বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি প্রক্রিয়া নিয়ে ফের জটিলতা তৈরি হয়েছে। বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বদলির প্রক্রিয়া চালু না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সরকারি শিক্ষকদের মতো বেসরকারি শিক্ষকরাও বদলি হতে পারবেন এমন উদ্যোগ নিয়েছিল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর। এ নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক করে প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে আনা হয়। এ নিয়ে রোববার বৈঠকে বসেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। শেষ মুহূর্তে এসে সংশ্লিলষ্টদের ভিন্ন মতামতের কারণে এই প্রক্রিয়া আর সহজে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।
জানা গেছে, বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বদলি নীতিমালা চূড়ান্ত করতে রোববার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সভা অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বেসরকারি এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের বদলির প্রক্রিয়া চালু না করার সদ্ধিান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
যদিও চূড়ান্ত সদ্ধিান্ত হয়নি। তবে, বদলি প্রক্রিয়া চালুর ব্যাপারে সংশি্লষ্ট কয়েকজন কর্মকর্তার আপত্তি থাকায় শিক্ষকরা আপাতত বদলির সুযোগ পাচ্ছেন না।
এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) সুপারিশপ্রাপ্ত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সমপদে বা সমস্কেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিবর্তন সংক্রান্ত নীতিমালা ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষক বদলি নীতিমালা-২০২৪’ এর খসড়া চূড়ান্ত করতে এ সভা ডাকা হয়েছিল।
মাউশির একজন কর্মকর্তা জানান, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) কর্তৃক বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৫ম গণবিজ্ঞপ্তিতে ৯৬ হাজারের বেশি শূন্য পদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম চলছে। ৯৬ হাজারের বেশি শূন্য পদের গণবিজ্ঞপ্তি থাকলেও অর্ধেক পদও পূরণ হবে কিনা সন্দেহ রয়েছে। এই অবস্থায় বদলি চালু নানা জটিলতা তৈরি হবে। আবার এই প্রক্রিয়া চালু করা হলে গ্রামের সব শিক্ষক শহরে চলে আসবেন। খালি হওয়া ওই পদগুলো আর পূরণ করা সম্ভব হবে না। এজন্য আপাতত বদলি চালু না করে পারস্পরিক বদলি বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এদিকে সোমবার বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলির জন্য ৯০ দিনের মধ্যে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। শিক্ষা সচিবসহ বিবাদিদের প্রতি এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জনবল কাঠামো অনুসারে, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বদলির জন্য একটি নীতিমালা বা নির্দেশিকা প্রণয়নে নির্দেশনা চেয়ে বেসরকারি স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত ১৩০ জন শিক্ষক ২০২১ সালে রিটটি করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ওই বছরের ৬ জুন হাইকোর্ট রুল দেন। রুলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বদলির জন্য জনবলকাঠামো অনুযায়ী একটি নীতিমালা বা নির্দেশিকা প্রণয়ন করতে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। এ সংক্রান্ত রুলের শুনানি শেষে সোমবার রায় দেওয়া হয়।