Sylhet ০৯:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুরমা নদী খননে ধীর গতি ,নজরদারী না থাকায় প্রকল্প জলে যাওয়ার শঙ্কা

আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষ্যে  শনিবার সুরমা নদীর খনন কাজ পরিদর্শনের উদ্যোগ নেয় সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) নামের দুটি পরিবেশবাদী নাগরিক সংগঠন।

সিলেটের পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাষ্টের সভাপতি ডাঃ মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী (বাহার)-এর নেতৃত্বে এই পরিদর্শন টিমে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল করিম কিম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ও ধরার আইনজীবি প্যানেলের সদস্য সুদীপ্ত অর্জুন ও গোলাম সোবহান চৌধুরী দিপন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের  সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী ওয়াক্কাস সোহেল, নাগরিক সংগঠক রেজাউল কিবরিয়া লিমন,
সমাজকর্মী রোমেনা বেগম রোজী, দক্ষিন সুরমার ভাড়েরা বিল রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা শামীম কবীর, পরিবেশকর্মী নিরঞ্জন সরকার প্রমুখ।

দক্ষিন সুরমা উপজেলার দক্ষিন কুশিঘাট এলাকায় বেলা ১১টা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত সুরমা নদীর চলমান খনন কাজ পরিদর্শন শেষে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন নাগরিক প্রতিনিধিরা। প্রতিনিধি দলের প্রধান ডাঃ শাহজামান চৌধুরী বাহার বলেন, সিলেটের মানুষ আশা করেছিল সুরমা নদী খননের মাধ্যমে নাব্যতা ফেরানো হবে। কিন্তু নদী খননের কাজ লক্ষ্যমাত্রা থেকে বহুদূরে। নদী খনন নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বের নজরদারী না থাকায় প্রকল্পের ৫০ কোটি টাকা জলেই যাবে।

সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির দস্য আব্দুল করিম কিম বলেন, ২০২৩ সালের ২১ জানুয়ারি অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে খনন কাজের উদবোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সে সময়ে তিনি বলেছিলেন, “সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি উপচে পড়ছে। সুরমা খনন করতে হবে। আমরা নদী খননের পরিকল্পনা নিয়েছি। আগামী বর্ষার আগেই খনন করা হবে।”  বর্ষা শেষ হয়ে আরেক বর্ষা সমাগত। সুরমা নদীর খনন কাজ শেষ হয়নি। প্রকল্পের আওতাধীন  ১৮ কিলোমিটারের ৮ কিলোমিটার নদী খনন হয়েছে বলাটাও কঠিন। সুরমা নদী খনন নিয়ে যা হচ্ছে তা রাষ্ট্রের অর্থের অপচয়। এই খনন শুভংকরের ফাঁকি।

আইনজীবি সুদীপ্ত অর্জুন বলেন, সুরমা নদীর খনন কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন না হলে আবারো সিলেট নগরবাসী বন্যায় নাকাল হবেন। তাই সুরমা নদীর খননকাজ আদায়ে সর্বমহলের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন।

এডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী বলেন, সুরমার পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য সম্পূর্ণ নদী খনন করার দাবী থাকা সত্বেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল মাত্র ১৮ কিলোমিটার খননের। অথচ এইটূকু নদী খননেও গড়িমসি লক্ষ্য করলাম।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের  সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী ওয়াক্কাস সোহেল বলেন, সুরমা নদীর খনন কাজ যে গতিতে চলছে তা ইহজনমেও কি শেষ হবে? এ যেন জনদাবির সাথে মশকরা। খারাপ লাগছে এ রকম বড় একটা নদীকে চোখের সামনে শেষ হতে দেখে। আমরা আশা করতে চাই উপর মহলের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং নদী খনন কাজ বাস্তবায়িত হবে।

সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’র পক্ষ থেকে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের জানানো হয় যে, সুরমার উৎসমুখ থেকে লোভাছড়ার মিলনস্থল পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার নদীপথে শতাধিক চর খনন সহ সুরমা নদীকে স্থায়ীভাবে নাগরিক বর্জ্যমুক্ত করতে ও সুরমা নদীর চলমান খনন কাজ যথাযথভাবে সমাপ্ত করার দাবীতে পরিবেশবাদীরা অচীরেই আন্দোলনের নতুন কর্মসুচী গ্রহন করবে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জগন্নাথপুর যুব জমিয়তের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি শপথ অনুষ্ঠিত

