Sylhet ০৮:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেট ভিশন টুয়েন্টিফোর ডট কমের পক্ষ থেকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা

  • সম্পাদকীয়
  • প্রকাশের সময় : ০৬:১২:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪
  • ১৩৫

আজ পবিত্র ঈদুল আজহা। পবিত্র ঈদুল আজহায় মহান আল্লাহর উদ্দেশে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করা মুসলমানদের প্রাচীন ঐতিহ্য। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি প্রিয় বান্দা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-এর সীমাহীন ভক্তি, সর্বোচ্চ ত্যাগের সদিচ্ছা এবং গভীরতম আত্মসমর্পণে পরম করুণাময় সন্তুষ্ট হন এবং তিনি ইব্রাহিমকে (আ.) আত্মত্যাগ ও ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ পশু কোরবানি করতে নির্দেশ দান করেন। এর পর থেকে মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের প্রতীক হিসেবে পশু কোরবানি দিয়ে আসছেন। প্রতি বছর মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র হজের পরই কোরবানি দেওয়া হয়। পাঁচ দিন ধরে চলে হজের আনুষ্ঠানিকতা। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা লাখ লাখ মুসলমান আরাফাত ময়দানে সমবেত হন। এটি মুসলিম ভ্রাতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্তও বটে।

পবিত্র ঈদুল আজহার উদ্দেশ্য স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকা। পশু কোরবানি করা হয় প্রতীকী অর্থে। আসলে কোরবানি দিতে হয় মানুষের সব রিপুকে—কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা। সৎ পথে উপার্জিত অর্থের বিনিময়ে কেনা পশু কোরবানির মাধ্যমেই তা সম্পন্ন হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, কোরবানির এ মর্মবাণী আমাদের সব সময় স্মরণে থাকে না। প্রতিযোগিতা করে মাংস খাওয়া এবং মাসের পর মাস ডিপফ্রিজে জমিয়ে রাখা ইদানীং আমাদের কালচারে পরিণত হয়েছে। অথচ দেশে বিপুলসংখ্যক দরিদ্র মানুষ দুবেলা খেতে পায় না, অনেক শিশু অপুষ্টিজনিত রোগব্যাধির শিকার। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুঃখ-দুর্দশার কথা চিন্তা করা এবং সাধ্যমতো তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ানো সামর্থ্যবানদের একান্ত কর্তব্য।

পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, আল্লাহর কাছে কোরবানি করা পশুর রক্ত বা মাংস কিছুই পৌঁছায় না, শুধু পৌঁছায় বান্দার তাকওয়া। কাজেই কোরবানির অর্থ ত্যাগ বা উৎসর্গ। আল্লাহতায়ালা প্রিয় বস্তুকে উৎসর্গ করতে বলেছেন। আমরা তার আদেশ পালন করব অন্তরের তাগিদে, মানুষকে দেখানোর জন্য নয়।

পবিত্র ঈদুল আজহায় সারা দেশে একই দিনে বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানির কারণে পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা একটি সমস্যা হয়ে ওঠে। তাই সবার উচিত যেখানে-সেখানে পশু জবাই করার প্রবণতা ত্যাগ করা। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোকে এ সময় বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হবে আন্তরিকতার সঙ্গে। এ আনন্দময় উৎসবে আমাদের অগণিত পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট, বিপণনকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীর প্রতি রইল ঈদের শুভেচ্ছা। পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দ অমলিন হোক।

 

আজিজুর রহমান

সম্পাদক ও প্রকাশক

 

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sylhet Vision

জনপ্রিয় সংবাদ

মাধবপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় পাঁচ সাংবাদিককে আসামি

সিলেট ভিশন টুয়েন্টিফোর ডট কমের পক্ষ থেকে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা

প্রকাশের সময় : ০৬:১২:৪৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪

আজ পবিত্র ঈদুল আজহা। পবিত্র ঈদুল আজহায় মহান আল্লাহর উদ্দেশে নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কোরবানি করা মুসলমানদের প্রাচীন ঐতিহ্য। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি প্রিয় বান্দা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-এর সীমাহীন ভক্তি, সর্বোচ্চ ত্যাগের সদিচ্ছা এবং গভীরতম আত্মসমর্পণে পরম করুণাময় সন্তুষ্ট হন এবং তিনি ইব্রাহিমকে (আ.) আত্মত্যাগ ও ভালোবাসার নিদর্শনস্বরূপ পশু কোরবানি করতে নির্দেশ দান করেন। এর পর থেকে মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী ত্যাগ ও আত্মোৎসর্গের প্রতীক হিসেবে পশু কোরবানি দিয়ে আসছেন। প্রতি বছর মুসলমানদের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র হজের পরই কোরবানি দেওয়া হয়। পাঁচ দিন ধরে চলে হজের আনুষ্ঠানিকতা। বিভিন্ন দেশ থেকে আসা লাখ লাখ মুসলমান আরাফাত ময়দানে সমবেত হন। এটি মুসলিম ভ্রাতৃত্বের এক অনন্য দৃষ্টান্তও বটে।

পবিত্র ঈদুল আজহার উদ্দেশ্য স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকা। পশু কোরবানি করা হয় প্রতীকী অর্থে। আসলে কোরবানি দিতে হয় মানুষের সব রিপুকে—কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা। সৎ পথে উপার্জিত অর্থের বিনিময়ে কেনা পশু কোরবানির মাধ্যমেই তা সম্পন্ন হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, কোরবানির এ মর্মবাণী আমাদের সব সময় স্মরণে থাকে না। প্রতিযোগিতা করে মাংস খাওয়া এবং মাসের পর মাস ডিপফ্রিজে জমিয়ে রাখা ইদানীং আমাদের কালচারে পরিণত হয়েছে। অথচ দেশে বিপুলসংখ্যক দরিদ্র মানুষ দুবেলা খেতে পায় না, অনেক শিশু অপুষ্টিজনিত রোগব্যাধির শিকার। অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানহীন দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুঃখ-দুর্দশার কথা চিন্তা করা এবং সাধ্যমতো তাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়ানো সামর্থ্যবানদের একান্ত কর্তব্য।

পবিত্র কোরআনে এরশাদ হয়েছে, আল্লাহর কাছে কোরবানি করা পশুর রক্ত বা মাংস কিছুই পৌঁছায় না, শুধু পৌঁছায় বান্দার তাকওয়া। কাজেই কোরবানির অর্থ ত্যাগ বা উৎসর্গ। আল্লাহতায়ালা প্রিয় বস্তুকে উৎসর্গ করতে বলেছেন। আমরা তার আদেশ পালন করব অন্তরের তাগিদে, মানুষকে দেখানোর জন্য নয়।

পবিত্র ঈদুল আজহায় সারা দেশে একই দিনে বিপুলসংখ্যক পশু কোরবানির কারণে পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা একটি সমস্যা হয়ে ওঠে। তাই সবার উচিত যেখানে-সেখানে পশু জবাই করার প্রবণতা ত্যাগ করা। সিটি করপোরেশন ও পৌরসভাগুলোকে এ সময় বাড়তি দায়িত্ব পালন করতে হবে আন্তরিকতার সঙ্গে। এ আনন্দময় উৎসবে আমাদের অগণিত পাঠক, লেখক, বিজ্ঞাপনদাতা, এজেন্ট, বিপণনকর্মী ও শুভানুধ্যায়ীর প্রতি রইল ঈদের শুভেচ্ছা। পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দ অমলিন হোক।

 

আজিজুর রহমান

সম্পাদক ও প্রকাশক