Sylhet ১০:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেট থেকে শিমুলতলা,সিসিক মেয়রের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা

 

সাজলু লস্কর :

কথা রাখলেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। ‘পাগল’ হাসানের পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি ঘর নির্মাণের উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছিলেন সিসিক মেয়র। তার জানাজার আগে নিজের বক্তব্যে এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তার সেই ঘোষণা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। পাগল হাসানের জন্য এমন ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ তার পরিবারের সদস্যবৃন্দসহ গোটা এলাকাবাসী।

আউল-বাউলের দেশ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সন্তান কন্ঠ শিল্পী গীতিকার ও সুরকার মতিউর রহমান হাসান। তবে ভক্তরা তাকে ভালোবেসে ডাকতেন পাগল হাসান বলে। অল্প সময়ে তিনি তার সৃষ্ট গান সুর আর কথায় সারাদেশে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। সেই সুবাদে দেশজুড়ে তার অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী রয়েছে।

তবে নিজের মা সন্তান আর ভক্ত-অনুরাগীসহ এলাকাবাসীকে কাঁদিয়ে গত ১৮ এপ্রিল এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হয়েছে। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শোকে মুহ্যমান হয়ে উঠেন সিলেটবাসীসহ সারাদেশের মানুষ।ওইদিন-ই, সন্ধ্যা ৭টায় তার জানাজা অনুষ্টিত হয়।জানাজায় সহস্রাধিক শোকার্ত মানুষ অংশগ্রহন করেন। ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীও।

তিনি পাগল হাসানের পরিবারের সদস্যদের বিস্তারিত খোঁজ নেন। তার দুই ছেলে এখনো অবুঝ। তিনি জানাজাপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, আমরা চেষ্টা করব গানপাগল এই মানুষটার সন্তান এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য সবার সহযোগীতায় একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়ার।

শুধু হাসান-ই নয়, সেদিনে সেই দুর্ঘটনায় তার সঙ্গে নিহত হন একই এলাকার আব্দুস সত্তার। তার পরিবারের জন্যও কিছু করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছিলেন সিসিক মেয়র।আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তার কথা রেখেছেন। তিনি তার ঘোষণা বাস্তবায়নের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন।

আজ ২৭ এপ্রিল, ঘোষণার মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই তিনি আমাকে ও একজন প্রকৌশলী এবং সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজকে পাঠিয়েছিলেন ছাতকের শিমুলতলা গ্রামে। পাগল হাসানের পরিবারের সদস্যদের সাথে আমরা কথা বলি।মুলত বাড়ীর ভিটে দেখে ঘরের ডিজাইনের কাজ শুরুর লক্ষেই এই পর্যবেক্ষন।

আমাদের দেখে এবং কথা বলে শোকে হতবিহ্বল হাসানের মা ও সন্তানরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। তিনি তার ঘোষনা বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করায় তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতাও জানান।

শুধু পাগল হাসানই নয়, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পক্ষ থেকে শিমুলতলায় আমাদের দেখে আনন্দ অশ্রু বইছে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আব্দুস সত্তারের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। খুশি শিমুলতলা গ্রামবাসীও।

তাদের মন্তব্য, আনোয়ারুজ্জামানের তৎপরতা প্রমাণ করে, তিনি সিসিক মেয়র হলেও আসলে সিলেট বিভাগের মানুষের জন্যই তার আন্তরিক ভালোবাসা। আমরা তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

মানব কল্যানে তিনি এগিয়ে যাবেন আরও বহুদূর, এই দোয়া ও প্রত্যাশা ওই এলাকাবাসীর।

লেখক::

সম্পাদক ও প্রকাশ

সিলেট প্রতিদিন

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জগন্নাথপুর যুব জমিয়তের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি শপথ অনুষ্ঠিত

সিলেট থেকে শিমুলতলা,সিসিক মেয়রের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা

প্রকাশের সময় : ০২:৫০:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

 

সাজলু লস্কর :

