Sylhet ০১:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিলেটে অপহরণকারী চক্রের নারী সদস্যসহ গ্রেফতার ৪

সিলেটের গোলাপগঞ্জে প্রবাস ফেরত যুবককে ছদ্মবেশে অপহরণের দায়ে অপহরণকারী চক্রের নারী সদস্যসহ ৪জন কে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

এছাড়াও অপহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার জব্দ ও ভিকটিমের মালামাল উদ্ধার করা হয়।

ভিকটিম যুবক উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের নগর গ্রামের ময়না মিয়ার ছেলে সোহেল আহমদ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো : সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার রাধাকুনা গ্রামের মৃত আখল মিয়ার মেয়ে সুবর্ণা আক্তার লাকী (৩২), শাহপরাণ পীরের বাজারের উত্তর মোকামেরগুল গ্রামের মো. শহীদ মিয়ার ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম রুবেল (২৭), ওসমানীনগর উপজেলার দক্ষিণ রাইগদারা গ্রামের মৃত আতিক মিয়ার ছেলে জাহেদ আহমদ (৩৮) ও একই গ্রামের আজমল আলীর ছেলে সুমন রশীদ (৩৩)।

সোমবার রাত ১০টায় প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোলাপগঞ্জ সার্কেল) স্বজল কুমার সরকার।

জানা যায়, ভিকটিম সোহেল আহমদ গত ২৮ মার্চ বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী থেকে রামদা বাজার যাওয়ার জন্য সিএনজি অটোরিক্সায় উঠেন। এসময় ছদ্মবেশী প্রচারক চক্রের সদস্যরা তার নাকে-মুখে স্প্রে দিয়ে অজ্ঞান করে সিলেটের হুমায়ুন চত্ত্বর এলাকায় নিয়ে আসে। সেখানে পূর্ব পরিকল্পিকভাবে প্রাইভেটকার নিয়ে অবস্থান করছিলেন অপহরণকারী চক্রের নারী সদস্য সুবর্ণা আক্তার লাকি। পরে লাকি তার অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় ভিকটিম সোহেলকে কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর এলাকায় নিয়ে যান।

সেখানে তাকে হাত-পা, চোখ বেঁধে স্টীলের পাইপ ও রড দিয়ে মারধর করে ২লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এসময় তিনি তাদের ব্যবহৃত একটি মোবাইল দিয়ে পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করেন। তাকে প্রাণে বাঁচাতে তারা ৯২ হাজার টাকা মুক্তিপণ প্রদান করেন। পরে রাত অনুমান আড়াইটার দিকে তাকে চোখ মুখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে ফেলে যায়।

পরে বুধবার (৩ এপ্রিল) বাড়ি ফিরে সোহেল আহমদ গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় ঘটনার বিষয়টি অবগত করেন। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি আমলে নিয়ে অপহরণকারীদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে থানা পুলিশ।

পরে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় শনিবার (৬ এপ্রিল) গোলাপগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন চন্দ্র সরকারের এর নেতৃত্বে এসআই মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান, এসআই মো. আসিব ইকবাল ও এএসআই মাহমুদুল হাসানসহ পুলিশের একটি টিম সিলেট মহানগরীর একটি বিলাস বহুল হোটেল থেকে সুবর্ণা আক্তার লাকীকে গ্রেফতার করে।

লাকির দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিলেট শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তার সহযোগী জাহাঙ্গীর আলম রুবেল ও জায়েদ আহমদকে গ্রেফতার করা হয়।

তাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক অপহরণকারী চক্রের অন্যতম মূল হোতা সুমন রশীদকে ওসমানীনগর উপজেলর তাজপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার হেফাজত থেকে ভিকটিম সোহেল আহমদ এর কেডস, দামি ঘড়ি, মোবাইল ফোন ও বিদেশী আংটি উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৬০ হাজার টাকা। এছাড়াও অপহরণের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো – গ – ২৩-১৫৯০) জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় ভিকটিম সোহেল বাদী হয়ে ৪জনের নাম উল্লেখ করে ও আরও ২জনকে অজ্ঞাত রেখে মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হলে বিজ্ঞ আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাছুদুল আমিন জানান, ঈদকে সামনে রেখে অপহারণকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। আমরা তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম রয়েছি। সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে ঈদ করতে আমাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জগন্নাথপুর যুব জমিয়তের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি শপথ অনুষ্ঠিত

সিলেটে অপহরণকারী চক্রের নারী সদস্যসহ গ্রেফতার ৪

প্রকাশের সময় : ০৬:১৫:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ এপ্রিল ২০২৪

