সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছুকালের জন্য ধ্যান করাকে ইতিকাফ বলে। অনেকে রমজান মাসের শেষ ১০ দিন মসজিদে অবস্থান করে ইতিকাফ করেন।
বিশেষ নিয়তে বিশেষ অবস্থায় আল্লাহর আনুগত্যের উদ্দেশ্যে মসজিদে অবস্থান করাকে ইতিকাফ বলে। ইতিকাফরত অবস্থায় বান্দা নিজেকে আল্লাহর ইবাদতের জন্য দুনিয়ার অন্য সব কিছু থেকে আলাদা করে নেন। মূলত আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা যায় ইতিকাফে।
কোরআনে আছে, ‘আর স্মরণ করো সেই সময়কে, যখন আমি (কাবা) ঘরকে মানুষের মিলনক্ষেত্র ও আশ্রয়স্থল করেছিলাম। (আর আমি বলেছিলাম) তোমরা ইব্রাহিমের দাঁড়ানোর জায়গাকেই নামাজের জায়গারূপে গ্রহণ করো। আর যখন আমি ইব্রাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ করি যে তোমরা আমার ঘরকে পবিত্র রাখবে, তাদের জন্য যারা এ প্রদক্ষিণ করবে, এখানে বসে ইতিকাফ করবে এবং এখানে রুকু ও সিজদা করবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১২৫)।
নবী সুলাইমান (আ.)–এর দোয়া
ইতিকাফ তিন প্রকার। ১. সুন্নত: রমজানের শেষ দশকের ইতিকাফ। ২. নফল: যেকোনো সময় ইতিকাফ করা। ৩. ওয়াজিব: মানতের ইতিকাফ।
রমজানের শেষ ১০ দিনে ইতিকাফ
রমজানের শেষ ১০ দিন ইতিকাফ করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা কিফায়া। একজন ইতিকাফ করলে পুরো মহল্লাবাসীর পক্ষ থেকে এটি আদায় হয়ে যাবে। আর কেউই ইতিকাফ না করলে সবাই গুনাহগার হবে।
শেষ ১০ দিনের এই ইতিকাফের গুরুত্ব অপরিসীম। নবী (সা.) ইতিকাফ করেছেন, সাহাবিরাও করেছেন, হজরত আয়েশা (রা.) বলেন, ‘ইন্তেকাল পর্যন্ত রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফ করেছেন, এরপর তাঁর স্ত্রীরাও ইতিকাফ করেছেন।’ (বুখারি, হাদিস: ১,৮৬৮; মুসলিম, হাদিস: ২,০০৬)
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন, ‘যখন রমজানের শেষ ১০ রাত আসত, তখন নবী করিম (সা.) বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন এবং রাত জেগে থাকতেন। আর পরিবার-পরিজনকেও তিনি জাগিয়ে দিতেন।’ (বুখারি, হাদিস: ১,০৫৩)।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি কদরের রাতের সন্ধানে প্রথম ১০ দিন ইতিকাফ করলাম। এরপর ইতিকাফ করলাম মধ্যবর্তী ১০ দিন। এরপর অহির মাধ্যমে আমাকে জানানো হলো যে তা শেষ ১০ দিনে। সুতরাং তোমাদের যে ইতিকাফ পছন্দ করবে, সে যেন ইতিকাফ করে।’ এরপর মানুষ তাঁর সঙ্গে ইতিকাফে শরিক হয়। (মুসলিম, হাদিস: ১,৯৯৪)