Sylhet ১১:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ হাসপাতালে অবরুদ্ধ

  • ভিশন ডেস্ক ::
  • প্রকাশের সময় : ০১:১১:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪
  • ৫২

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ
রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ। সেখানে কঠোর নজরদারির পাশাপাশি তাদের কেবিনে অবরুদ্ধ ও হাসপাতালের ওয়াই-ফাই ও টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে। দেশের জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা জানান, চার দিনের আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার তাদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল। অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ হাসপাতালে ভর্তি থাকায় সেখান থেকেই তারা কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাতে ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নাহিদ ও আসিফের কক্ষের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই সদস্য পাহারা দিচ্ছেন।

সমন্বয়কদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালে যান এবং নাহিদ ও আসিফকে তাদের কেবিনে অবরুদ্ধ করে রাখে। পাশাপাশি হাসপাতালের ওয়াই-ফাই ও টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এ কারণে তারা সময়মতো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারেননি।

অথচ এদিন বিকেলে আসিফ মাহমুদের গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তারা সমন্বয়কদের সঙ্গে বৈঠক করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আসিফ তিনি ফোন করে জানান, তিনি ও নাহিদ হাসপাতালে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হাসপাতালের ওয়াই-ফাই ও টেলিফোন লাইন কেটে দিয়েছে। এ কারণে তারা অপর সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। সেইসঙ্গে হাসপাতালেই রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে একটি প্রেস ব্রিফিং করবেন বলেও জানান। তবে ওইদিন রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে কোনো প্রেস ব্রিফিংয়ের প্রস্তুতি দেখা যায়নি।

দ্য ডেইলি স্টারের ওই প্রতিবেদন বলছে, ওইদিন রাতে হাসপাতালের সপ্তম তলায় নাহিদের কেবিনের সামনে তিনজন ও তৃতীয় তলায় আসিফের কেবিনের সামনে চারজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে সাদা পোশাকে দেখা যায়। তারা নিজেদের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে এই প্রতিবেদককে কেবিনে প্রবেশ করতে দেননি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নির্দেশনা আছে বলেও জানান তারা।

পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা সংবাদ ব্রিফিং করতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমাদের নাহিদ ও আসিফের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। পরে আমরা হাসপাতাল থেকে চলে আসি।

আর নাহিদ ইসলামের বলেন, হাসপাতালের বাইরে অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অবস্থান করছেন। কাউকে ভেতরে ঢুকতে বা বের হতে দিচ্ছেন না। বিকেলের পর থেকে ইন্টারনেট সংযোগও পাচ্ছি না।

একইদিন রাতে হাসপাতালের পরিচালক জানান, সকাল থেকেই আমাদের হাসপাতালের ওয়েটিং রুমে কয়েকজন পুলিশের পোশাকে ও কয়েকজন সাদা পোশাকে অবস্থান করছেন। তারা হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রমে কোনো সমস্যা করেননি। আমাদের কাছে কিছু জানতেও চাননি। হাসপাতালের ভেতরে রোগীরা যেখানে থাকেন, সেদিকেও ঢোকেননি। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কোনো ঘটনাও ঘটেনি। আমরা স্বাভাবিকভাবে হাসপাতাল পরিচালনা করছি।

এর আগে গত শনিবার ভোরে রাজধানীর সবুজবাগের একটি বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে নাহিদ ইসলামকে তুলে নিয়ে যাওয়ারয অভিযোগ পাওয়া যায়। পরদিন রোববার তাকে পাওয়া যায়। এ সময় তার বাম উরু ও কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা ও গভীর ক্ষত ছিল। অন্যদিকে শুক্রবার আসিফ মাহমুদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। পাঁচ দিন পর তাকে পাওয়া যায়।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sylhet Vision

জনপ্রিয় সংবাদ

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ হাসপাতালে অবরুদ্ধ

প্রকাশের সময় : ০১:১১:৫২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ
রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ। সেখানে কঠোর নজরদারির পাশাপাশি তাদের কেবিনে অবরুদ্ধ ও হাসপাতালের ওয়াই-ফাই ও টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে। দেশের জাতীয় দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের একটি প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা জানান, চার দিনের আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর বৃহস্পতিবার তাদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল। অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ হাসপাতালে ভর্তি থাকায় সেখান থেকেই তারা কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু রাতে ওই হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নাহিদ ও আসিফের কক্ষের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই সদস্য পাহারা দিচ্ছেন।

সমন্বয়কদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালে যান এবং নাহিদ ও আসিফকে তাদের কেবিনে অবরুদ্ধ করে রাখে। পাশাপাশি হাসপাতালের ওয়াই-ফাই ও টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। এ কারণে তারা সময়মতো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারেননি।

অথচ এদিন বিকেলে আসিফ মাহমুদের গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তারা সমন্বয়কদের সঙ্গে বৈঠক করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আসিফ তিনি ফোন করে জানান, তিনি ও নাহিদ হাসপাতালে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হাসপাতালের ওয়াই-ফাই ও টেলিফোন লাইন কেটে দিয়েছে। এ কারণে তারা অপর সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। সেইসঙ্গে হাসপাতালেই রাত ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে একটি প্রেস ব্রিফিং করবেন বলেও জানান। তবে ওইদিন রাত ৮টার দিকে হাসপাতালে কোনো প্রেস ব্রিফিংয়ের প্রস্তুতি দেখা যায়নি।

দ্য ডেইলি স্টারের ওই প্রতিবেদন বলছে, ওইদিন রাতে হাসপাতালের সপ্তম তলায় নাহিদের কেবিনের সামনে তিনজন ও তৃতীয় তলায় আসিফের কেবিনের সামনে চারজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে সাদা পোশাকে দেখা যায়। তারা নিজেদের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে এই প্রতিবেদককে কেবিনে প্রবেশ করতে দেননি। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কঠোর নির্দেশনা আছে বলেও জানান তারা।

পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা সংবাদ ব্রিফিং করতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমাদের নাহিদ ও আসিফের সঙ্গে দেখা করতে দেয়নি। পরে আমরা হাসপাতাল থেকে চলে আসি।

আর নাহিদ ইসলামের বলেন, হাসপাতালের বাইরে অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অবস্থান করছেন। কাউকে ভেতরে ঢুকতে বা বের হতে দিচ্ছেন না। বিকেলের পর থেকে ইন্টারনেট সংযোগও পাচ্ছি না।

একইদিন রাতে হাসপাতালের পরিচালক জানান, সকাল থেকেই আমাদের হাসপাতালের ওয়েটিং রুমে কয়েকজন পুলিশের পোশাকে ও কয়েকজন সাদা পোশাকে অবস্থান করছেন। তারা হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রমে কোনো সমস্যা করেননি। আমাদের কাছে কিছু জানতেও চাননি। হাসপাতালের ভেতরে রোগীরা যেখানে থাকেন, সেদিকেও ঢোকেননি। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার কোনো ঘটনাও ঘটেনি। আমরা স্বাভাবিকভাবে হাসপাতাল পরিচালনা করছি।

এর আগে গত শনিবার ভোরে রাজধানীর সবুজবাগের একটি বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে নাহিদ ইসলামকে তুলে নিয়ে যাওয়ারয অভিযোগ পাওয়া যায়। পরদিন রোববার তাকে পাওয়া যায়। এ সময় তার বাম উরু ও কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা ও গভীর ক্ষত ছিল। অন্যদিকে শুক্রবার আসিফ মাহমুদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। পাঁচ দিন পর তাকে পাওয়া যায়।