আগের ম্যাচে কোস্টারিকার বিপক্ষে ১৯টি শট নিয়েও গোল করতে পারেনি ব্রাজিল। গোল মিসের হতাশাকে সঙ্গী করে এক পয়েন্ট নিয়েই কোপার মিশন শুরু করেছিল দরিফাউ জুনিয়রের শিষ্যরা। আজ প্যারাগুয়ের বিপক্ষেও একই স্মৃতি চোখ রাঙানি দিচ্ছিল। শুরুর দিকে ভিনিসিয়ুস-রদ্রিগোদের আক্রমণ পরিণতি পাচ্ছিল না। এমনকি পেনাল্টি থেকেও গোল করতে ব্যর্থ হন লুকাস পাকেতা। ফলে শঙ্কার মেঘটা ক্রশও ঘন হতে থাকে।
কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ ১০ মিনিটের ঝড়ে সে শঙ্কার মেঘ দূরে পাঠান ভিনিসিয়ুস স্যাভিওরা। প্যারাগুয়ের রক্ষণকে রীতিমতো তছনছ করে ৩-০ গোলে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। জোড়া গোল করেছেন রেয়াল মাদ্রিদ তারকা ভিনিয়সিয়ুস, অন্যটি স্যাভিওর। দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিল গোল পেয়েছে আরও একটি। এবার পেনাল্টি থেকে গোল করতে ভুল করেননি পাকেতা। মাঝে প্যারাগুয়ে একটি গোল ফিরিয়ে দিলেও ৪-১ গোলের বড় পেয়েছে ব্রাজিল।
আজ লাস ভেগাসে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলেছে ব্রাজিল। তবে গোলটা কোনোভাবে হচ্ছিল না। ম্যাচের দ্বিতীয় মিনিটেই ভিনিসিয়ুসের প্রচেষ্টা আটকে যায় প্যারাগুয়ের জমাট রক্ষণে। চার মিনিট পর জোয়াও গোমেসের দূর পাল্লার শট পোস্টের ওপর দিয়ে যায়।
তবে ১৫ মিনিটে প্রতি আক্রমণে প্রায় গোল খেয়ে বসেছিল ব্রাজিল। প্যারাগুয়ে স্ট্রাইকার দেমিয়ান বোবাদিলার শট ব্রাজিল ডিফেন্ডার এদের মিলিতাওয়ের পায়ে লেগে দিক বদলে ব্রাজিলের পোস্টের দিকে যাচ্ছিল। আলিসনের দুর্দান্ত প্রচেষ্টায় এ যাত্রায় বেঁচে যায় সেলেসাওরা।
২৩ মিনিটে মার্কুইনেসের হেড অল্পের জন্য গোল হয়নি। কর্নার থেকে নেওয়া পিএসিজি ডিফেন্ডারের হেড চলে যায় পোস্টের ওপর দিয়ে। ৬ মিনিট পর আবারও ব্রাজিল সমর্থকদের বুকের কাঁপুনি ধরিয়েছিলেন বোবাদিলা। এবারও প্যারাগুয়ে স্ট্রাইকারকে গোলবঞ্চিত করেন আলিসন।
ম্যাচের ৩১ মিনিটে গোলের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি হাতছাড়া করে ব্রাজিল। নিজেদের ডি বক্সের ভেতর প্যারাগুয়ে মিডফিল্ডার আন্দ্রেস কুবাসের হ্যান্ডবলে পেনাল্টি পায় ব্রাজিল। কিন্তু স্পটকিক থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন পাকেতা। শট নেন পোস্টের অনেক বাইরে দিয়ে।
ব্রাজিলকে অবশ্য বেশিক্ষণ আফসোসে পুড়তে হয়নি। ৩৫ মিনিটে সতীর্থদের সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় গোল করে ব্রাজিলকে আনন্দের উপলক্ষ্য এনে দেন ভিনিসিয়ুস। কোপায় এটি মাদ্রিদ তারকার প্রথম গোল। ৪৩ মিনিটে স্কোরলাইন দ্বিগুণ করেন স্যাভিও। বক্সের বা প্রান্ত থেকে নেওয়া রদ্রিগোর শট প্যারাগুয়ে গোলকিপার ঠেকালেও নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি। ফিরতি বল পেয়ে যান অনেকটা ফাঁকায় দাঁড়ানো স্যাভিও। সেখান থেকে বলে জাল জড়াতে কোনো কষ্টই হয়নি জিরোনাতে ধারে খেলতে যাওয়া এ রাইট উইংগারের।
এ গোলের আমেজ ভাটা না পড়তেই দলের তৃতীয় ও ব্যক্তিগত দ্বিতীয় গোলের দেখা পান ভিনিসিয়ুস। রদ্রিগোর আক্রমণ ঠেকাতে বল ক্লিয়ার করতে চেয়েছিলেন ওমার আলদেরেতে। কিন্তু দৌড়ে আসা ভিনিসিয়ুসের পায়ে লেসে সে শট আশ্রয় নেয় প্যারাগুয়ের জালেই। ৩-০ গোলের লিড নিয়ে বিরতিতে যায় ব্রাজিল।
দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য প্রায়শ্চিত্ত করেন আলদেরেতে। ম্যাচের ৪৮ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক শটে একটি গোল ফিরিয়ে দেন গেটাফের সেন্ট্রাল ব্যাক। এর তিনি মিনিট পরে প্যারাগুয়ের দারুণ একটি আক্রমণ ঠেকান আলিসন।
কিন্তু ধীরে ধীরে আবারও ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় ব্রাজিল। এরমধ্যে ৬৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে ঠান্ডা মাথায় স্কোরলাইন ৪-১ করেন পাকেতা। শেষদিকে দুদলই গোলের চেষ্টা করলেও স্কোরলাইন আর পরিবর্তন হয়নি। অবশ্য ম্যাচের ৮১ মিনিটে লাল কার্ড দেখেছেন প্যারাগুয়ে মিডফিল্ডার কুবাস।