শান্তিগঞ্জ উপজেলায় জাহিদুল ইসলাম নামের এক মোবাইল ব্যাংকিং ও ফ্লেক্সিলোড ব্যবসায়ীর উপর দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন জাহিদুল (২৮)। চিকিৎসার জন্য তাকে প্রথমে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ও পরে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার শারীরিক অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।
নগদ প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা ও ব্যবসায় ব্যবহৃত পাঁচটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি সোমবার দিবাগত রাত ১টায় উপজেলার পশ্চিম পাগলা ইউনিয়নের চন্দ্রপুর গ্রামের রাস্তায় মৃত. ইয়াছিন আলীর বাড়ির সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশে।
জাহিদুল একই গ্রামের আবদুল সোবহানের ছেলে ও ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাস্টার শফিকুল ইসলামের ছোটভাই। এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা। অনুসন্ধান করে প্রকৃত দোষী ব্যক্তিদের খোঁজে বের করে আইনের আওতায় আনার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার পাগলা বাজার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিকাশ, নগদসহ অন্যান্য মোবাইল ব্যাংকিং-এর ব্যবসা করতেন জাহিদুল। প্রতিদিনের মতো সোমবার রাতেও দোকান বন্ধ করে সাড়ে ১২টার দিকে নিজ বাড়ি চন্দ্রপুরে যাচ্ছিলেন তিনি। মৃত ইয়াছিন আলীর বাড়ির সামনের বৈদ্যুতিক খুঁটির পাশে হামলা করে দুর্বৃত্তরা।
জাহিদুলের পরিবারের লোকজন জানান, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পেছন থেকে লোহার শাবল দিয়ে মাথায় আঘাত করে গুরুতর আহত করা হয় জাহিদুলকে। গলায় এবং কপাল আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ সময় তার কাছে থাকা ব্যবসার নগদ প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা ও পাঁচটি মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। আহতাবস্থায় জাহিদুল বাড়ির সামনে গিয়ে চিৎকার করলে বেরিয়ে আসেন পরিবারের লোকজন। চিকিৎসার জন্য প্রথমে তাকে সুনামগঞ্জে ও পরে সিলেটে পাঠানো হয়েছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন।
জাহিদুলের চাচা, পাগলা বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী মো. আবদুল গফুর ও মাস্টার শফিকুল ইসলাম বলেন, জাহিদুল অত্যন্ত নীরব প্রকৃতির লোক। সে প্রতিদিন ব্যবসা করে রাত করেই বাড়ি ফিরে। আমাদের গ্রামের রাস্তায়, বলতে গেলে আমাদের বাড়ির সামনেই এই ঘটনাটি ঘটেছে। এটি সবাইকে অবাক করেছে। এই ঘটনায় এলাকার সবাই খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আশা করছি তারা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রকৃত দোষীদের খোঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবেন।
একই গ্রামের বাসিন্দা, ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন মিন্টু ও আকবুল হোসেন বলেন, এমন ঘটনা আমাদের এলাকায় এই প্রথম ঘটেছে। এটি অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। আমরাও ব্যবসা করে রাত করে বাড়ি ফিরি। এখন তো দেখছি আমরাও নিরাপদ নই। দোষীদের খোঁজে বের করার জোর দাবি জানাচ্ছি।
শান্তিগঞ্জ থানার পরিদর্শক (এসআই) কাজল চন্দ্র দেব বলেন, ঘটনাটি ঘটার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলেছি। তার আত্মীয় স্বজনের সাথে কথা বলেছি। দিনের বেলায়ও ঘটনাস্থলে গিয়েছি। এই ঘটনাটিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। তদন্ত চলমান। আশা করছি অচিরেই একটি সূত্র ধরে মামলার মূলোৎপাটন করতে পারবো।
শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজি মোক্তাদির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমাদের বিচক্ষণ অফিসাররা ঘটনাটি নিয়ে কাজ করছেন। দ্রুতই আসামীরা ধরা পড়বে।