Sylhet ১০:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জগন্নাথপুরে খামারবাড়িতে মিলল কিশোরের লাশ

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সাবেক ইউপি সদস্যদের খামারবাড়িতে এক কিশোরের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। মারা যাওয়া কিশোর লিংকন বিশ্বাস (১৭) চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ইউনিয়নের নয়াসন্দর গ্রামের শ্রীকান্ত বিশ্বাসের ছেলে। সে খামারবাড়িতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলো।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের নয়াসন্দর গ্রামের শ্রীকান্ত বিশ্বাসের ছেলে লিংকন বিশ্বাস (১৭) দীর্ঘদিন ধরে সাবেক ইউপি সদস্য লুলু মিয়ার খামারবাড়িতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত শনিবার (২২ জুন) দুপুরে লুলু মিয়ার খামারবাড়ির গোয়াল ঘরের নিকটস্থ পুকুর পাড়ের একটি গোবরে গর্ত থেকে লিংকনের মরদেহ উদ্ধার করেন খামার বাড়ির সংশ্লিষ্টরা। এসময় খামার বাড়ির মালিক লুলু মিয়া নিহতের পরিবারকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে যান লিংকনের বাবা শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও মা বাশন্তি রাণী।

এসময় তিনি জানান লিংকন খামারবাড়ি আমগাছে আম পাড়তে গেলে আমগাছ থেকে পড়ে গোবরের গাদায় ডুবে মৃত্যুবরণ করেন। এ ব্যাপারটি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবগত করলে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায়  পানিতে ডুবে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে লিংকন বিশ্বাসের মরদেহ দাফন করতে পরামর্শ দেন ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল। দাফনের একদিন পর কিশোর লিংকনের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।

লিংকনের পরিবারের দাবি তাদের সন্তান সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। সে সাঁতার জানতো। খামার বাড়ির ছোট্ট একটি আম গাছ থেকে পড়ে মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারন থাকতে পারে।

নিহত লিংকনের বোন পূর্ণিমা বিশ্বাস বলেন, আমার ভাই  পানিতে ডুবে মরতে পারে না। তার মৃত্যু দুর্ঘটনায় হয়নি। তাঁকে কেউ হত্যা করতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে।

নিহতের মা বাশন্তি রাণী বলেন, আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা আমার ছেলে এইভাবে মারা যাবে। তারা বলছে সে আম পাড়তে গিয়ে মারাগেছে। ছোট্ট আম গাছে উঠবে কেন। যেখানে নিচ থেকে আম পাড়া যায়। আমি বুঝতে পারছি না তার সাথে কি হয়েছে।

লিংকের বাবা শ্রীকান্ত বিশ্বাস বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমার আইন আদালত বুঝিনা। তারা যা বলছে তাই বিশ্বাস করেছি। আমি গিয়ে দেখছি আমার ছেলে লাশ পড়ে আছে। আমার আর কোনো হুঁশ বুদ্ধি ছিলনা। আমি আর কিছু জানিনা।

 

এদিকে খামারবাড়ি মালিক লুলু মিয়ার দাবি লিংকন  পানিতে ডুবে মারা গেছে। খামারের আরেক শ্রমিক জহিরুল তাঁকে খুঁজতে দিয়ে আম গাছের নিচে ডুবন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। বিষয়টি আমাকে জানালে আমরা কজন গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করি। পরিবারকে খবর দিলে তাদের কোনো অভিযোগ না থাকায় তারা তার মরেদেহ নিয়ে দাফন করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় তারা মরদেহ দাফন করেন।

 

জগন্নাথপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সুভাশীষ ধর বলেন, আমাদের বিষয়টি জানানো হয়নি। গণমাধ্যমে খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। তারা এ ব্যাপারে কিছু বলতে চায় না।পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান তিনি।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sylhet Vision

সুনামগঞ্জ সীমান্তে ‌পুলিশের হাতে দুই চিনি চোরাকারবারি গ্রেফতার

জগন্নাথপুরে খামারবাড়িতে মিলল কিশোরের লাশ

প্রকাশের সময় : ০২:৩১:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ জুন ২০২৪

