সিলেটেরে গোয়াইনঘাট উপজেলায় আকস্মিক বন্যায় বিভিন্ন ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ও ব্রীজ-কালভার্ট সমূহ পরিদর্শন করেছেন উপজেলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: তৌহিদুল ইসলাম ।
শুক্রবার (৩১ মে) তিনি উপজেলার মধ্য জাফলং, পূর্ব জাফলং, লেংগুড়া, গোয়াইনঘাট , পূর্ব আলীরগাঁও, ডৌবাড়ি ও পশ্চিম আলীরগাঁও ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।
অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও ভারতের মেঘালয় রাজ্যে থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যা বন্যায় প্রায় ৪২ হাজার ৯০০টি পরিবারের ২ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫০ জন মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন।
এছাড়া উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গোয়াইনঘাট উপজেলার গ্রামীণ রাস্তা সহ উপজেলা সদরের সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী প্রধান সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলা সদর হতে জেলা সদরে যাতায়তের ৩টি রাস্তার বেশ কয়েকটি স্থান পানিতে নিমজ্জিত থাকায় সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন।
গোয়াইন নদী (গোয়াইনঘাট পয়েন্ট) বিপদসীমাঃ ১০.৮২ মিটারে প্রবাহমানঃ ১০.৬৮ মিটার এবং পিয়াইন নদী (জাফলং পয়েন্ট) বিপদসীমাঃ ১৩.০০ মিটার প্রবাহমানঃ ১১.১৪ মিটার, সারি নদী (সারিঘাট পয়েন্ট) বিপদসীমাঃ ১২.৩৫ মিটার প্রবাহমানঃ ১২.২৫ মিটার।উপজেলার প্রায় ৩৪৩ বর্গ কিঃমিঃ এলাকা প্লাবিত।
এছাড়াও প্রায় ১৬৬০ হেক্টর কৃষি জমি নিমজ্জিত। ইতিমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৬৩ মেট্রিকটন জিআর চাল, ২০০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১৫ কেজি ওজনের ২০০শতটি বিশেষ প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও এই উপজেলায় বন্যাদুর্ত মানুষের পরিস্থিতি মোকাবেলায় ১০০ মেঃটন জি.আর চাল ও ৫,০০০ প্যাকেট শুকনো খাবার ১০ লক্ষ টাকা জি.আর ক্যাশ, শিশু খাদ্য ক্রয়ের নিমিত্ত ৫ লক্ষ টাকা এবং গো-খাদ্য ক্রয়ের নিমিত্ত ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের নিকট চাহিদা চেয়ে পত্র দিয়েছেন গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম।
জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো শফিকুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি অফিসার জনাব রায়হান পারভেজ রনি, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জনাব ডা. জামাল খান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জনাব শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ সমন্বয়ে গঠিত টিম উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, সড়ক, ব্রীজ-কালভার্টের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি, গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করছেন।
এলজিইডি’র উপজেলা প্রকৌশলী , পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী এবং পিআইও কে অনতিবিলম্বে নদী ও খালের পার্শ্বস্থ গুরুত্বপূর্ণ স্থানের বাঁধ, ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তাঘাট ও ব্রীজ সমূহকে মেরামত ও সংস্কার করে যানবাহন ও জনচলাচল উপযোগী করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের জরুরি ভিত্তিতে সিলেট-৪ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য জনাব ইমরান আহমদ এর নির্দেশনায় ১৩ টি ইউনিয়নে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এর মাধ্যমে শুকনা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে।
বন্যার্তদের জন্য ১৩ টি ইউনিয়নে ইতোমধ্যে জরুরি সহায়তা হিসেবে ৩৯ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে ( জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপ-বরাদ্দ হতে)। শুকনা খাবার হিসেবে প্রতি প্যাকেটে ২ কেজি চিড়া, আধা কেজি গুড় ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট বিতরণ করা হয়েছে।
গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, সিলেট জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মো শফিকুল ইসলাম, উপজেলা কৃষি অফিসার রায়হান পারভেজ রনি, প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জামাল খান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ সমন্বয়ে গঠিত টিম উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়নের রাস্তাঘাট, সড়ক, ব্রীজ-কালভার্টের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি, গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে কাজ করছেন।