মাত্র ২২ দিনের ব্যবধানে হারালাম দুই প্রিয়জন,অগ্রজ সংগঠক অভিভাবক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষ কে। শোক কাটিয়ে ওঠা সত্যিই কঠিন। যদিও কঠিন সত্য কে ভালোবেসে সাংবাদিকতায় আছি। তারপরও কিছু কিছু সত্য সব সময় মেনে নেওয়া কঠিন থেকে কঠিনতর। পেশাগত ও সামাজিক কারণে বয়সের ব্যবধান ভুলে বন্ধু ভাই ও প্রিয় হয়ে উঠেছিলাম জগন্নাথপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শংকর রায় ও শ্যামহাট আশ্রম উন্নয়ন ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি ধীরেন্দ্র কুমার সেনের সঙ্গে। শংকর রায়ের সঙ্গে দীর্ঘ ২৫ বছর পেশার কাতিরে একসঙ্গে চলাফেরা। একযুগেরও বেশি সময় ধরে ঘনিষ্ঠতা। যা সম্পর্কের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে এক অনন্য হৃদয়ানুভূতিতে। ২২ এপ্রিল রাত ১০ টায় মুঠোফোনে আন্তরিক আলোচনা। মধ্যরাতে না ফেরার পথে। এখনো প্রতিদিন জগন্নাথপুর টুয়েন্টি ফোর ডটকম অফিসে গেলে মনে হয় দাদাকে একটা ফোন দিয়ে বলি দাদা চলে আসেন কোথায় আপনি? অফিসে আসেন,চা খাই। বিদ্যুৎ চলে গেলে ফোন বের করে দাদাকে ফোন দিয়ে জানতে চাই কি সমস্যা হয়েছে বিদ্যুৎ কখন মিলবে কিংবা আজ কোন নিউজ আছে নি-হাসপাতাল কিংবা থানায় খোঁজ নিয়েছেন কীনা। কঠিন বাস্তবতার কাছে হার মেনে চা খেতে হয় কিংবা খবরের সন্ধান করতে হয় আমাদেরকে। তেমনি আরেক শ্রদ্ধা ভালোবাসার মানুষ ধীরেন্দ্র কুমার সেন এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ পরিচয় ২০১৭ সালে।শ্যামহাট আশ্রম উন্নয়ন ও পরিচালনা কমিটি গঠন করা হবে। শুভাকাঙ্ক্ষীদের আমন্ত্রণে উপস্থিত হই। জগন্নাথপুরের হিন্দু কমিউনিটির শীর্ষ সকল নেতৃবৃন্দ ও আশ্রমের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী কৃষ্ণ চরণ গোস্বামী প্রভুপাদের বংশধর প্রভূপাদ শ্রী শ্রী বিশ্বরূপ গোস্বামীর উপস্থিতি সর্বসম্মতিক্রমে ধীরেন্দ্র কুমার সেন কে সভাপতি ও আমাকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়। সেই থেকে তাঁর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক। এক সময় সংগঠন ও আত্মীয়তার বন্ধন ছাড়িয়ে এ সম্পর্ক হৃদয়জুড়ে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় একীভূত হয়ে যায়। শ্যামহাট আশ্রমের উন্নয়ন ও পরিচালনায় একজন সফল,দক্ষ ও সক্রিয় যোগ্য নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেন।আশ্রমের শতবর্ষ উৎসব সহ প্রতিটি বার্ষিক উৎসব পালনে তিনি দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখেন। মন্দিরের বেশ কিছু উন্নয়ন হয়েছে যাতে সভাপতি হিসেবে তাঁর ভূমিকা অপরিসীম। একজন সহকর্মী হিসেবে তাঁর দায়িত্ব কর্তব্য সহ সফলতা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করছি। হঠাৎ করে দূরাগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত। সর্বশেষ ভারত থেকে দেশে এসে মুঠোফোনে উচ্চসিত আশাবাদ তিনি অনেকটা সুস্থ হয়ে গেছেন। মন্দিরে মিটিং করার তাড়া। পরদিন আবার খবর পেলাম অসুস্থ হয়ে সিলেট আছেন। আর ফিরে আসতে পারলেন না। মৃত্যুর কাছে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হলো।১৪ মে সকালে আমাদের কে শোক সাগরে ভাসিয়ে অন্তিমযাত্রা। খবর শুনে বাকরুদ্ধ স্তব্ধ বেদনাময় হৃদয়ে কর্তব্যের প্রয়োজনে শেষকৃত্যানুষ্ঠানে ছুঁটে চলা। ২২ দিনের ব্যবধানে দুই সভাপতির মৃত্যু। দুই প্রিয়জন,অভিভাবক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার মানুষ হারানোর বেদনায় মনটা ক্ষত বিক্ষত । নিয়মিত অমোক নিয়নে জীবনখাতার গতি না থামলেও শুন্যতা সহজে পূরণ হয় না। বাস্তব জীবনের প্রয়োজনে শূন্যস্হান পূরন হলেও শুন্যতা পূরন হয় না। শংকর রায় ও ধীরেন্দ্র সেনের শুন্যতা অপূরনীয়। পরপারে শান্তিতে থাকুন আপনারা। শ্রদ্ধাজ্ঞলি- ধীরেন্দ্র কুমার সেন ও শংকর রায়????????শংকর রায় মৃত্যু -২২ এপ্রিল ২০২৪ আর ধীরেন্দ্র কুমার সেন ১৪ মে ২০২৪।
(লেখক- অমিত দেব,
দৈনিক প্রথম আলো, সিলেটের ডাক, জগন্নাথপুর প্রতিনিধি।
সম্পাদক
জগন্নাথপুর টুয়েন্টি ফোর ডটকম)