গোটা সিলেট জুড়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিতিশীল পরিবেশ দেখা দিয়েছে। ছাত্র ও শিক্ষকদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ উঠে যাচ্ছে এমন পরিবেশে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন শিক্ষাবিদ ও সচেতন মহল। যে ভাবে জোরপূর্বক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় প্রধানদের পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে যা রীতিমতো রেওয়াজে পরিণত হয়ে যাচ্ছে বর্তমান সমাজে।
সম্প্রতি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বিদ্যালয়ের প্রধান ও শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ না করানোর অনুরোধ করার সত্ত্বেও কিছু সংখ্যক অতি উৎসাহিত ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ের প্রধানকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করার জন্য বাধ্য করছেন। এ নিয়ে সিলেটের বেশ কয়েকটি স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসায় এ ধরণের ঘটনা ঘটেছে। এর নেপথ্যে রয়েছে প্রতিষ্ঠানের কিছু বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিরোধী শিক্ষক ও কমিটির সদস্যরা, তারা তাদের স্বার্থ হাসিল করতে না পারায় ছাত্র-ছাত্রীদের একটি ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে লেলিয়ে দিয়ে এমন কান্ড ঘটাচ্ছেন। অনেক সময় শিক্ষকদের গায়ে হাত তোলার ঘটনাও ঘটেছে।
এমন ঘটনায় সিলেট নগরী এবং সিলেট জেলার উপজেলা সমূহের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর নানাধরণের বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে অবৈধ ভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, কলেজের অধ্যক্ষসহ অনেক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে, অবাঞ্ছিত করা হচ্ছে, পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে, দেওয়া হচ্ছে হয়রানিমূলক মামলা।
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করানো হয় সিলেটের দুই কলেজ অধ্যক্ষ কে, ঢাকাদক্ষিণ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এরশাদ আলী ও ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হুসনে আরা বেগম পদত্যাগ করাতে বাধ্য করা হয়।
এদিকে, ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অঙ্কের শিক্ষক দীপক চৌধুরী বুলবুল ক্যাম্পাস থেকে দৌঁড়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কিছু শিক্ষার্থী মারমুখী হলে অন্য ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁকে আগলে রিকশায় তুলে দেন। শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে হাওয়া তুলে অধ্যক্ষ হুসনে আরা বেগম ও শিক্ষক দীপক চৌধুরী বুলবুল আওয়ামী লীগ করে থাকেন বলে অভিযোগ। এমন ঘটনা ঘটে সিলেট নগরীর কিশোরী মোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌরা ঘোষের পদত্যাগের জন্য তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন।
এমন ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ সুরমা সিরাজ উদ্দিন আহমদ একাডেমীর প্রধান শিক্ষকের ক্ষেত্রেও। তাছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলার হেতিমগঞ্জ আতারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও বাদেপাশা ইউনিয়নের মফজ্জিল আলী উচ্চ বিদ্যালয় প্রধানদের সাথে উদ্ভূত আচরণ করেছে ছাত্র-ছাত্রীরা। সবশেষ গোলাপগঞ্জ কুড়ির বাজার ভাদেশ্বর মডেল ফাজিল মাদ্রাসার প্রধান শোয়াইবুর রহমানকে জোরপূর্বক বহিরাগত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা মাদ্রাসায় ছাত্রদের মারধর করে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। এ নিয়ে গোঠা ভাদেশ^র এলাকায় চাঞ্চল্যসৃষ্টি হয়েছে, দেশ-বিদেশে ভক্তরা হুজুরের সাথে এমন আচরণ করায় দফায়-দফায় এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। অনুরুপ ভাবে এমন ঘটনা ঘটেছে ভাদেশ^র নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে।
এদিকে শিক্ষকদের প্রতি অমানবিক উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায় নিচ্ছে না কেউ। প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনা কমিটিও নিশ্চুপ। অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বল প্রয়োগ করে পদত্যাগ করানো নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানের মধ্যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের চেষ্ঠাও চলছে। সবমিলিয়ে এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আবার দেখাও গেছে অনেক শিক্ষককে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে রাজনৈতিক ভাবে আওয়ামীলীগ নেতা সাজিয়ে হেনাস্ত করতে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ঢুকে দেওয়া হচ্ছে।
সচেতন মহল সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে যা করছেন সেটা কোনো ভাবেই মানা যায় না। একজন শিক্ষক যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হন তাহলে তার বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করা হোক। বিধিমোতাবেক তাকে অপসারণ করা হবে। কিন্তু যেটা হচ্ছে তাদের প্রতি সেটা দুঃখজনক।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড.তাহমিনা ইসলাম বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে আমাদের যা অর্জন হয়েছে তা অকল্পনীয়। কিন্তু এখন স্কুল-কলেজে যা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে। দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ থাকলে প্রয়োজনে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের ঘাড়ে ধরে পদত্যাগ করাবে এটা কোনো ভাবে কাম্য না। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিভাবকদের দ্রুত এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, যে ভাবে ছাত্র আন্দোলনের নামে শিক্ষকদের প্রতি অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে, জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হচ্ছে, শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলা হচ্ছে। বাংলাদেশে ইতিপূর্বে এমন ঘটনা ঘটেনি, আমাদের অভিভাবক ও প্রত্যেক পরিবারের সবাই সচেতন হতে হবে। যারা এই সব বেয়াদী ঘটনার সাথে জড়িত তাদের ভবিষ্যত অন্ধকার, বিদ্রোহী ছাত্র-ছাত্রীদের আমাদের বুঝিয়ে এসব থেকে তাড়াতে হবে না হলে আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ আর থাকবে না।
