Sylhet ০৪:২৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতেই পরিচয়

শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি মানুষের মনকে করে উদার ও কোমল। যে ব্যক্তি এগুলো হৃদয়ে লালন ও চর্চা করে সে কখনও সমাজবিদ্বেষী কাজ করতে পারে না। সাহিত্য বিভিন্ন যুগের ও বিভিন্ন গোত্রের সমাজ সম্পর্কে আমাদের ধারণা দেয়। বিভিন্ন স্থানের ভাষা শিখতে সহায়তা করে।

সাহিত্য মানব মনে প্রেম, বিরহ, সুখের অনুভূতি সৃষ্টি করে। অথচ শিক্ষার অভাবে আমাদের সমাজের বেশিরভাগ মা-বাবা তাদের সন্তানদের শিল্প ও সাহিত্য পাঠে মন থেকে সম্মতি দেন না।

পড়ালেখার পাশাপাশি এ দুটো বিষয় চর্চা করলে যে তাদের সন্তানরা সমাজে বখাটে ও সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত হবে না, সেটা তারা বোঝার চেষ্টা করেন না। তবে কিছু অভিভাবক আছেন, যারা সন্তানদের ছবি আঁকা, সঙ্গীত চর্চা, কবিতা আবৃত্তি ইত্যাদিতে উৎসাহ দিয়ে থাকেন। সাধারণত শিক্ষিত মা-বাবারা সবসময় সন্তানের পছন্দকে প্রাধান্য দেন।

অনেক অভিভাবকের ধারণা, সন্তানকে গান শুনতে দিলে, সিনেমা দেখতে দিলে তারা খারাপ হয়ে যাবে। এ ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। একজন শিশুকে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে হলে তার বিনোদনের প্রয়োজন রয়েছে।

বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে অবসর সময়ে শিশুদের ভালো গান ও শিক্ষণীয় সিনেমা দেখতে দেয়া উচিত। এতে তারা সমাজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবে। সন্তানদের অবসর সময়ে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা করতে দিলে তারা কখনও খারাপ কাজের দিকে ঝুঁকবে না।

আমাদের সমাজে যেসব মানুষ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছে, তারা সমাজে নানাভাবে উপেক্ষিত। আমাদের আশপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা পেশায় কামার, কুমার, জেলে, বাউল ইত্যাদি। এরা আমাদের সমাজে নানা কষ্টের মধ্যে বেঁচে আছেন।

নিজস্ব শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে এসব বিষয়কে অবলম্বন করে বেঁচে থাকা মানুষদের বিভিন্নভাবে সাহায্যে-সহযোগিতা করে সমাজে একটা স্থান করে দিতে হবে। কারণ শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমাদের পরিচয় বহন করে।

সভ্যতার শুরু থেকে মানুষ যখন বড় বড় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তখন তাদের সেই সমস্যা থেকে উত্তরণে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে তাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি।

আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সঙ্গীত শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস জুগিয়েছেন। অন্যদিকে চিত্রশিল্পীরাও মুক্তিযুদ্ধের ছবি এঁকেছেন, যা বর্তমান প্রজন্মের মানুষদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অনেক ধারণা দিচ্ছে।

আমাদের সমাজকে স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে লালন করতে হবে। এজন্য সবাইকে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে।

গাজী আবদুর রহিম : প্রাবন্ধিক, সাতক্ষীরা

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জগন্নাথপুর যুব জমিয়তের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি শপথ অনুষ্ঠিত

শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতিতেই পরিচয়

প্রকাশের সময় : ০৩:৫৭:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ মার্চ ২০২৪

শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি মানুষের মনকে করে উদার ও কোমল। যে ব্যক্তি এগুলো হৃদয়ে লালন ও চর্চা করে সে কখনও সমাজবিদ্বেষী কাজ করতে পারে না। সাহিত্য বিভিন্ন যুগের ও বিভিন্ন গোত্রের সমাজ সম্পর্কে আমাদের ধারণা দেয়। বিভিন্ন স্থানের ভাষা শিখতে সহায়তা করে।

সাহিত্য মানব মনে প্রেম, বিরহ, সুখের অনুভূতি সৃষ্টি করে। অথচ শিক্ষার অভাবে আমাদের সমাজের বেশিরভাগ মা-বাবা তাদের সন্তানদের শিল্প ও সাহিত্য পাঠে মন থেকে সম্মতি দেন না।

পড়ালেখার পাশাপাশি এ দুটো বিষয় চর্চা করলে যে তাদের সন্তানরা সমাজে বখাটে ও সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত হবে না, সেটা তারা বোঝার চেষ্টা করেন না। তবে কিছু অভিভাবক আছেন, যারা সন্তানদের ছবি আঁকা, সঙ্গীত চর্চা, কবিতা আবৃত্তি ইত্যাদিতে উৎসাহ দিয়ে থাকেন। সাধারণত শিক্ষিত মা-বাবারা সবসময় সন্তানের পছন্দকে প্রাধান্য দেন।

অনেক অভিভাবকের ধারণা, সন্তানকে গান শুনতে দিলে, সিনেমা দেখতে দিলে তারা খারাপ হয়ে যাবে। এ ধারণা পুরোপুরি ঠিক নয়। একজন শিশুকে সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে হলে তার বিনোদনের প্রয়োজন রয়েছে।

বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে অবসর সময়ে শিশুদের ভালো গান ও শিক্ষণীয় সিনেমা দেখতে দেয়া উচিত। এতে তারা সমাজ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবে। সন্তানদের অবসর সময়ে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চা করতে দিলে তারা কখনও খারাপ কাজের দিকে ঝুঁকবে না।

আমাদের সমাজে যেসব মানুষ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে আছে, তারা সমাজে নানাভাবে উপেক্ষিত। আমাদের আশপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা পেশায় কামার, কুমার, জেলে, বাউল ইত্যাদি। এরা আমাদের সমাজে নানা কষ্টের মধ্যে বেঁচে আছেন।

নিজস্ব শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখতে হলে এসব বিষয়কে অবলম্বন করে বেঁচে থাকা মানুষদের বিভিন্নভাবে সাহায্যে-সহযোগিতা করে সমাজে একটা স্থান করে দিতে হবে। কারণ শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি আমাদের পরিচয় বহন করে।

সভ্যতার শুরু থেকে মানুষ যখন বড় বড় সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তখন তাদের সেই সমস্যা থেকে উত্তরণে অন্যতম ভূমিকা রেখেছে তাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতি।

আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় আমাদের সঙ্গীত শিল্পীরা দেশাত্মবোধক গান গেয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহস জুগিয়েছেন। অন্যদিকে চিত্রশিল্পীরাও মুক্তিযুদ্ধের ছবি এঁকেছেন, যা বর্তমান প্রজন্মের মানুষদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অনেক ধারণা দিচ্ছে।

আমাদের সমাজকে স্বাভাবিক গতিতে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে লালন করতে হবে। এজন্য সবাইকে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করতে হবে।

গাজী আবদুর রহিম : প্রাবন্ধিক, সাতক্ষীরা