Sylhet ০৩:৩২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৭ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সুনামগঞ্জে প্রার্থীরা লড়ছেন নেতারাও নড়ছেন

 

ভিশন ডেস্ক::

সুনামগঞ্জের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার শান্তিগঞ্জের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে বিশম্ভরপুর উপজেলার পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী দিলীপ কুমার বর্মণ পৃথক পৃথকভাবে এই অভিযোগ করেন। অবশ্য সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এম এ মান্নান বলেছেন, বাড়ির বাইরে কোথাও যাচ্ছি না। বাড়িতে থাকা নিষেধ আছে বলে জানি না। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট বলেছেন, বিশম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে বা ভোটের দিন আইন লঙ্ঘন করার কিছুই করি নি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে আলাদা আলাদাভাবে অভিযোগ দায়ের করেন বিশম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী দিলীপ কুমার বর্মন।
লিখিত অভিযোগে দিলীপ কুমার বর্মন উল্লেখ করেন, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট সরকারী সুযোগ সুবিধা ও পরিবহন সহকারে  ভোটের দিন আনারস প্রতীকের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম তালুকদারের পক্ষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে সশরীরে অনধিকার ও বেআইনীভাবে প্রবেশ করে আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাশপাশি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে প্রভাবিত করেন। পলাশ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আনারস প্রতীকের প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে নিয়ে সশরীরে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন বলেও অভিযোগে দাবি করা হয়। ভোটের আগেও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলার ধনপুর, সলুকাবাদ ও দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নে নিয়ম লঙ্ঘন করে প্রচারাভিযানে অংশ নেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট বলেন, আমি কোথাও আচরণবিধি লঙ্ঘনের কিছুই করি নি। প্রচারভিযানেও অংশ নেই নি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে কী না, ভোটার উপস্থিতি কেমন আছে দেখতে গিয়েছি।
এদিকে জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আবুল কালাম বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন দাবি করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগে আবুল কালাম উল্লেখ করেন, সংসদ সদস্য এমএ মান্নান তার শান্তিগঞ্জের বাড়িতে এক সপ্তাহ হয় অবস্থান করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী ছেলে সাদাত মান্নান অভি’র পক্ষে সরকারের সার ও বীজ ডিলারদের নিয়ে এবং শান্তিগঞ্জ উপজেলার আট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের নিয়ে নিজের বাড়িতে নির্বাচনী সভা করেছেন। নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন এমন শিক্ষক ও সরকারি কর্মকর্তাদের ডেকে এনে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের অফিসে পাঠান আবুল কালাম।
সংসদ সদস্য এমএ মান্নান এই প্রসঙ্গে বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারাভিযান শুরু হবার পর বাড়ী থেকে বের হই নি, বাড়িতে থাকা নিষেধ আছে, এমনটাও আমি জানি না। এলাকার এমপি হিসেবে বাড়িতে কেউ কোন কাজ নিয়ে আসলে, আমার করার মত থাকলে করে দিচ্ছি। কারা কী অভিযোগ করেছেন দেখি নি।
এদিকে বুধবার দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী খায়রুল হুদা চপলকে সমর্থন জানিয়ে জাতীয় পার্টির সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট। এসময় গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাদিকের সহধর্মিণী জেসমিনারা বেগম চেয়ারম্যান প্রার্থী ভাগ্নে ফজলে রাব্বি স্মরণের পক্ষে এমপি’র পরিচয় দিয়ে ফোনে ভোট চাইছেন। তাতেও নির্বাচনী আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে করেন মুকুট।
জেসমিনারা বেগম ফোন রিসিভ না করায় এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায় নি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ সাদিক এমপি এই প্রসঙ্গে বলেন, আমার জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও দলীয় নির্দেশনা যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করছি। এটি আমি নি:সংকোচে বলছি।
এর আগে প্রথম ধাপের নির্বাচনে দিরাই উপজেলার দুইজন চেয়ারম্যান অভিযোগ তুলেছিলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য জয়া সেন এর বরাদ্দ দেবার আশ্য়ে্াস দিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রদীপ রায় ভোট চাইছেন। দ্বিতীয় ধাপের জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিম শামীম গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, নির্বাচনী প্রচার চলাকালে অন্য একটি অনুষ্ঠানে এসে কৌশলে আরেক প্রার্থীর প্রচার করছেন স্থানীয় এমপি রনজিত সরকার।

ড. জয়া সেন গুপ্তা এমপি এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, এ ধরনের কোন সুযোগ নেই, অভিযোগেরও ভিত্তি নেই। অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার এমপি বলেছিলেন, আমি জামালগঞ্জে নির্বাচনের প্রচারে যাই নি। মন্দির উদ্বোধনে গিয়েছি। নির্বাচন নিয়ে কোন কথাও বলি নি।

সুত্র-সুনামগঞ্জের খবর

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

সুনামগঞ্জে প্রার্থীরা লড়ছেন নেতারাও নড়ছেন

প্রকাশের সময় : ০১:২৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০২৪

 

ভিশন ডেস্ক::

