সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জ-৩ আসনের (শান্তিগঞ্জ ও জগন্নাথপুর) সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মান্নানের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে মান্নানের নিজ এলাকা শান্তিগঞ্জ উপজেলার পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
এম এ মান্নানকে গত বৃহস্পতিবার রাতে শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পর দিন তাঁকে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। বর্তমানে তাঁকে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে রাখা হয়েছে। মান্নানকে গ্রেপ্তারের পরদিন শুক্রবারও শান্তিগঞ্জে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
আজ সকালে প্রথমে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডুংরিয়া স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীরা। তারা মিছিল নিয়ে শান্তিগঞ্জ এলাকায় সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের পাশে উপজেলা পরিষদ ভবনের সামনে সড়কে অবস্থা নেন। একইভাবে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সেখানে আসে শান্তিগঞ্জ টেক্সটাইল ইনিস্টিটিউট, আবদুল মজিদ কলেজ, হাজী আকরাম উল্লাহ দাখিল মাদ্রাসা ও জয়কলস উজানীগাঁও সরকারি রসিদিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা সেখানে মানববন্ধন করেন।
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, এম এ মান্নান অবহেলিত সুনামগঞ্জে উচ্চশিক্ষার দ্বার উন্মোচন করেছেন। তাঁর চেষ্টায় সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইনিস্টিটিউট, শিল্প ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আজিজুননেসা ভোকেশনাল ইনিস্টিটিউটসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হয়েছে। সুনামগঞ্জের উন্নয়নে তিনি সব সময় আন্তরিক ছিলেন।
সুনামগঞ্জ পৌর শহরে গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী জহুর আহমদের ভাই দোয়ারাবাজার উপজেলা বাসিন্দা হাফিহ আহমদ ২ সেপ্টেম্বর সদর মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করেন। এই মামলায় এম এ মান্নানসহ ৯৯ জনকে আসামি করা হয়। প্রধান আসামি করা হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল হুদাকে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি আছেন আরও ২৫০ থেকে ৩০০ জন।
৫ আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে এম এ মান্নান শান্তিগঞ্জে তাঁর নিজ বাড়িতেই অবস্থান করছিলেন। সেখান থেকেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এম এ মান্নান সরকারের যুগ্ম সচিব হিসেবে চাকরি জীবন শেষ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। সুনামগঞ্জ-৩ আসন থেকে ২০০৮ সাল থেকে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি।