পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে অসহায় মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য সরকারি বরাদ্দের ৬০ বস্তা (তিনশ কেজি) চাল একটি দোকানের গুদাম থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের রাজানগর বাজার থেকে চাল জব্দ করা হয়।
জানা যায়, রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জুয়েলের ছোট ভাই আজহারুল ইসলামের দোকানের পেছনের গুদাম থেকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনি রায় ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনির হুসেনের উপস্থিতিতে চাল জব্দ করে পুলিশ। এসময় দোকানের কর্মচারী সাগর মিয়াকে আটক করা হয়। রাতেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা বাদী হয়ে রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈলেন চন্দ্র দাস তালুকদারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি চাল মজুতের দায়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দায়ের করেন।
রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম জুয়েল জানান, উদ্ধারকৃত চালগুলো তার নয়। তিনি গত বুধবারের মধ্যেই বিতরণ করে শেষ করেছেন।
জহিরুল ইসলাম জুয়েলের ছোট ভাই রাজানগর বাজারের ব্যবসায়ী আজহারুল ইসলাম জানান, বিকেলে রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈলেন চন্দ্র দাস তাকে ফোন করে কিছু চাল বাজারে রাখার ব্যবস্থা করতে বলেন। উনার অনুরোধে আমার চাচাতো ভাইয়ের দোকানে রাখতে দিয়েছি, চালগুলো উনার।
রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈলেন চন্দ্র দাস বলেন, আমার ইউনিয়নের মেঘনা গ্রামে বিতরণের জন্য ৪এপ্রিল গুদাম থেকে ৬০ বস্তা (৩০০ কেজি) ভিজিএফ’র সরকারি চাল উত্তোলন করে নিয়ে আসার সময় রাজানগর বাজার এলাকায় বৃষ্টি চলে আসে। তাৎক্ষণিকভাবে আমি ফোন করে আজহারুলকে বলি চালগুলো একটি ঘরে রাখার ব্যবস্থা করার জন্য, সে তার চাচার দোকানে রাখার ব্যবস্থা করে। বাড়িতে আসার পর শুনতে পারি চাল নিয়ে ভেজাল হচ্ছে।
সহকারী কমিশনার ভূমি জনি রায় বলেন, খবর পেয়ে রাজানগর বাজারে গিয়ে একটি দোকানে ৬০ বস্তা সরকারি চাল পাই। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারসহ আমরা দিরাই থানা পুলিশের মাধ্যমে তা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানান, কালো বাজারে বিক্রির জন্য সরকারি চাল মজুতের অপরাধে রফিনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শৈলেন চন্দ্র দাস তালুকদারসহ ৬ জনের নামে মামলা হয়েছে। আটককৃত একজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে মাননীয় আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাকে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খন্দকার জানান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনির হুসেন বাদী হয়ে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। জড়িত কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না।