কথা রাখলেন আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। কাজ শুরু করে দিয়েছেন তিনি। ‘পাগল’ হাসানের পরিবারের সদস্যদের জন্য একটি ঘর নির্মাণের উদ্যোগের কথা ঘোষণা করেছিলেন সিসিক মেয়র। তার জানাজার আগে নিজের বক্তব্যে এমন ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি। তার সেই ঘোষণা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। পাগল হাসানের জন্য এমন ভালোবাসা দেখে মুগ্ধ তার পরিবারের সদস্যবৃন্দসহ গোটা এলাকাবাসী।

আউল-বাউলের দেশ সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার সন্তান কন্ঠ শিল্পী গীতিকার ও সুরকার মতিউর রহমান হাসান। তবে ভক্তরা তাকে ভালোবেসে ডাকতেন পাগল হাসান বলে। অল্প সময়ে তিনি তার সৃষ্ট গান সুর আর কথায় সারাদেশে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। সেই সুবাদে দেশজুড়ে তার অসংখ্য ভক্ত অনুরাগী রয়েছে।

তবে নিজের মা সন্তান আর ভক্ত-অনুরাগীসহ এলাকাবাসীকে কাঁদিয়ে গত ১৮ এপ্রিল এক সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হয়েছে। খবরটি ছড়িয়ে পড়লে শোকে মুহ্যমান হয়ে উঠেন সিলেটবাসীসহ সারাদেশের মানুষ।ওইদিন-ই, সন্ধ্যা ৭টায় তার জানাজা অনুষ্টিত হয়।জানাজায় সহস্রাধিক শোকার্ত মানুষ অংশগ্রহন করেন। ছিলেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীও।

তিনি পাগল হাসানের পরিবারের সদস্যদের বিস্তারিত খোঁজ নেন। তার দুই ছেলে এখনো অবুঝ। তিনি জানাজাপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বলেন, আমরা চেষ্টা করব গানপাগল এই মানুষটার সন্তান এবং পরিবারের সদস্যদের জন্য সবার সহযোগীতায় একটি ঘর নির্মাণ করে দেয়ার।

শুধু হাসান-ই নয়, সেদিনে সেই দুর্ঘটনায় তার সঙ্গে নিহত হন একই এলাকার আব্দুস সত্তার। তার পরিবারের জন্যও কিছু করে দেয়ার উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেছিলেন সিসিক মেয়র।আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী তার কথা রেখেছেন। তিনি তার ঘোষণা বাস্তবায়নের প্রাথমিক কাজ শুরু করেছেন।

আজ ২৭ এপ্রিল, ঘোষণার মাত্র ১০ দিনের মধ্যেই তিনি আমাকে ও একজন প্রকৌশলী এবং সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজকে পাঠিয়েছিলেন ছাতকের শিমুলতলা গ্রামে। পাগল হাসানের পরিবারের সদস্যদের সাথে আমরা কথা বলি।মুলত বাড়ীর ভিটে দেখে ঘরের ডিজাইনের কাজ শুরুর লক্ষেই এই পর্যবেক্ষন।

আমাদের দেখে এবং কথা বলে শোকে হতবিহ্বল হাসানের মা ও সন্তানরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। তারা মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন। তিনি তার ঘোষনা বাস্তবায়নে আন্তরিকভাবে কাজ করায় তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতাও জানান।

শুধু পাগল হাসানই নয়, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর পক্ষ থেকে শিমুলতলায় আমাদের দেখে আনন্দ অশ্রু বইছে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আব্দুস সত্তারের পরিবারের সদস্যদের মধ্যে। খুশি শিমুলতলা গ্রামবাসীও।

তাদের মন্তব্য, আনোয়ারুজ্জামানের তৎপরতা প্রমাণ করে, তিনি সিসিক মেয়র হলেও আসলে সিলেট বিভাগের মানুষের জন্যই তার আন্তরিক ভালোবাসা। আমরা তাকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

মানব কল্যানে তিনি এগিয়ে যাবেন আরও বহুদূর, এই দোয়া ও প্রত্যাশা ওই এলাকাবাসীর।

লেখক::

সম্পাদক ও প্রকাশ

সিলেট প্রতিদিন