জগন্নাথপুরে আবারও আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। পার্শ্ববর্তী শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর সমর্থনে বুধবার জগন্নাথপুরে একই সময়ে পৃথক দুইটি কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ জগন্নাথপুরে পৌর শহরে ভবানীপুর গ্রামে তাঁর অস্থায়ী বাসভবনে কর্মী সভা করে শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম কে সমর্থন দেন।
অপরদিকে জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে সভা করে সংসদ সদস্য এম এ মান্নান পুত্র শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শাহাদাত মান্নান অভির পক্ষে শান্তিগঞ্জে গিয়ে প্রচারণা চালানোর সিদ্ধান্ত নেন জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ।
পৌর শহরের ভবানীপুর গ্রামে শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালামের সমর্থনে সভায় জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া সভাপতিত্ব করেন। এতে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম ও আজিজুস সামাদ অনুসারী নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।
অপরদিকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান পুত্র শাহাদাত মান্নানের পক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ে বুধবার দুপুরে পৃথক সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য সিদ্দিক আহমেদ, সংসদ সদস্য এম এ মান্নান অনুসারী দলের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।
আগামী ৫ জুন শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হবে। এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল কালাম, শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি (এম এ মান্নান পুত্র) সাদাত মান্নান, শান্তিগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাড. বোরহান উদ্দিন দোলন। যদিও বোরহান উদ্দিনও আজিজুস সামাদ অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
জগন্নাথপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, শাহাদাত মান্নান একজন যোগ্য প্রার্থী। তিনি শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি। একজন অর্থনীতিবিদ। তাকে নির্বাচিত করলে এলাকার উন্নয়ন হবে। নির্বাচনী এলাকায় বাসিন্দা হিসেবে আমরা তাঁর পক্ষে শান্তিগঞ্জে গিয়ে প্রচারণা চালাব বলে দলীয় কর্মীসভা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আজিজুস সামাদ বলেন, আবুল কালাম দলের নিবেদিত নেতা, তাই আমি তাকে সমর্থন জানিয়েছি এবং সুষ্ঠু নির্বাচনে যাতে জনরায় প্রতিফলিত হয়, সে লক্ষ্যে আমি কাজ করার আশ্বাস দিয়েছি।
প্রসঙ্গত, বর্তমান সংসদ সদস্য এমএ মান্নান ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য আজিজুস সামাদ ডন’র সমর্থনে দীর্ঘদিন ধরে দুইভাবে বিভক্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ। গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় ভেদাভেদ ভুলে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলের প্রার্থী এমএ মান্নানের পক্ষে প্রচারে অংশ নেয়। ওই নির্বাচনে প্রথমবারের মতো মান্নানের পক্ষে আজিজুস সামাদ ডন ভোট চেয়েছিলেন। এরপর দলীয় নেতাকর্মীদের প্রকাশ্যে কোন্দলে দেখা যায়নি। আগামী ৫ জুন শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে পৃথক অবস্থান নিয়েছেন দুই বলয়ের নেতাকর্মীরা।
সুত্র-সুনামগঞ্জের খবর