তির আওতায় আসতে হবে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, এবার সুনামগঞ্জের ১৪৩টি হাওড়ে ২ লাখ ২৩ হাজার ৩১০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চাষাবাদ উপযোগী এ জমিতে প্রায় ১৪ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হওয়ার আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। আর একমাত্র এই ফসল ঘরে উঠানোর আশায় হাওড় এলাকার কৃষকের সংগ্রাম এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে। ধান রোপণের আগেই সুরক্ষার ব্যবস্থা তৈরি করা হয় বাঁধ দিয়ে। এই শীত মৌসুমে ধান রোপণের কাজটি সম্পন্ন করে কৃষক। আবার বৈশাখে ধান কাটা শুরু করে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত চলতে থাকে। এর আগে যাতে পাহাড়ি ঢলে বোরো ফসল তলিয়ে যেতে না পারে, এ কারণেই ছোট-বড় ১৩৮টি হাওড়কে টার্গেট করে সরকার শতকোটি টাকা ব্যয় করে এই বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে। নীতিমালা অনুযায়ী-জমি যার, বাঁধ নির্মাণের দায়িত্বও তার। অথচ রাজনৈতিক বলয় ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার কারণে বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব পায় গ্রামের প্রভাবশালী একটি গ্রুপ। যারা বেশি বরাদ্দ পেতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুপারভিশন কর্মকর্তার (এসও) সঙ্গে যোগসাজশে লিপ্ত হন। তারা বরাদ্দের প্রকৃত ব্যয় গোপন করে অতিরিক্ত বরাদ্দ দিয়ে সরকারি টাকা লুটপাটের আয়োজন করেন। আগে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা পিআইসি বাণিজ্যে লিপ্ত ছিলেন। পট পরিবর্তনের পর এখন সেই কাজটি হাতে নিয়েছে অন্য দলের মাঠ পর্যায়ের কিছু নেতাকর্মী।
পিআইসি নিয়ে দরকষাকষির নজিরবিহীন এমন পরিস্থিতিতে এই প্রথমবার হাওড়ের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণে সরকারি নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। ওই চিঠিতে তিনি বলেন, বিগত সময়ে হাওড় রক্ষা বাঁধের পিআইসি গঠনে কাবিটা নীতিমালা-২০১৭ পুরোপুরি অনুসরণ করা হয়নি। এ নিয়ে গণমাধ্যমে অনেক অনিয়ম-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, হাওড় রক্ষা বাঁধে অনিয়ম-দুর্নীতির সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কয়েকজন কর্মকর্তা ও স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত থাকেন। প্রকাশিত সংবাদের তথ্য বিশ্লেষণ করে আরও জানা যায়, প্রকল্পে অতিরিক্ত বরাদ্দের মাধ্যমে সরকারি টাকা অপচয়, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ, হাওড়ে জমি নেই-এমন ব্যক্তিকে পিআইসি দেওয়া হয়েছে। ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার সফল গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশে নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তাই নীতিমালার বাইরে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সতর্কতা অবলম্বন করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করে শিশির মনির আরও বলেন, অন্যথায় নীতিমালা লঙ্ঘনের দায়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আমরা বাধ্য হব।
জানতে চাইলে শিশির মনির যুগান্তরকে বলেন, শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত পিআইসি চাই। হাওড়বাসীর ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ব্যবসা চলবে না। যারা মানুষের অহসহায়ত্ব নিয়ে ব্যবসা করতে চান, তারা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করার অনুপযোগী। সে হোক সরকারি কর্মকর্তা বা রাজনৈতিক দলের নেতা।
তিনি বলেন, সরকারি টাকার অপচয় না করে টেকসই বাঁধ নির্মাণ সম্ভব স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রমাণ করতে হবে। ১০ লাখ টাকার বাঁধ নির্মাণে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে ১৫ লাখ টাকা গোপন আঁতাতে লুটপাট বন্ধ করতে হবে। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই না।
