সিলেটের বন্ধ থাকা সবকটি পাথর কোয়ারী খুলে দেয়ার দাবি জানিয়ে সংসদে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখায় প্রশংসায় ভাসছেন স্হানীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের প্রবাসীকল্যাণ বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্হায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ এমপি। সংসদে রাখা তার এই বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হলে সচেতন মহলসহ নেটিজেনরা তার প্রশংসা করতে থাকেন। মুহূর্তেই ভিডিওটি শত শত পোস্ট ও শেয়ার হয়। সরকারের সাবেক গুরুত্বপূর্ণ এ মন্ত্রী জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের উপর মঙ্গলবার দেয়া বক্তব্যে তিনি এই দাবি জানান।
এসময় তিনি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর রুটি-রুজির পথ বন্ধ না রেখে সনাতন পদ্ধতিতে পূণরায় পাথর কোয়ারীগুলো খুলে দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানান। পাথর কোয়ারী সচলের পাশাপাশি তিনি জাফলং,বিছনাকান্দি সাদা পাথর এলাকায় পর্যটন অবকাঠামো উন্নয়নের বাস্তবসম্মত ও যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান। দেশের মধ্যে কক্সবাজারের পরই পর্যটনে সিলেট এগিয়ে। কিন্তু সেই তুলনায় অবকাঠামো উন্নয়ন একেবারে কম। তিনি পর্যটন স্বীকৃতিসহ এ খাতে আরও ব্যাপক উন্নয়নের দাবি জানান।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে সংসদের আলোচনায় সাবেক মন্ত্রী ইমরান আহমদ এমপি তার বক্তব্যে বলেন, ৫টি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ জেলার আয়তন ৬৮০ বর্গ কিলোমিটার, ২টি আসন নিয়ে গঠিত মেহেরপুর জেলার আয়তন ৭১৬ বর্গ কিলোমিটার ও ৩ টি আসন নিয়ে গঠিত ফেনী জেলার আয়তন ৯২৮ বর্গ কিলোমিটার। অথচ গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত সংসদীয় আসন ২৩২ (সিলেট-৪)। এ আসনের আয়তন ১০৪৩ বর্গ কিলোমিটার।
তিনি বলেন, এ আসনটিতে জনসংখ্যা অনুযায়ী সরকারি বরাদ্দ না পাওয়ায় বিশাল আয়তনের এ আসনটির অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছেনা। আয়তন অনুযায়ী বরাদ্দের দাবি জানান তিনি। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট ১৯৮৮, ২০০৪, ২০১২, ২০২২ এবং ২০২৪ সালের ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত এ আসনটির বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসেবে অবকাঠামো নির্মাণ ও সংস্কার কাজে উপজেলার আয়তন অনুপাতে সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানান তিনি।
এছাড়াও হাওর বেষ্টিত এলাকা হওয়ায় গোয়াইনঘাটে হাওর ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের কার্যক্রম দ্রুত বাস্তবায়ন শুরুর আহবান জানান এই বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ। জনগণের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বিশেষ ইকোনমিক জোন করার দাবি তুলেন।
তিনি বলেন, কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ, গোয়াইনঘাটের জাফলং, বিছনাকান্দি ও জৈন্তাপুর উপজেলার লাখ লাখ পাথর শ্রমিক বারকি নৌকা দিয়ে পাথর তুলে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু পরিবেশের দোহাই দিয়ে সেইখানে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় পাথরে নদী ভরাট হয়ে গেছে। আজ লাখ লাখ শ্রমিক বেকার। বিদেশ থেকে পাথর আমদানি না করে নদীর তলদেশ যে পাথরে ভরাট হয়ে গেছে সেই পাথর উত্তোলনের মধ্য দিয়ে উন্নয়নকে আরও বেগবান করা যাবে। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হবে এবং লাখ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্হা নিতে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।
এ বিষয়ে সিলেটের জেলা পরিষদের সদস্য সুবাস দাস বলেন, আমাদের সিলেটের সবকটি পাথর কোয়ারী খুলে দেয়া এখন সময়ের দাবি, জনগণের গুরুত্বপূর্ণ এ বিষয়টি মহান সংসদে দাড়িয়ে বক্তব্য রেখেছেন আমাদের অত্রাঞ্চলের মাটি ও মানুষের নেতা জননেতা ইমরান আহমদ এমপি। সংসদে সাবলীল ও গঠনমূলক এই বক্তব্য রাখায় সিলেটের ৪ আসন জুড়ে জনগণের প্রশংসায় ভাসছেন তিনি। আমরা আশাবাদী আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যের বক্তব্যটির আলোকে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্তে আমাদের সকল পাথর কোয়ারী খুলে দিলে আমাদের কর্মসংস্হানগুলো স্বাভাবিক হয়ে উঠবে।
#সিলেট প্রতিদিন