লিবিয়া থেকে সাগরপথে অবৈধভাবে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন সুনামগঞ্জের দুই তরুণ।
মৃত দুই তরুণ হলেন- শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নের থলেরবন্দ গ্রামের আব্দুল ওয়াহাবের ছেলে সাহিবুর রহমান মান্না (২৩) ও ছাতক উপজেলার জাউয়াবাজার ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের সুন্দর আলীর ছেলে রেজাউল ইসলাম (২৪)। পরিবারের লোকজন বুধবার এ সংবাদ জেনেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত শুক্রবার লিবিয়া থেকে ইতালি যেতে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় উঠেন তারা। এ সময় তাদের সঙ্গে সুনামগঞ্জের আরও লোকজন ছিলেন। এর আগে দুইজনই দেশে ফোন করে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলেন। তবে বুধবার খবর পাওয়া যায় তাদের নিয়ে যাওয়া নৌকাটি ইতালি গেলেও পথে অসুস্থ হয়ে তারা দুইজন মারা গেছেন।
মৃত সাহিবুর রহমান মান্নার বড় ভাই শাহিবুল ইসলাম তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, এক ব্যক্তি ফোন করে তাদের জানিয়েছে তার ভাই ইতালি যাওয়ার পথে মারা গেছেন কিন্তু কিভাবে মারা গেছে, সেটা জানানো হয়নি।
তিনি আরও জানান, আমরা দরিদ্র মানুষ। অনেক কষ্ট করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উজ্জ্বল আহমদ নামে এক দালালের মাধ্যমে ১০ মাস আগে লিবিয়া যায় মান্না। এজন্য দালালকে সাড়ে ৯ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। আমাদের টাকা তো গেছেই ভাইকেও হারিয়েছি।
এ বিষয়ে শিমুলবাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান যুগান্তরকে বলেন, খবরটি আমি এলাকার লোকজনের মাধ্যমে শুনেছি কিন্তু মান্নার পরিবার বিষয়টি সম্পর্কে আমাকে কিছু জানায়নি।
শান্তিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ কাজি মোক্তাদির হোসেন বলেন, পরিবার বা স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের পক্ষ থেকে তাকে এ ব্যাপারে কোনো কিছু জানানো হয়নি।
মারা যাওয়া অপর যুবক রেজাউল ইসলাম এক বছর আগে দুবাই গিয়েছিলেন। এরপর সেখান থেকে মিসর হয়ে লিবিয়া যান। বুধবার (২৬ জুন) সকালে ওমান প্রবাসী বড় ভাই নজরুল ইসলামকে নৌকায় থাকা অন্যরা ফোনে রেজাউলের মৃত্যুর খবর জানান। তারা জানান- রেজাউল ও তার সঙ্গীয় অপর এক যুবক ইতালি যাওয়ার পথে অসুস্থ হয়ে মারা গেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় জাউয়াবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হক যুগান্তরকে বলেন, রেজাউলের মৃত্যু সংবাদ তার পরিবার থেকে আমাকে জানানো হয়েছে। আমি তাৎক্ষণিক ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করেছি। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মৃতদেহ দেশে আনার চেষ্টা করা হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছে রেজাউলের পরিবার।