এক সপ্তাহ পর মেঘ কেটে সিলেটে আজ রোদ উঠল। সূর্যের আলোর সঙ্গে বিভিন্ন পয়েন্টের পানিও কমেছে। এতে নগর ও বিভিন্ন উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। যদিও এখনো পাঁচ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়েই প্রবাহিত হচ্ছে। তবে বন্যায় মানুষের ভোগান্তি বেড়ে চলছে। সঙ্গে বাড়ছে বন্যাকবলিত মানুষের সংখ্যাও।
২১ জুন শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত বন্যাকবলিত মানুষের সংখ্যা সাড়ে নয় লাখ ছাড়িয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেট কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সিলেটে ২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। তবে কিছুটা উন্নতির দিকে ছিল শুক্রবারের অবস্থা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সিলেটের নদ-নদীগুলোর পানি কমতে শুরু করেছে। যদিও এখনো জেলার পাঁচটি পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পাউবোর পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টায় কানাইঘাট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি যেখানে বিপৎসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল সেখানে বেলা ৩টায় তা বিপৎসীমার ৭৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহমান।
সিলেট পয়েন্টে সুরমা নদীর পানি সকাল ৬টায় ৩৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বেলা ৩টায় তা বিপৎসীমার ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জকিগঞ্জের অমলসিদ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি সকাল ৬টায় ৮৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বেলা ৩টায় তা বিপৎসীমার ৮৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
বিয়ানীবাজারের শেওলা পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি সকাল ৬টায় ৪০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বেলা ৩টায় তা বিপৎসীমার ৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। যদিও ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে কুশিয়ারা নদীর পানি সকাল ৬টায় ১০১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বেলা ৩টায় বিপৎসীমার ১০২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের দেওয়া তথ্য মতে, সিলেট সিটি করপোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৩টি ওয়ার্ড ও জেলার ১৩ উপজেলার ৯ লাখ ৫৭ হাজার ৪৪৮ জন মানুষ বন্যা কবলিত। এর মধ্যে নগর এলাকায় ৫৫ হাজার এবং উপজেলাগুলোতে ৯ লাখ ২ হাজার ৪৪৮ জন বন্যাকবলিত হয়েছেন।
এছাড়া, আক্রান্ত মানুষের জন্য ৬৯৮টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬১টি আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষ উঠেছেন। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এসব আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ২১ হাজার ৭৮৬ জন মানুষ।