Sylhet ১১:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের চেয়ে ব্যক্তি ইমেজই গুরুত্ব পাচ্ছে

 

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলেই কোন্দল থাকায় শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের চেয়ে ব্যক্তি ইমেজই গুরুত্ব পাচ্ছে। দুই শক্তিশালী প্রার্থীই দলের নেতা কর্মীদের দোষছেন। আবার অন্য দলের লোকজনও তাদের সঙ্গে আছেন, এমন ইঙ্গিতও দিচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপির বহিস্কার আদেশকে খুব একটা আমলে নিচ্ছেন না চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা বিএনপি সভাপতি গন্দ্রেন্দ্র চন্দ্র সরকার।
শাল্লায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. অবনী মোহন দাস,  উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা দিপু রঞ্জন দাস ও আওয়ামী লীগ নেতা এসএম শামীম।

স্থানীয় একাধিক ভোটার জানান, দুই শক্তিশালী প্রার্থী অবনী মোহন দাস ও গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের পক্ষেই বিভক্ত হয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীরা।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের প্রতীক আনারসের পক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের অনেকেই আছেন। আবার বিএনপির দায়িত্বশীল অনেকে প্রচারণায় ভোটের মাঠে না থাকলেও ভেতরে ভেতরে গনেন্দ্র এর আনারসের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার নিজেই বললেন, বিএনপির ৯০ ভাগ নেতা কর্মী তার সঙ্গে আছেন। দল তাঁকে বহিস্কার করেছে জেনেও তারা তাকে সহযোগিতা করেছেন। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল আওয়ামী লীগের এক প্রার্থীকে সহযোগিতা করছেন দাবি করে তিনি বললেন, দলের উপজেলা কমিটির একজন সহসভাপতিও তার বিরোধীতা করে আওয়ামী লীগের এক প্রার্থীকে সহযোগিতা করছেন। গনেন্দ্র’র দাবি তারা বিরোধীতা করলেও দলের কর্মী, সমর্থক, ভোটার এমনকি সাধারণ ভোটারের সমর্থন তার পক্ষেই আছে।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল বললেন, গনেন্দ্র বাবু’র বক্তব্য সঠিক নয়। আমার দল বিএনপি ভোটে যায় নি। আমি কাউকে সমর্থন করার প্রশ্নই উঠেনা, গনেন্দ্র বাবু চেয়েছিলেন আমি প্রকাশ্যে তারপক্ষে কাজ করি। আমি সেটি করি নি, দলের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে যাই নি। এজন্যই তিনি এখন এসব কথা বলছেন।
অন্যদিকে, অবনী মোহন দাসের একাধিক সমর্থকরা বলেছেন, আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল কেউ কেউ গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারকে সহযোগিতা করছেন। কর্মীদের অনেকে ঈঙ্গিতে বলেছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বিগত জাতীয় নির্বাচনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী আল আমিন চৌধুরী পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন বিএনপির গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারকে।
অবনী মোহন দাস অবশ্য বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা তাকেই সহযোগিতা করেছেন, অন্যদলের অনেকেও তাঁর ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে ভোট দেবার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন চৌধুরী বললেন, অবনী বাবু নিজেই তো আওয়ামী লীগের পক্ষে কোন ভোটে থাকেন না, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা কাকে ভোট দেবে, না দেবে তাদের বিষয়, এই নির্বাচনে দলের প্রার্থী নির্ধারণ হয় নি। আমি যখন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলাম অবনী বাবু তখন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন, বিগত জাতীয় নির্বাচনসহ এর আগের আরও দুটি জাতীয় নির্বাচনে অবনী বাবু আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন না দাবি করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান দিপু রঞ্জন দাসের প্রতি আমার দুর্বলতা রয়েছে। যেহেতু সে দলের কর্মী এবং নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কর্মী ছিল, এজন্য তাকে  সহযোগিতা করার পক্ষে আমি। কিন্তু দলের বাধা নিষেধ থাকায় প্রকাশ্যে ভোটের প্রচারণায় নামছেন না বলে জানান তিনি।

 

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জগন্নাথপুর যুব জমিয়তের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি শপথ অনুষ্ঠিত

শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের চেয়ে ব্যক্তি ইমেজই গুরুত্ব পাচ্ছে