সুনামগঞ্জের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন সংসদ সদস্য ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার শান্তিগঞ্জের চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম ও দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে বিশম্ভরপুর উপজেলার পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী দিলীপ কুমার বর্মণ পৃথক পৃথকভাবে এই অভিযোগ করেন। অবশ্য সুনামগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য, সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি এম এ মান্নান বলেছেন, বাড়ির বাইরে কোথাও যাচ্ছি না। বাড়িতে থাকা নিষেধ আছে বলে জানি না। জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট বলেছেন, বিশম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে বা ভোটের দিন আইন লঙ্ঘন করার কিছুই করি নি।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক এবং জেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে আলাদা আলাদাভাবে অভিযোগ দায়ের করেন বিশম্ভরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরাজিত চেয়ারম্যান প্রার্থী দিলীপ কুমার বর্মন।
লিখিত অভিযোগে দিলীপ কুমার বর্মন উল্লেখ করেন, সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট সরকারী সুযোগ সুবিধা ও পরিবহন সহকারে  ভোটের দিন আনারস প্রতীকের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম তালুকদারের পক্ষে কেন্দ্রে কেন্দ্রে সশরীরে অনধিকার ও বেআইনীভাবে প্রবেশ করে আচরণবিধি লঙ্ঘনের পাশপাশি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনকে প্রভাবিত করেন। পলাশ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে আনারস প্রতীকের প্রার্থী রফিকুল ইসলামকে নিয়ে সশরীরে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ করেছেন বলেও অভিযোগে দাবি করা হয়। ভোটের আগেও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উপজেলার ধনপুর, সলুকাবাদ ও দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নে নিয়ম লঙ্ঘন করে প্রচারাভিযানে অংশ নেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল হুদা মুকুট বলেন, আমি কোথাও আচরণবিধি লঙ্ঘনের কিছুই করি নি। প্রচারভিযানেও অংশ নেই নি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে কী না, ভোটার উপস্থিতি কেমন আছে দেখতে গিয়েছি।
এদিকে জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. আবুল কালাম বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন দাবি করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগে আবুল কালাম উল্লেখ করেন, সংসদ সদস্য এমএ মান্নান তার শান্তিগঞ্জের বাড়িতে এক সপ্তাহ হয় অবস্থান করে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছেন। তিনি চেয়ারম্যান প্রার্থী ছেলে সাদাত মান্নান অভি’র পক্ষে সরকারের সার ও বীজ ডিলারদের নিয়ে এবং শান্তিগঞ্জ উপজেলার আট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের নিয়ে নিজের বাড়িতে নির্বাচনী সভা করেছেন। নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন এমন শিক্ষক ও সরকারি কর্মকর্তাদের ডেকে এনে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমের অফিসে পাঠান আবুল কালাম।
সংসদ সদস্য এমএ মান্নান এই প্রসঙ্গে বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রচারাভিযান শুরু হবার পর বাড়ী থেকে বের হই নি, বাড়িতে থাকা নিষেধ আছে, এমনটাও আমি জানি না। এলাকার এমপি হিসেবে বাড়িতে কেউ কোন কাজ নিয়ে আসলে, আমার করার মত থাকলে করে দিচ্ছি। কারা কী অভিযোগ করেছেন দেখি নি।
এদিকে বুধবার দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান প্রার্থী খায়রুল হুদা চপলকে সমর্থন জানিয়ে জাতীয় পার্টির সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল হুদা মুকুট। এসময় গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য মোহাম্মদ সাদিকের সহধর্মিণী জেসমিনারা বেগম চেয়ারম্যান প্রার্থী ভাগ্নে ফজলে রাব্বি স্মরণের পক্ষে এমপি’র পরিচয় দিয়ে ফোনে ভোট চাইছেন। তাতেও নির্বাচনী আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে মনে করেন মুকুট।
জেসমিনারা বেগম ফোন রিসিভ না করায় এই বিষয়ে তাঁর বক্তব্য নেওয়া যায় নি।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ড. মোহাম্মদ সাদিক এমপি এই প্রসঙ্গে বলেন, আমার জ্ঞান ও বিশ্বাস মতে সর্বোচ্চ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে সরকার, নির্বাচন কমিশন ও দলীয় নির্দেশনা যথাযথভাবে পালনের চেষ্টা করছি। এটি আমি নি:সংকোচে বলছি।
এর আগে প্রথম ধাপের নির্বাচনে দিরাই উপজেলার দুইজন চেয়ারম্যান অভিযোগ তুলেছিলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য জয়া সেন এর বরাদ্দ দেবার আশ্য়ে্াস দিয়ে চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রদীপ রায় ভোট চাইছেন। দ্বিতীয় ধাপের জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী রেজাউল করিম শামীম গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, নির্বাচনী প্রচার চলাকালে অন্য একটি অনুষ্ঠানে এসে কৌশলে আরেক প্রার্থীর প্রচার করছেন স্থানীয় এমপি রনজিত সরকার।

ড. জয়া সেন গুপ্তা এমপি এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, এ ধরনের কোন সুযোগ নেই, অভিযোগেরও ভিত্তি নেই। অ্যাডভোকেট রনজিত সরকার এমপি বলেছিলেন, আমি জামালগঞ্জে নির্বাচনের প্রচারে যাই নি। মন্দির উদ্বোধনে গিয়েছি। নির্বাচন নিয়ে কোন কথাও বলি নি।

সুত্র-সুনামগঞ্জের খবর