এমন ঘটনায় সিলেট নগরী এবং সিলেট জেলার উপজেলা সমূহের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর নানাধরণের বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে অবৈধ ভাবে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক, কলেজের অধ্যক্ষসহ অনেক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হচ্ছে, অবাঞ্ছিত করা হচ্ছে, পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে, দেওয়া হচ্ছে হয়রানিমূলক মামলা।
আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করানো হয় সিলেটের দুই কলেজ অধ্যক্ষ কে, ঢাকাদক্ষিণ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এরশাদ আলী ও ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ হুসনে আরা বেগম পদত্যাগ করাতে বাধ্য করা হয়।
এদিকে, ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের মুখে ব্লু-বার্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের অঙ্কের শিক্ষক দীপক চৌধুরী বুলবুল ক্যাম্পাস থেকে দৌঁড়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় কিছু শিক্ষার্থী মারমুখী হলে অন্য ছাত্র-ছাত্রীরা তাঁকে আগলে রিকশায় তুলে দেন। শিক্ষার্থীরা ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে হাওয়া তুলে অধ্যক্ষ হুসনে আরা বেগম ও শিক্ষক দীপক চৌধুরী বুলবুল আওয়ামী লীগ করে থাকেন বলে অভিযোগ। এমন ঘটনা ঘটে সিলেট নগরীর কিশোরী মোহন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌরা ঘোষের পদত্যাগের জন্য তার বিরুদ্ধে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা প্রধান শিক্ষকের অফিস কক্ষ ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন।
এমন ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ সুরমা সিরাজ উদ্দিন আহমদ একাডেমীর প্রধান শিক্ষকের ক্ষেত্রেও। তাছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলার হেতিমগঞ্জ আতারিয়া উচ্চ বিদ্যালয় ও বাদেপাশা ইউনিয়নের মফজ্জিল আলী উচ্চ বিদ্যালয় প্রধানদের সাথে উদ্ভূত আচরণ করেছে ছাত্র-ছাত্রীরা। সবশেষ গোলাপগঞ্জ কুড়ির বাজার ভাদেশ্বর মডেল ফাজিল মাদ্রাসার প্রধান শোয়াইবুর রহমানকে জোরপূর্বক বহিরাগত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা মাদ্রাসায় ছাত্রদের মারধর করে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। এ নিয়ে গোঠা ভাদেশ^র এলাকায় চাঞ্চল্যসৃষ্টি হয়েছে, দেশ-বিদেশে ভক্তরা হুজুরের সাথে এমন আচরণ করায় দফায়-দফায় এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। অনুরুপ ভাবে এমন ঘটনা ঘটেছে ভাদেশ^র নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে।
এদিকে শিক্ষকদের প্রতি অমানবিক উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দায় নিচ্ছে না কেউ। প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্যবস্থাপনা কমিটিও নিশ্চুপ। অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো। প্রতিষ্ঠান প্রধানদের বল প্রয়োগ করে পদত্যাগ করানো নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানের মধ্যে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের চেষ্ঠাও চলছে। সবমিলিয়ে এক অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে। আবার দেখাও গেছে অনেক শিক্ষককে ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে রাজনৈতিক ভাবে আওয়ামীলীগ নেতা সাজিয়ে হেনাস্ত করতে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ঢুকে দেওয়া হচ্ছে।
সচেতন মহল সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সঙ্গে যা করছেন সেটা কোনো ভাবেই মানা যায় না। একজন শিক্ষক যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হন তাহলে তার বিরুদ্ধে নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করা হোক। বিধিমোতাবেক তাকে অপসারণ করা হবে। কিন্তু যেটা হচ্ছে তাদের প্রতি সেটা দুঃখজনক।
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড.তাহমিনা ইসলাম বলেন, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে আমাদের যা অর্জন হয়েছে তা অকল্পনীয়। কিন্তু এখন স্কুল-কলেজে যা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। কোনো শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে যথাযথ প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিবে। দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ থাকলে প্রয়োজনে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের ঘাড়ে ধরে পদত্যাগ করাবে এটা কোনো ভাবে কাম্য না। এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অভিভাবকদের দ্রুত এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অভিভাবক জানান, যে ভাবে ছাত্র আন্দোলনের নামে শিক্ষকদের প্রতি অমানবিক আচরণ করা হচ্ছে, জোরপূর্বক পদত্যাগ করানো হচ্ছে, শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলা হচ্ছে। বাংলাদেশে ইতিপূর্বে এমন ঘটনা ঘটেনি, আমাদের অভিভাবক ও প্রত্যেক পরিবারের সবাই সচেতন হতে হবে। যারা এই সব বেয়াদী ঘটনার সাথে জড়িত তাদের ভবিষ্যত অন্ধকার, বিদ্রোহী ছাত্র-ছাত্রীদের আমাদের বুঝিয়ে এসব থেকে তাড়াতে হবে না হলে আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছাত্র-শিক্ষকদের মধ্যে শ্রদ্ধাবোধ আর থাকবে না।