সুরমা নদী খননে ধীর গতি ,নজরদারী না থাকায় প্রকল্প জলে যাওয়ার শঙ্কা

প্রকাশের সময় : ০৩:৪৭:৩২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪

আন্তর্জাতিক নদীকৃত্য দিবস উপলক্ষ্যে  শনিবার সুরমা নদীর খনন কাজ পরিদর্শনের উদ্যোগ নেয় সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা) নামের দুটি পরিবেশবাদী নাগরিক সংগঠন।

সিলেটের পরিবেশ ও ঐতিহ্য সংরক্ষণ ট্রাষ্টের সভাপতি ডাঃ মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী (বাহার)-এর নেতৃত্বে এই পরিদর্শন টিমে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল করিম কিম, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবি ও ধরার আইনজীবি প্যানেলের সদস্য সুদীপ্ত অর্জুন ও গোলাম সোবহান চৌধুরী দিপন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের  সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী ওয়াক্কাস সোহেল, নাগরিক সংগঠক রেজাউল কিবরিয়া লিমন,
সমাজকর্মী রোমেনা বেগম রোজী, দক্ষিন সুরমার ভাড়েরা বিল রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা শামীম কবীর, পরিবেশকর্মী নিরঞ্জন সরকার প্রমুখ।

দক্ষিন সুরমা উপজেলার দক্ষিন কুশিঘাট এলাকায় বেলা ১১টা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত সুরমা নদীর চলমান খনন কাজ পরিদর্শন শেষে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করেন নাগরিক প্রতিনিধিরা। প্রতিনিধি দলের প্রধান ডাঃ শাহজামান চৌধুরী বাহার বলেন, সিলেটের মানুষ আশা করেছিল সুরমা নদী খননের মাধ্যমে নাব্যতা ফেরানো হবে। কিন্তু নদী খননের কাজ লক্ষ্যমাত্রা থেকে বহুদূরে। নদী খনন নিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্বের নজরদারী না থাকায় প্রকল্পের ৫০ কোটি টাকা জলেই যাবে।

সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর কেন্দ্রীয় আহবায়ক কমিটির দস্য আব্দুল করিম কিম বলেন, ২০২৩ সালের ২১ জানুয়ারি অনেক ঢাকঢোল পিটিয়ে খনন কাজের উদবোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। সে সময়ে তিনি বলেছিলেন, “সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানি উপচে পড়ছে। সুরমা খনন করতে হবে। আমরা নদী খননের পরিকল্পনা নিয়েছি। আগামী বর্ষার আগেই খনন করা হবে।”  বর্ষা শেষ হয়ে আরেক বর্ষা সমাগত। সুরমা নদীর খনন কাজ শেষ হয়নি। প্রকল্পের আওতাধীন  ১৮ কিলোমিটারের ৮ কিলোমিটার নদী খনন হয়েছে বলাটাও কঠিন। সুরমা নদী খনন নিয়ে যা হচ্ছে তা রাষ্ট্রের অর্থের অপচয়। এই খনন শুভংকরের ফাঁকি।

আইনজীবি সুদীপ্ত অর্জুন বলেন, সুরমা নদীর খনন কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন না হলে আবারো সিলেট নগরবাসী বন্যায় নাকাল হবেন। তাই সুরমা নদীর খননকাজ আদায়ে সর্বমহলের সোচ্চার হওয়া প্রয়োজন।

এডভোকেট গোলাম সোবহান চৌধুরী বলেন, সুরমার পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখার জন্য সম্পূর্ণ নদী খনন করার দাবী থাকা সত্বেও উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল মাত্র ১৮ কিলোমিটার খননের। অথচ এইটূকু নদী খননেও গড়িমসি লক্ষ্য করলাম।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের  সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলী ওয়াক্কাস সোহেল বলেন, সুরমা নদীর খনন কাজ যে গতিতে চলছে তা ইহজনমেও কি শেষ হবে? এ যেন জনদাবির সাথে মশকরা। খারাপ লাগছে এ রকম বড় একটা নদীকে চোখের সামনে শেষ হতে দেখে। আমরা আশা করতে চাই উপর মহলের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং নদী খনন কাজ বাস্তবায়িত হবে।

সুরমা রিভার ওয়াটারকিপার ও ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)’র পক্ষ থেকে উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদের জানানো হয় যে, সুরমার উৎসমুখ থেকে লোভাছড়ার মিলনস্থল পর্যন্ত ৩২ কিলোমিটার নদীপথে শতাধিক চর খনন সহ সুরমা নদীকে স্থায়ীভাবে নাগরিক বর্জ্যমুক্ত করতে ও সুরমা নদীর চলমান খনন কাজ যথাযথভাবে সমাপ্ত করার দাবীতে পরিবেশবাদীরা অচীরেই আন্দোলনের নতুন কর্মসুচী গ্রহন করবে।