সিলেট দেখা দিয়েছে ভয়াবহ বন্যা। পানিবন্ধী হয়ে পড়েছে লাখ লাখ পরিবার। জেলার সবকটি উপজেলার রাস্তাঘাট বাড়িঘর,স্কুল-কলেজ মাদ্রাসা তলিয়ে গেছে বানের পানিতে। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সযড়ক যোগাযোগ। বর্ষণ ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। গত ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার ছুঁই ছুই অবস্থা। জেলার কানাইঘাট,জকিগন্জ, জৈন্তাপুর,গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, সিলেট সদর, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, ফেঞ্চুগঞ্জ, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ উপজেলার সর্বত্র ভয়াবহ বন্যা। বাড়েঘরের পাশাপাশি আন্চলিক সড়কগুলো তলিয়ে যাওয়ায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
সিলেট সদরের হাটখোলা,জালালাবাদ মোগলগাঁও ইউনিয়নসহ কোম্পানীগঞ্জের তেলিখাল প্রভৃতি ইউনিয়নের সকল সড়ক তালিয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ বাড়িঘর তলিয়ে গেছে। এমনকি বাদঘাট কেন্দ্রীয় কারাগার তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা,দেখা দিয়েছে।
সিলেট মহানগরের শাহজালাল উপশহর, সুবহানীঘাট,মাছিমপুর, শিবগঞ্জ, মেজরটিলা,তালতলা প্রভৃতি এলাকা ইতোমধ্যে বানের পানিতে তলিয়ে গেছে।
অবিরাম বৃষ্ট ও ভারতের পাহাড় থেকে নেমে আসা পানিতে এ ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়ছে।
প্রথম দফার বন্যায় জেলার উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্থ হলেও দ্বিতীয় দফার এ বন্যায় পূরো সিলেট তলিয়ে গেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেট জানিয়েছে সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১৩৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই নদীর সিলেট পয়েন্টে ২২ সেন্টিমিটার বিপদসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
জকিগঞ্জের কুশিয়ারা নদীর অমলসীদ পয়েন্টে ১৫ সেন্টিমিটার ও একই নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৩৫সেন্টিমিটার ও সারি-গোয়াইন যৌথ নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ১৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া সব নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজিব হোসেন জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় (সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার সকাল ৬টায়) সিলেটে ১৫৩ মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে ও সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৪৪ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
এদিকে, ভারতের আইএমডি’র তথ্যমতে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৯৫ মিলি মিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবে) সিলেট-এর নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, ভারতের মেঘালয়ে বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি ঢল নেমে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারতে বৃষ্টিপাত কমলে পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হতে পারে।