ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপে দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৩০ প্রার্থী। চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৯ জন এবং ভাইস চেয়ারম্যান পদে ২১ জন। চেয়ারম্যান পদে দিরাই উপজেলায় ৫ জন এবং শাল্লা উপজেলায় ৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। দলীয় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও দুই উপজেলায় নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন দুই বিএনপি প্রার্থীও। একজন উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও অন্যজন সাংগঠনিক সম্পাদক।
দিরাই উপজেলায় প্রতিদ্বন্দ্বি চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন— জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. আজাদুল ইসলাম রতন (মোটরসাইকেল), দিরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায় (দোয়াত—কলম), উপজেলা যুবলীগের সভাপতি রঞ্জন কুমার রায় (ঘোড়া), জেলা মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী রিপা সিনহা (টেলিফোন), উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিস্কৃত) মো. গোলাপ মিয়া (আনারস)।
শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অবনী মোহন দাস (ঘোড়া) ও উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি (বহিস্কৃত) ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গণেন্দ্র চন্দ্র সরকার (আনারস), বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান দিপু রঞ্জন দাশ (মোটরসাইকেল), এস.এম শামীম (দোয়াত—কলম)।
এদিকে দিরাই ও শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২১ জন। এরমধ্যে পুর”ষ ১৪ জন এবং মহিলা ৭ জন। দিরাই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৮ জন প্রার্থী। এরমধ্যে ৫ জন পুরষ এবং ৩ জন মহিলা। ভাইস চেয়াম্যান (পুরুষ) পদে মো. নাজমুল হাসান, রুহুল আমিন, মো. এখলাছুর রহমান, এ বি এম মনসর, ফয়সাল মিয়া কাওসার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোছা.রীনা বেগম, হাফছা বেগম ও ছবি চৌধুরী।
এদিকে শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৩ জন। এরমধ্যে ৯ জন পুরুষ ও ৪ জন মহিলা।ভাইস চেয়াম্যান (পুরুষ) পদে মো. সাইফুর রহমান, অরিন্দম চৌধুরী, বিষ্ণুপদ দাস, মো. আব্দুল মজিদ, প্রদীপ দাশ, ফেনী ভূষন সরকার, শেখ শহিদুল ইসলাম, মো.হাজিরুল ইসলাম, কালীপদ রায়প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদিকে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোছা. আলপিনা আক্তার, মোছা. ছায়ামনি, আক্তারমর্তুজা, আক্তার শর্বরী রাণী মজুমদার।
দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় ১১১টি ভোট কেন্দ্র রয়েছে। এরমধ্যে দিরাই উপজেলায় ৭৪টি এবং শাল্লা উপজেলায় ৩৭টি। দুই উপজেলায় ভোট কক্ষ রয়েছে ৭৪৬টি। এরমধ্যে শাল্লা উপজেলায় ২৩৬টি এবং দিরাই উপজেলায় ৫১০টি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে একজন করে ১১১ জন প্রিজাইডিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। এরমধ্যে দিরাই উপজেলায় ৭৪ জন এবং শাল্লা উপজেলায় ৩৭ জন। সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার থাকবেন ৭৪৬ জন। শাল্লা উপজেলায় ২৩৬ জন এবং দিরাই উপজেলায় ৫১০ জন। এছাড়াও ১৪৯২ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। এদের মধ্যে শাল্লা উপজেলায় ৪৭২ জন এবং দিরাই উপজেলায় ১০২০ জন।
এছাড়াও দুইটি উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ/গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে ২৮টি। শাল্লা উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে ৭টি এবং দিরাই উপজেলায় ২১টি। শাল্লা উপজেলার ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো হলো—আটগাঁও ইউনিয়নের বড়গাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হবিবপুর ইউনিয়নের ফয়জুল্লাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কাশীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মার্কুলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শাল্লা ইউপির শ্রীহাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আব্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও চব্বিশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হয়ে চলবে টানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। শাল্লা উপজেলায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ৯১ হাজার ৩৬৮ জন। এরমধ্যে পুরুষ ৪৫ হাজার ৯৫৬ জন এবং নারী ৪৫ হাজার ৪১২ জন। দিরাই উপজেলায় ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ১ লক্ষ ৯৭ হাজার ২২৫ জন। এরমধ্যে নারী ভোটার ৯৭ হাজার ৩৫৪ জন ও পুর”ষ ভোটার সংখ্যা ৯৯ হাজার ৮৭০ জন।
এদিকে নির্বাচনী অপরাধ সমূহের সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে বিচার সম্পন্নের লক্ষে দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় দুই জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। দিরাই উপজেলায় দায়িত্ব পালন করবেন সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল হালিম এবং শাল্লা উপজেলায় দায়িত্ব পালন করবেন সুনামগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুহাং হেলাল উদ্দিন।
ভোটগ্রহণের পূর্বের দুইদিন, ভোটগ্রহণের দিন ও ভোটগ্রহণের পরের দুইদিন অর্থাৎ ৬ মে থেকে ১০ মে পর্যন্ত ৫দিনের জন্য তাদের নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপ সচিব (আইন) মো. আব্দুছ সালাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
অপরদিকে ভোটের পরিবেশ শান্ত রাখতে স্বাভাবিক এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৭ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ বা ১৯ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। এ ছাড়া বিশেষ এলাকায় সাধারণ কেন্দ্রে ১৯ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ২০ বা ২১ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকবে। উপজেলার আয়তন, ভোটার সংখ্যা ও ভোটকেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রতি উপজেলায় ২ থেকে ৪ প্লাটুন বিজিবি দায়িত্ব পালন করবেন। ভোট কেন্দ্রে আনসার ব্যাটালিয়ন মোবাইল/স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে ভোট গ্রহণের আগের দুই দিন, ভোট গ্রহণের দিন ও ভোট গ্রহণের পরের দুইদিন মোট পাঁচ দিন নিয়োজিত থাকবেন।
মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে আজ বুধবার অর্থাৎ ভোট গ্রহণের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিন চালিত বোটসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া ইতোমধ্যে মোটর সাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
এছাড়াও ভোট গ্রহণের সাত দিন আগে ও ভোট গ্রহণের পরবর্তী সাত দিন পর্যন্ত লাইসেন্সধারীরা অস্ত্রসহ চলাচল না করতে কিংবা বহন ও প্রদর্শন না করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে নির্দেশনা জারি করেছে।
শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন সম্পন্নের লক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। সকল প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। উপজেলার আইন—শৃঙ্খলার সার্বিক পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে আছে।
দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইখতিয়র উদ্দিন বলেন, উপজেলায় ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নেই। তবে গুর”ত্বপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে ২১টি। আমাদের পর্যাপ্ত ফোর্স রয়েছে, কোন সমস্যা হবে না।
সংবাদ শিরোনাম :
দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় কেন্দ্র ১১১টি,ঝুকিপূর্ন ২৮টি
- ভিশন ডেস্ক ::
- প্রকাশের সময় : ০৩:২৬:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৮ মে ২০২৪
- ৭৬
জনপ্রিয় সংবাদ