Sylhet ১১:২৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে জলাবদ্ধতা তৈরি করেছে। শহরের বেশির ভাগ সড়কে হাঁটু পানি। অনেকের বাসা-বাড়িতে ও দোকানে পানি ঢোকায় দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে শহরের অনেক ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিন্মাঞ্চল।

 

এদিকে প্রচ- ঝড় ও বজ্রপাতের কারণে রাত থেকে নেই বিদ্যুৎ।  সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, ঝড় ও বজ্রপাতের কারণে ৩৩ কেভি লাইন বন্ধ হয়ে গেছে। ঝড় বৃষ্টির কারণে ফল্ট পেতে বিলম্ব হচ্ছে। তারা সকলকে ধৈর্য্য ধারন করার অনুরোধ করেছেন।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নতুনপাড়া, বাঁধনপাড়া, উপত্যকা, হাছননগর, আরপিননগর, উকিলপাড়া, ডিএস রোড, ষোলঘর, শান্তিবাগ সহ বিভিন্ন সড়কে পানি উঠেছে। অনেকের দোকানর জিনিসপত্র ভিজে গেছে। ভোর থেকেই দোকানের মালামাল উপরে তোলা অথবা স্থানান্তর করছেন দোকানীরা। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ও আবাসিক এলাকার উপর দিয়ে পানি গিয়ে পড়ছে ঝাওয়ার হাওরে।

 

সাদিকুর রহমান বলেন, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উঠানে ও সড়কে পানি উঠেছে। শহরের বেশীর ভাগ সড়কেই পানি। বৃষ্টিতে ভিজে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। এর আগে কোন ঈদে এভাবে বৃষ্টিপাত হতে দেখিনি। এবারে ঈদে কোন আনন্দ নেই, ২০২২ সালের জুনের মতো বন্যা আতঙ্কে আছে মানুষ।

 

ডা. নুরুল ইসলাম এক ফেসবুক স্টেটাসে লিখেছেন, ‘যে পরিমানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে সুনামগঞ্জে- নদী, হাওর-বাওর, খাল-বিল, পুকুর সব পানির নিচে। ঈদের আনন্দ সব মাটি হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ রহম করো।’ আরেকটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘সুনামগঞ্জ শহরের রাস্তায় সুরমা নদীর পানি উঠে গেছে। আলিমাবাগ উকিলপাড়া রাস্তায় প্রায় হাঁটু পানি।’
নতুন পাড়ার মুদি দোকানী অমল দাস বলেন, এভাবে পানি বাড়বে বুঝতে পারিনি। আমার দোকানের বেশীরভাগ মালামাল পানিতে ভিজে গেছে। ভোরে দোকানে এসে মালামাল উপরে তুলছি। তিনি বলেন, মাঝে বৃষ্টি থামায় পানি কিছুটা কমেছিল, বৃষ্টিতে এখন আবার পানি বাড়ছে।

 

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, বৃষ্টিপাত ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা অব্যাহত থাকতে পারে। ছোট পরিসরে স্বল্প মেয়াদি বন্যা হতে পারে। তবে ২০২২ সালের মত এতো ভয়ংকর কিছু হবে না।

 

সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সজিব আহমদ জানিয়েছেন, ঈদের দিন সহ আগামী ২৪, ৪৮ ও ৭২ ঘণ্টাসহ আগামী পাঁচ দিন সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোন কোন এলাকায় মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

 

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী। তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নগদ টাকা, চাল, শুকনো খাবার মজুদ আছে। ব্যবসায়ীদের সাথেও কথা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য নৌকা সহ মাঝিদের প্রস্তুত রাখা আছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sylhet Vision

