সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ ৯৮ জনের নাম উল্লেখ করে মামলাটি হয়েছে। এতে অভিযোগ করা হয়েছে, মার্চ ফর ডেমোক্রেসি কর্মসূচিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে যেতে বাধা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এ কাণ্ড ঘটানো হয়েছে।
গুলশানের উপ-পুলিশ কমিশনার রিয়াজুল হক মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মার্চ ফর ডেমোক্রোসি কর্মসূচিতে ওইদিন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসনের যোগদান করার কথা ছিল। সেই উদ্দেশ্যে তিনি গুলশানের বাসা থেকে কর্মসূচিতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।
কিন্তু আসামিরা তার বাসার সামনে বালু ও ময়লার ট্রাক দিয়ে অবরুদ্ধ করার কারণে তিনি বাসা থেকে বের হতে পারেননি। এ ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে একটি মামলা করা হয়েছে।
পুলিশ মামলাটি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করবে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন না করে ২০১৪ সালে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়। অন্যদিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বচানের দাবিতে বিএনপির পক্ষ থেকে ২০১৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর মার্চ ফর ডেমোক্রোসি কর্মসূচি দেওয়া হয়। কর্মসূচিতে যেন খালেদা জিয়া যেতে না পারেন সেজন্য তার বাসার সামনে বালু ও ময়লার ট্রাক দিয়ে আটকে দেওয়া হয়।
থানা সূত্রে জানা গেছে, মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছাড়াও উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক ডিএমপি কমিশনার ও আইজিপি একে এম শহিদুল হক, সাবেক ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া, সাবেক এসবি প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলামসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, পুলিশের তৎকালীন আইজিপিসহ অন্য আসামিদের সঙ্গে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক হয়। খালেদা জিয়া কোনোভাবেই যেন কর্মসূচিতে অংশ নিতে না পারেন সে ব্যাপারে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। সে লক্ষ্যে পুলিশের সহযোগিতায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ধারালো ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়। ঘটনার দিন পুলিশ ব্যাপকভাবে খালেদা জিয়ার বাসভবনের আশপাশে অবস্থান নেয়।
বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইং কর্মকর্তা শামসুদ্দিন দিদার বলেন, খালেদা জিয়াকে মার্চ ফর ডেমোক্রোসি কর্মসূচিতে যেতে না দেওয়া এবং বাসভবনের সামনের দুই পাশের রাস্তায় বালুর ট্রাক দিয়ে বাধা সৃষ্টি করা ও তাকে হত্যার চেষ্টা করার বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে গুলশান থানায় এজাহার দাখিল করা হয়েছে। তৎকালীন পুলিশ ওই ঘটনায় মামলা নেয়নি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে ন্যায়বিচার এবং সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ওই ঘটনার বিচার দাবি করে মামলাটি করা হয়েছে।
এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হবে এবং ন্যায় বিচার নিশ্চিত করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।