প্রকাশের সময় : ০১:৪৯:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪
 

আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুই দলেই কোন্দল থাকায় শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলের চেয়ে ব্যক্তি ইমেজই গুরুত্ব পাচ্ছে। দুই শক্তিশালী প্রার্থীই দলের নেতা কর্মীদের দোষছেন। আবার অন্য দলের লোকজনও তাদের সঙ্গে আছেন, এমন ইঙ্গিতও দিচ্ছেন। অন্যদিকে বিএনপির বহিস্কার আদেশকে খুব একটা আমলে নিচ্ছেন না চেয়ারম্যান প্রার্থী উপজেলা বিএনপি সভাপতি গন্দ্রেন্দ্র চন্দ্র সরকার।
শাল্লায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাড. অবনী মোহন দাস,  উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার, বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা দিপু রঞ্জন দাস ও আওয়ামী লীগ নেতা এসএম শামীম।

স্থানীয় একাধিক ভোটার জানান, দুই শক্তিশালী প্রার্থী অবনী মোহন দাস ও গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের পক্ষেই বিভক্ত হয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক কর্মীরা।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারের প্রতীক আনারসের পক্ষে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আওয়ামী লীগের অনেকেই আছেন। আবার বিএনপির দায়িত্বশীল অনেকে প্রচারণায় ভোটের মাঠে না থাকলেও ভেতরে ভেতরে গনেন্দ্র এর আনারসের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
গনেন্দ্র চন্দ্র সরকার নিজেই বললেন, বিএনপির ৯০ ভাগ নেতা কর্মী তার সঙ্গে আছেন। দল তাঁকে বহিস্কার করেছে জেনেও তারা তাকে সহযোগিতা করেছেন। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল আওয়ামী লীগের এক প্রার্থীকে সহযোগিতা করছেন দাবি করে তিনি বললেন, দলের উপজেলা কমিটির একজন সহসভাপতিও তার বিরোধীতা করে আওয়ামী লীগের এক প্রার্থীকে সহযোগিতা করছেন। গনেন্দ্র’র দাবি তারা বিরোধীতা করলেও দলের কর্মী, সমর্থক, ভোটার এমনকি সাধারণ ভোটারের সমর্থন তার পক্ষেই আছে।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আউয়াল বললেন, গনেন্দ্র বাবু’র বক্তব্য সঠিক নয়। আমার দল বিএনপি ভোটে যায় নি। আমি কাউকে সমর্থন করার প্রশ্নই উঠেনা, গনেন্দ্র বাবু চেয়েছিলেন আমি প্রকাশ্যে তারপক্ষে কাজ করি। আমি সেটি করি নি, দলের সিদ্ধান্তের বিপক্ষে যাই নি। এজন্যই তিনি এখন এসব কথা বলছেন।
অন্যদিকে, অবনী মোহন দাসের একাধিক সমর্থকরা বলেছেন, আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল কেউ কেউ গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারকে সহযোগিতা করছেন। কর্মীদের অনেকে ঈঙ্গিতে বলেছেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, বিগত জাতীয় নির্বাচনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী আল আমিন চৌধুরী পরোক্ষভাবে সহযোগিতা করছেন বিএনপির গনেন্দ্র চন্দ্র সরকারকে।
অবনী মোহন দাস অবশ্য বলেছেন, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা তাকেই সহযোগিতা করেছেন, অন্যদলের অনেকেও তাঁর ঘোড়া প্রতীকের পক্ষে ভোট দেবার জন্য প্রচারণা চালাচ্ছেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন চৌধুরী বললেন, অবনী বাবু নিজেই তো আওয়ামী লীগের পক্ষে কোন ভোটে থাকেন না, আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা কাকে ভোট দেবে, না দেবে তাদের বিষয়, এই নির্বাচনে দলের প্রার্থী নির্ধারণ হয় নি। আমি যখন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়েছিলাম অবনী বাবু তখন বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছিলেন, বিগত জাতীয় নির্বাচনসহ এর আগের আরও দুটি জাতীয় নির্বাচনে অবনী বাবু আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে ছিলেন না দাবি করে এই আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, ‘শাল্লা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান দিপু রঞ্জন দাসের প্রতি আমার দুর্বলতা রয়েছে। যেহেতু সে দলের কর্মী এবং নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কর্মী ছিল, এজন্য তাকে  সহযোগিতা করার পক্ষে আমি। কিন্তু দলের বাধা নিষেধ থাকায় প্রকাশ্যে ভোটের প্রচারণায় নামছেন না বলে জানান তিনি।