পিআইসি বরাদ্দের নমুনা : কীভাবে সরকারি টাকা বাঁধের নামে মিলেমিশে লুটপাট করা হয়, এর হিসাব পাওয়া গেছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের টাস্কফোর্সের জরিপে। ২০২০ সালের পিআইসির বাঁধে মাটি কাটার একটি গোপন প্রতিবেদনে রীতিমতো সাগরচুরির আয়োজনের তথ্য ফাঁস করে পাউবোর টাস্কফোর্স। যেখানে একটি বাঁধে ৫ লাখ টাকার মাটি লাগার কথা, সেখানে ২০ লাখ টাকার হিসাব দেন পাউবোর তৎকালীন সুপারভিশন কর্মকর্তারা (এসও)। ‘রাত-দিন তফাত’ করে মাটির এমন হিসাবে রীতিমতো ব্যবসায় পরিণত করা হয় পিআইসিকে। এক থেকে দেড় লাখ টাকা হাতে নিয়ে এসওরা প্রতিবছর সরকারের কয়েক কোটি টাকা পকেটে নিয়েছে। লাভজনক এ প্রক্রিয়ায় শামিল হয়েছিলেন বিগত সরকারের সময়ে কয়েকজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও।
গোপনীয় ওই প্রতিবিদনে বলা হয়, সুনামগঞ্জের সদর উপজেলার কালনার হাওড়ের বাঁধের একটি অংশ মেরামতে মাটির কাজে ব্যয় হওয়ার কথা ২ লাখ ৯ হাজার টাকা। সেখানে খরচ বাড়িয়ে ব্যয় ধরা হয় ১৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ পাউবোর টাস্কফোর্সের হিসাবে ৫০৪ পার্সেন্ট মাটির কাজ বেশি ধরে বিল করা হয়। ইঞ্জিনিয়ারিং ভাষায় এটিকে বলা হয় ভেরিয়েশন। আবার পিআইসির সংখ্যাও বাড়ানো হয়। জেলার ছোট-বড় ১১টি হাওড় ঘুরে সরকারি টাকা লোপাটের ভয়াবহ এ চিত্র তুলে ধরে টাস্কফোর্স। বিষয়টি ওই সময় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও পাউবোর দুই নির্বাহী প্রকৌশলীর মতামতসহ প্রতিবেদন চাওয়া হয়। কিন্তু সুনামগঞ্জের তৎকালীন নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমানকে বদলি করা হলেও তার বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। দেওয়া হয়নি কোনো বিভাগীয় মামলাও। পরবর্তী সময়ে তাকে পদোন্নতি দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীও করা হয়। ৭৪৫টি পিআইসি দিয়ে টাকা বরাদ্দের খাত তৈরি করা হয়। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই টাকা মিলেমিশে ভাগাভাগি করেছেন। জেলার বরাম হাওড়, কাঁচিভাঙা হাওড়, নাইন্দার হাওড়, নলুয়ার হাওড় এবং ডেকার হাওড় রক্ষা বাঁধে ক্লোজিংসহ প্রি-ওয়ার্ক জরিপ (প্রকল্প গ্রহণের আগের জরিপ) কাজেও ব্যাপক গরমিল পায় প্রতিষ্ঠানটি। যার সর্বোচ্চ তারতম্য ছিল ১২১ দশমিক ২৫ শতাংশ ঊর্ধ্বে, যা প্রতিবেদন আকারে প্রেরণ করা হয়েছিল। কিন্তু কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় পোস্ট ওয়ার্ক (কাজ শেষ হওয়ার পর জরিপ) জরিপেও যার ব্যাপ্তি বিশাল আকার ধারণ করে এবং সর্বোচ্চ তারতম্যের পরিমাণ পরিলক্ষিত হয় ৫০৪ দশমিক ৭০ শতাংশ।’
জানা যায়, বোরো ফসল রক্ষায় এবারও ৬শ প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি (পিআইসি) গঠন করা হতে পারে। গতবারের তুলনায় এখন পর্যন্ত পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ৫৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। তবে এ বরাদ্দ আরও বাড়বে। ২০১৭ সালের আগাম বন্যায় সবকটি হাওড় তলিয়ে যাওয়ার পর সরকার ২০১৮ সালে প্রথম স্থানীয় প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে বাঁধ নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই বছর ৯৬৪ পিআইসির আওতায় ১ হাজার ৩৫০ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৫১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। ২০১৯ সালে ৫৭২ পিআইসির আওতায় ছিল ৪৫০ কিলোমিটার। বরাদ্দ ছিল ৮০ কোটি ২৪ লাখ টাকা। ২০২০ সালে ৭৪৫ পিআইসির আওতায় ৬৩৩ কিলোমিটার বাঁধের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় প্রায় ১০৩ কোটি টাকা। ২০২১ সালে পিআইসির সংখ্যা বেড়ে হয় ৮১০টি। বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারযোগ্য বাঁধের পরিমাণ আগের বছরের তুলনায় কমে ৬১৯ কিলোমিটারে আসে। আবার ২০২২ সালে পিআইসি কমে ৭২৭-এ নেমে আসে। বাঁধের পরিমাণও কমে দাঁড়ায় ৫৩৬ কিলোমিটার। ২০২৩ সালের প্রলয়ংকরী বন্যার পর আবারও পিআইসি বেড়ে দাঁড়ায় ১ হাজার ৬৪টিতে। বাঁধের পরিমাণও বেড়ে ৭৩৭ কিলোমিটারে এসে ঠেকে। গত বছর আবারও বন্যা হলে পিআইসি দেওয়া হয় ৭৩৪টি, আর সংস্কার ও নির্মাণাধীন বাঁধের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয় ৫৯৫ কিলোমিটার।
#যুগান্তর