জনপ্রিয় সংবাদ

সুনামগঞ্জে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রকাশের সময় : ১২:৫২:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে জলাবদ্ধতা তৈরি করেছে। শহরের বেশির ভাগ সড়কে হাঁটু পানি। অনেকের বাসা-বাড়িতে ও দোকানে পানি ঢোকায় দুর্ভোগে পড়েছেন মানুষজন। বৃষ্টি মাথায় নিয়ে শহরের অনেক ঈদগাহে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭ সে.মি উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নিন্মাঞ্চল।

 

এদিকে প্রচ- ঝড় ও বজ্রপাতের কারণে রাত থেকে নেই বিদ্যুৎ।  সুনামগঞ্জ বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, ঝড় ও বজ্রপাতের কারণে ৩৩ কেভি লাইন বন্ধ হয়ে গেছে। ঝড় বৃষ্টির কারণে ফল্ট পেতে বিলম্ব হচ্ছে। তারা সকলকে ধৈর্য্য ধারন করার অনুরোধ করেছেন।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, সুনামগঞ্জ পৌর শহরের নতুনপাড়া, বাঁধনপাড়া, উপত্যকা, হাছননগর, আরপিননগর, উকিলপাড়া, ডিএস রোড, ষোলঘর, শান্তিবাগ সহ বিভিন্ন সড়কে পানি উঠেছে। অনেকের দোকানর জিনিসপত্র ভিজে গেছে। ভোর থেকেই দোকানের মালামাল উপরে তোলা অথবা স্থানান্তর করছেন দোকানীরা। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লা ও আবাসিক এলাকার উপর দিয়ে পানি গিয়ে পড়ছে ঝাওয়ার হাওরে।

 

সাদিকুর রহমান বলেন, ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে উঠানে ও সড়কে পানি উঠেছে। শহরের বেশীর ভাগ সড়কেই পানি। বৃষ্টিতে ভিজে ঈদের নামাজ আদায় করেছি। এর আগে কোন ঈদে এভাবে বৃষ্টিপাত হতে দেখিনি। এবারে ঈদে কোন আনন্দ নেই, ২০২২ সালের জুনের মতো বন্যা আতঙ্কে আছে মানুষ।

 

ডা. নুরুল ইসলাম এক ফেসবুক স্টেটাসে লিখেছেন, ‘যে পরিমানে বৃষ্টিপাত হচ্ছে সুনামগঞ্জে- নদী, হাওর-বাওর, খাল-বিল, পুকুর সব পানির নিচে। ঈদের আনন্দ সব মাটি হয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ রহম করো।’ আরেকটি স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, ‘সুনামগঞ্জ শহরের রাস্তায় সুরমা নদীর পানি উঠে গেছে। আলিমাবাগ উকিলপাড়া রাস্তায় প্রায় হাঁটু পানি।’
নতুন পাড়ার মুদি দোকানী অমল দাস বলেন, এভাবে পানি বাড়বে বুঝতে পারিনি। আমার দোকানের বেশীরভাগ মালামাল পানিতে ভিজে গেছে। ভোরে দোকানে এসে মালামাল উপরে তুলছি। তিনি বলেন, মাঝে বৃষ্টি থামায় পানি কিছুটা কমেছিল, বৃষ্টিতে এখন আবার পানি বাড়ছে।

 

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, বৃষ্টিপাত ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টা অব্যাহত থাকতে পারে। ছোট পরিসরে স্বল্প মেয়াদি বন্যা হতে পারে। তবে ২০২২ সালের মত এতো ভয়ংকর কিছু হবে না।

 

সিলেট আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ সজিব আহমদ জানিয়েছেন, ঈদের দিন সহ আগামী ২৪, ৪৮ ও ৭২ ঘণ্টাসহ আগামী পাঁচ দিন সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের কোন কোন এলাকায় মাঝারী থেকে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

 

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসন প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী। তিনি বলেন, আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নগদ টাকা, চাল, শুকনো খাবার মজুদ আছে। ব্যবসায়ীদের সাথেও কথা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা চালানোর জন্য নৌকা সহ মাঝিদের প্রস্তুত রাখা আছে।