নিয়মিত টিকা দিলে শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার এবং শিশুর পঙ্গুত্বের হার কমানো সম্ভব। স্বাস্থ্যসেবায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। প্রত্যেক নাগরিকের স্বাস্থ্যসেবা একটি মৌলিক চাহিদার গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বর্তমান সরকার স্বাস্থ্যসেবায় ব্যাপক উন্নতি করেছে। বিশ^ টিকাদান সপ্তাহ উদ্বোধনকালে প্রাধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন।
তিনি আরও বলেন, বৈশি^ক করোনা মহামারীর সময় অনেক উন্নত দেশগুলো বিনামূল্যে কোভিড—১৯ ভ্যাকসিন প্রদানে হিমশিম খেয়েছে। বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্ব ও নিরলস প্রচেষ্টায় বাংলাদেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষ বিনামূল্যে এ ভ্যাকসিন পেয়েছেন।
মেয়র বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্যসেবায় সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ইপিআই একটি বিশ্বব্যাপী কর্মসূচি যার মূল লক্ষ্য হচ্ছে সংক্রামক রোগ থেকে শিশুদের অকালমৃত্যু ও পঙ্গুত্ব রোধ করা।
সিলেট সিটি কর্পোরেশনের আয়োজনে ও সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় সোমবার (২৯ এপ্রিল) নগরীর ৮ নং ওয়ার্ডস্থ বীরেশচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়।
জানা যায়, বিশ্বে প্রতি বছরই এপ্রিলের ৪র্থ সপ্তাহে বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ পালিত হয়ে আসছে। প্রতিবারের ধারাবাহিকতায় এ বছর ও পালিত হচ্ছে বিশ্ব টিকাদান সপ্তাহ। এই কর্মসূচীর মাধ্যমে বাদ পড়া শিশু, আংশিক টিকা প্রাপ্ত শিশু ও মিসড কমিউনিটি সনাক্তকরে টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা হবে।
ইপিআই টিকাদান কর্মসূচি শুরু করার আগে বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় আড়াই লাখ শিশু ৬টি রোগে মারা যেত। ১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশে ১ বছরের কম বয়সী সকল শিশুদের ৬টি সংক্রামক রোগের টিকা দেয়ার মাধ্যমে ইপিআই কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচীতে ১০টি সংক্রামক রোগের টিকা দেয়া হচ্ছে। এ রোগগুলো হলো শিশুদের যক্ষ্মা, পোলিওমাইলাইটিস, ডিফথেরিয়া, হুপিংকাশি, হেপাটাইটিস—বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা—বি জনিত রোগসমূহ, নিউমোকক্কাল জনিত নিউমোনিয়া, মা ও নবজাতকের ধনুষ্টংকার, হাম ও রুবেলা।
নিয়মিত টিকাদান কার্যক্রমের মাধ্যমে এই ১০টি রোগের কারণজনিত মৃত্যু হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বাংলাদেশে টিকাদান কর্মসচির উদ্দেশ্য শিশু ও মাতৃ মৃত্যুর হার এবং শিশুর পঙ্গুত্বের হার কমানো।
উদ্দিষ্ট জনগোষ্ঠী ০—১১ মাস বয়সী সকল শিশু, ১৫ মাস বয়সী সকল শিশু, ১৫ বছর বয়সী সকল কিশোরী ও ১৫—৪৯ বছর বয়সের সন্তান ধারণক্ষম সকল মহিলা।
সিলেট সিটি কর্পোরেশন ২০২২ইং সালের মাঝামাঝি সময় হতে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ও ইউনিসেফর সহযোগীতায় ৪২টি ওয়ার্ডে ২৫৯ ইপিআই কেন্দ্রের মাধ্যমে ইপিআই কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
কর্মসূচিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ৮ নং ওয়ার্ড সাধারণ কাউন্সিলর জগদীশ চন্দ্র দাশ, সংরক্ষিত কাউন্সিলর রেবেকা বেগম, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম নজু।
এসময় সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সচিব আশিক নূর, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোঃ জাহিদুল ইসলাম, জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর, সহকারি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মঞ্জুর মোর্শেদ অসিমসহ সিটি কর্পোরেশন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।