Sylhet ০৪:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ব্যাপারে বিশ্ব মিডিয়া যা বলছেন

  • ভিশন ডেস্ক ::
  • প্রকাশের সময় : ০৩:৩০:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪
  • ১৭

ছাত্রজনতার আন্দোলন দমনে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি বিশ্ব গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।

এরমধ্যে বার্তাসংস্থা রয়টার্স তার শিরোনামে লিখেছে, ‘নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি’। বার্তাসংস্থাটি বলেছে, এ বছরের শুরুতে শুরু হওয়া সহিংস আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি শিরোনাম করেছে, ‘শেখ হাসিনা: সাবেক নেতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি।’ বিবিসি প্রতিবেদনে লিখেছে, গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একটি আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

 

প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি লিখেছে, ‘হাসিনা সরকার ২০১০ সালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিচার করতে এই আদালত প্রতিষ্ঠা করে। যদিও এটির বিচারকার্য নিয়ে জাতিসংঘসহ অন্যান্যরা প্রশ্ন তুলেছিল। অভিযোগ ছিল, বিরোধী দলীয় সদস্যদের হত্যায় এই আদালত ব্যবহার করা হয়েছে।’

 

এছাড়া পাকিস্তানের দ্য ডন, মধ্যপ্রাচ্যের গালফ নিউজ, খালিজ টাইমসেও হাসিনার বিরুদ্ধে জারি হওয়া পরোয়ানা নিয়ে প্রতিবেদন করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ভারতেই অবস্থান করছেন। সম্প্রতি জানা গেছে, হাসিনাকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিয়েছে ভারত। যা দিয়ে তিনি চাইলে অন্য দেশে যেতে পারবেন। কিন্তু তিনি যদি ভারতে থেকে থাকেন তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী তাকে ফেরত দিতে হবে।

 

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। সেই ট্রাইব্যুনালে জামায়াত-বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণা করা হয় এবং তা কার্যকরও হয়। সেই ট্রাইব্যুনালেই এখন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন শেখ হাসিনা। এখন এই আদালতে তারও বিচার হবে।

 

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন প্রায় ৩১ হাজার মানুষ। এর মধ্যে বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ।

 

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে গঠিত এ ট্রাইব্যুনালে পরিবর্তন আনা হয়। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে প্রধান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল পুনর্গঠনের অনুমোদন দেয় আইন মন্ত্রণালয়। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা ১৫ অক্টোবর বিচারিককাজে যোগ দেন। ইতোমধ্যে এই ট্রাইব্যুনালে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sylhet Vision

জগন্নাথপুর যুব জমিয়তের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি শপথ অনুষ্ঠিত

শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ব্যাপারে বিশ্ব মিডিয়া যা বলছেন

প্রকাশের সময় : ০৩:৩০:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্রজনতার আন্দোলন দমনে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন।

সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের জারি করা গ্রেপ্তারি পরোয়ানার বিষয়টি বিশ্ব গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।

এরমধ্যে বার্তাসংস্থা রয়টার্স তার শিরোনামে লিখেছে, ‘নির্বাসিত সাবেক প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি’। বার্তাসংস্থাটি বলেছে, এ বছরের শুরুতে শুরু হওয়া সহিংস আন্দোলনে গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি শিরোনাম করেছে, ‘শেখ হাসিনা: সাবেক নেতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি।’ বিবিসি প্রতিবেদনে লিখেছে, গণআন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের একটি আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

 

প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি লিখেছে, ‘হাসিনা সরকার ২০১০ সালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিচার করতে এই আদালত প্রতিষ্ঠা করে। যদিও এটির বিচারকার্য নিয়ে জাতিসংঘসহ অন্যান্যরা প্রশ্ন তুলেছিল। অভিযোগ ছিল, বিরোধী দলীয় সদস্যদের হত্যায় এই আদালত ব্যবহার করা হয়েছে।’

 

এছাড়া পাকিস্তানের দ্য ডন, মধ্যপ্রাচ্যের গালফ নিউজ, খালিজ টাইমসেও হাসিনার বিরুদ্ধে জারি হওয়া পরোয়ানা নিয়ে প্রতিবেদন করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শেখ হাসিনা ভারতেই অবস্থান করছেন। সম্প্রতি জানা গেছে, হাসিনাকে ট্রাভেল ডকুমেন্ট দিয়েছে ভারত। যা দিয়ে তিনি চাইলে অন্য দেশে যেতে পারবেন। কিন্তু তিনি যদি ভারতে থেকে থাকেন তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে থাকা প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী তাকে ফেরত দিতে হবে।

 

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। সেই ট্রাইব্যুনালে জামায়াত-বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণা করা হয় এবং তা কার্যকরও হয়। সেই ট্রাইব্যুনালেই এখন মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন শেখ হাসিনা। এখন এই আদালতে তারও বিচার হবে।

 

গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এতে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান। আহত হন প্রায় ৩১ হাজার মানুষ। এর মধ্যে বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ।

 

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে গঠিত এ ট্রাইব্যুনালে পরিবর্তন আনা হয়। বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে প্রধান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল পুনর্গঠনের অনুমোদন দেয় আইন মন্ত্রণালয়। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা ১৫ অক্টোবর বিচারিককাজে যোগ দেন। ইতোমধ্যে এই ট্রাইব্যুনালে অনেক অভিযোগ জমা পড়েছে।