Sylhet ০৩:২৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লাখাইয়ে হাওর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

লাখাইয়ে হাওর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে নিহতের স্বামী লাখাই মুক্তিযোদ্ধা কলেজের শিক্ষক অজয় কুমার দাশ বাদি হয়ে থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হচ্ছে- রিচি গ্রামের পিন্টু আচার্য্য, হবিগঞ্জ শহরের চিরাকান্দি এলাকার বাসিন্দা বিপ্লব রায় সুজন ও অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ অভিযুক্ত করা হয়েছে। লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
ওসি আরও বলেন, বাহ্যিক দিক থেকে আমরা কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ন পাইনি। বাদিও মামলার কোথাও হত্যা বলেননি। তিনি অভিযোগ করেছেন আত্মহত্যার প্ররোচনার। তার স্বামী আত্মীয় স্বজন সবাই ভালোভাবে দেখে লাশ বুঝে নিয়েছে। তারাও তখন কোথাও আঘাতের চিহ্ন পায়নি। মামলার বরাত দিয়ে ওসি বলেন, মামলায় বলা হয়েছে তিনি এক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদে কিছু টাকা নিয়েছিলেন। ওই টাকার জন্য তিনি প্রচন্ড চাপে ছিলেন। চাপ সহ্য না করতে পেরে মানসিক ও শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। ফলে তিনি বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার পূর্বে তিনি চিরকুটেও বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। নিহত রিবন রুপা দাশের স্বামী মামলার বাদি অজয় কুমার দাশের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি মানসিক অবস্থা ভালো নয় বলে আঘাতের চিহ্ন ছিল কি-না তা থানা বলতে পারবে বলে এড়িয়ে যান। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক অজয় কুমার দাশের স্ত্রী ভরপূর্ণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা রিবন রুপা দাশ (৪০) গত শুক্রবার নিখোঁজ হন। তিনি স্বামী সন্তান নিয়ে জেলা শহরের পুুরানমুন্সেফী এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। দুইদিন পর রোববার বিকেলে স্থানীয় ঝনঝনিয়া হাওরে একটি ব্রিজের নিকট থেকে বিষাক্রান্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তার মরদেহ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে সৎকার করা হয়। লাশ উদ্ধারের ৩ দিন পর বুধবার তার স্বামী বাদি হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে লাখাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উল্লেখ্য, রিবন রুপা দাস শিক্ষকতায় জাতীয় পর্যায়ে সেরা উদ্ভাবক হয়েছিলেন ২০২২ সালে। এর আগে ২০১৮ সালে হবিগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিলেন। লাখাই উপজেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা হন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নির্বাচিত অ্যাম্বাসেডর শিক্ষকও ছিলেন তিনি।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জগন্নাথপুর যুব জমিয়তের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি শপথ অনুষ্ঠিত

লাখাইয়ে হাওর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

প্রকাশের সময় : ০৪:১২:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪

লাখাইয়ে হাওর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে নিহতের স্বামী লাখাই মুক্তিযোদ্ধা কলেজের শিক্ষক অজয় কুমার দাশ বাদি হয়ে থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অভিযুক্তরা হচ্ছে- রিচি গ্রামের পিন্টু আচার্য্য, হবিগঞ্জ শহরের চিরাকান্দি এলাকার বাসিন্দা বিপ্লব রায় সুজন ও অভিজিৎ ভট্টাচার্য্য। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ অভিযুক্ত করা হয়েছে। লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে।
ওসি আরও বলেন, বাহ্যিক দিক থেকে আমরা কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ন পাইনি। বাদিও মামলার কোথাও হত্যা বলেননি। তিনি অভিযোগ করেছেন আত্মহত্যার প্ররোচনার। তার স্বামী আত্মীয় স্বজন সবাই ভালোভাবে দেখে লাশ বুঝে নিয়েছে। তারাও তখন কোথাও আঘাতের চিহ্ন পায়নি। মামলার বরাত দিয়ে ওসি বলেন, মামলায় বলা হয়েছে তিনি এক ব্যক্তির কাছ থেকে সুদে কিছু টাকা নিয়েছিলেন। ওই টাকার জন্য তিনি প্রচন্ড চাপে ছিলেন। চাপ সহ্য না করতে পেরে মানসিক ও শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। ফলে তিনি বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার পূর্বে তিনি চিরকুটেও বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। নিহত রিবন রুপা দাশের স্বামী মামলার বাদি অজয় কুমার দাশের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি মানসিক অবস্থা ভালো নয় বলে আঘাতের চিহ্ন ছিল কি-না তা থানা বলতে পারবে বলে এড়িয়ে যান। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ওই উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক অজয় কুমার দাশের স্ত্রী ভরপূর্ণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষিকা রিবন রুপা দাশ (৪০) গত শুক্রবার নিখোঁজ হন। তিনি স্বামী সন্তান নিয়ে জেলা শহরের পুুরানমুন্সেফী এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। দুইদিন পর রোববার বিকেলে স্থানীয় ঝনঝনিয়া হাওরে একটি ব্রিজের নিকট থেকে বিষাক্রান্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তার মরদেহ সদর আধুনিক হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে সৎকার করা হয়। লাশ উদ্ধারের ৩ দিন পর বুধবার তার স্বামী বাদি হয়ে ৩ জনের নাম উল্লেখ করে লাখাই থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। উল্লেখ্য, রিবন রুপা দাস শিক্ষকতায় জাতীয় পর্যায়ে সেরা উদ্ভাবক হয়েছিলেন ২০২২ সালে। এর আগে ২০১৮ সালে হবিগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছিলেন। লাখাই উপজেলার শ্রেষ্ঠ জয়িতা হন। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নির্বাচিত অ্যাম্বাসেডর শিক্ষকও ছিলেন তিনি।