সিলেটের গোলাপগঞ্জে প্রবাস ফেরত যুবককে ছদ্মবেশে অপহরণের দায়ে অপহরণকারী চক্রের নারী সদস্যসহ ৪জন কে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

এছাড়াও অপহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি প্রাইভেটকার জব্দ ও ভিকটিমের মালামাল উদ্ধার করা হয়।

ভিকটিম যুবক উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের নগর গ্রামের ময়না মিয়ার ছেলে সোহেল আহমদ।

গ্রেফতারকৃতরা হলো : সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার রাধাকুনা গ্রামের মৃত আখল মিয়ার মেয়ে সুবর্ণা আক্তার লাকী (৩২), শাহপরাণ পীরের বাজারের উত্তর মোকামেরগুল গ্রামের মো. শহীদ মিয়ার ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম রুবেল (২৭), ওসমানীনগর উপজেলার দক্ষিণ রাইগদারা গ্রামের মৃত আতিক মিয়ার ছেলে জাহেদ আহমদ (৩৮) ও একই গ্রামের আজমল আলীর ছেলে সুমন রশীদ (৩৩)।

সোমবার রাত ১০টায় প্রেসব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোলাপগঞ্জ সার্কেল) স্বজল কুমার সরকার।

জানা যায়, ভিকটিম সোহেল আহমদ গত ২৮ মার্চ বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার গোলাপগঞ্জ চৌমুহনী থেকে রামদা বাজার যাওয়ার জন্য সিএনজি অটোরিক্সায় উঠেন। এসময় ছদ্মবেশী প্রচারক চক্রের সদস্যরা তার নাকে-মুখে স্প্রে দিয়ে অজ্ঞান করে সিলেটের হুমায়ুন চত্ত্বর এলাকায় নিয়ে আসে। সেখানে পূর্ব পরিকল্পিকভাবে প্রাইভেটকার নিয়ে অবস্থান করছিলেন অপহরণকারী চক্রের নারী সদস্য সুবর্ণা আক্তার লাকি। পরে লাকি তার অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় ভিকটিম সোহেলকে কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর এলাকায় নিয়ে যান।

সেখানে তাকে হাত-পা, চোখ বেঁধে স্টীলের পাইপ ও রড দিয়ে মারধর করে ২লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এসময় তিনি তাদের ব্যবহৃত একটি মোবাইল দিয়ে পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করেন। তাকে প্রাণে বাঁচাতে তারা ৯২ হাজার টাকা মুক্তিপণ প্রদান করেন। পরে রাত অনুমান আড়াইটার দিকে তাকে চোখ মুখ বেঁধে অজ্ঞাত স্থানে ফেলে যায়।

পরে বুধবার (৩ এপ্রিল) বাড়ি ফিরে সোহেল আহমদ গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় ঘটনার বিষয়টি অবগত করেন। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি আমলে নিয়ে অপহরণকারীদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে থানা পুলিশ।

পরে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় শনিবার (৬ এপ্রিল) গোলাপগঞ্জ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন চন্দ্র সরকারের এর নেতৃত্বে এসআই মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান, এসআই মো. আসিব ইকবাল ও এএসআই মাহমুদুল হাসানসহ পুলিশের একটি টিম সিলেট মহানগরীর একটি বিলাস বহুল হোটেল থেকে সুবর্ণা আক্তার লাকীকে গ্রেফতার করে।

লাকির দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সিলেট শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তার সহযোগী জাহাঙ্গীর আলম রুবেল ও জায়েদ আহমদকে গ্রেফতার করা হয়।

তাদের দেয়া তথ্য মোতাবেক অপহরণকারী চক্রের অন্যতম মূল হোতা সুমন রশীদকে ওসমানীনগর উপজেলর তাজপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার হেফাজত থেকে ভিকটিম সোহেল আহমদ এর কেডস, দামি ঘড়ি, মোবাইল ফোন ও বিদেশী আংটি উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৬০ হাজার টাকা। এছাড়াও অপহরণের কাজে ব্যবহৃত প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো – গ – ২৩-১৫৯০) জব্দ করা হয়।

এ ঘটনায় ভিকটিম সোহেল বাদী হয়ে ৪জনের নাম উল্লেখ করে ও আরও ২জনকে অজ্ঞাত রেখে মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হলে বিজ্ঞ আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মাছুদুল আমিন জানান, ঈদকে সামনে রেখে অপহারণকারী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। আমরা তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম রয়েছি। সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে ঈদ করতে আমাদের তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।