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে সাবেক ইউপি সদস্যদের খামারবাড়িতে এক কিশোরের অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। মারা যাওয়া কিশোর লিংকন বিশ্বাস (১৭) চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের ইউনিয়নের নয়াসন্দর গ্রামের শ্রীকান্ত বিশ্বাসের ছেলে। সে খামারবাড়িতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলো।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চিলাউড়া-হলদিপুর ইউনিয়নের নয়াসন্দর গ্রামের শ্রীকান্ত বিশ্বাসের ছেলে লিংকন বিশ্বাস (১৭) দীর্ঘদিন ধরে সাবেক ইউপি সদস্য লুলু মিয়ার খামারবাড়িতে শ্রমিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত শনিবার (২২ জুন) দুপুরে লুলু মিয়ার খামারবাড়ির গোয়াল ঘরের নিকটস্থ পুকুর পাড়ের একটি গোবরে গর্ত থেকে লিংকনের মরদেহ উদ্ধার করেন খামার বাড়ির সংশ্লিষ্টরা। এসময় খামার বাড়ির মালিক লুলু মিয়া নিহতের পরিবারকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে যান লিংকনের বাবা শ্রীকান্ত বিশ্বাস ও মা বাশন্তি রাণী।

এসময় তিনি জানান লিংকন খামারবাড়ি আমগাছে আম পাড়তে গেলে আমগাছ থেকে পড়ে গোবরের গাদায় ডুবে মৃত্যুবরণ করেন। এ ব্যাপারটি স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অবগত করলে পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায়  পানিতে ডুবে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে লিংকন বিশ্বাসের মরদেহ দাফন করতে পরামর্শ দেন ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল। দাফনের একদিন পর কিশোর লিংকনের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়।

লিংকনের পরিবারের দাবি তাদের সন্তান সুস্থ ও স্বাভাবিক ছিল। সে সাঁতার জানতো। খামার বাড়ির ছোট্ট একটি আম গাছ থেকে পড়ে মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। মৃত্যুর পেছনে অন্য কোনো কারন থাকতে পারে।

নিহত লিংকনের বোন পূর্ণিমা বিশ্বাস বলেন, আমার ভাই  পানিতে ডুবে মরতে পারে না। তার মৃত্যু দুর্ঘটনায় হয়নি। তাঁকে কেউ হত্যা করতে পারে। বিষয়টি তদন্ত করলে বের হয়ে আসবে।

নিহতের মা বাশন্তি রাণী বলেন, আমি বিশ্বাস করতে পারছিনা আমার ছেলে এইভাবে মারা যাবে। তারা বলছে সে আম পাড়তে গিয়ে মারাগেছে। ছোট্ট আম গাছে উঠবে কেন। যেখানে নিচ থেকে আম পাড়া যায়। আমি বুঝতে পারছি না তার সাথে কি হয়েছে।

লিংকের বাবা শ্রীকান্ত বিশ্বাস বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমার আইন আদালত বুঝিনা। তারা যা বলছে তাই বিশ্বাস করেছি। আমি গিয়ে দেখছি আমার ছেলে লাশ পড়ে আছে। আমার আর কোনো হুঁশ বুদ্ধি ছিলনা। আমি আর কিছু জানিনা।

 

এদিকে খামারবাড়ি মালিক লুলু মিয়ার দাবি লিংকন  পানিতে ডুবে মারা গেছে। খামারের আরেক শ্রমিক জহিরুল তাঁকে খুঁজতে দিয়ে আম গাছের নিচে ডুবন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। বিষয়টি আমাকে জানালে আমরা কজন গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করি। পরিবারকে খবর দিলে তাদের কোনো অভিযোগ না থাকায় তারা তার মরেদেহ নিয়ে দাফন করেন।

ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। পরিবারের কোনো অভিযোগ না থাকায় তারা মরদেহ দাফন করেন।

 

জগন্নাথপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার সুভাশীষ ধর বলেন, আমাদের বিষয়টি জানানো হয়নি। গণমাধ্যমে খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। তারা এ ব্যাপারে কিছু বলতে চায় না।পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানান তিনি।