Sylhet ০৪:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বায়ু দূষণে বাংলাদেশ এগিয়ে

১৩ মার্চ সকালে রাজধানীর গাবতলীতে। ছবি : আরিফুল আমিন

১৩ মার্চ সকালে রাজধানীর গাবতলীতে।

বাংলাদেশ বায়ুদূষণে ২০২৩ সালে এক নম্বর অবস্থানে ছিল। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল যথাক্রমে পাকিস্তান ও ভারত। 

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বায়ুমান বিষয়ক সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের একটি বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে ২০২৩ সালে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম২.৫ ছিল ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে প্রায় ১৫ গুণ বেশি।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তানের বাতাসে পিএম২.৫ ছিল ৭৩ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম। একই সময়ে বাতাসে ৫৪ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম পিএম২.৫ নিয়ে ২০২৩ সালে বিশ্বে তৃতীয় শীর্ষ দূষিত দেশ ছিল ভারত।

২০২২ সালে বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ ছিল মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদ। দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাকিস্তান। আর তৃতীয় স্থানে ছিল ইরান। তখন বাংলাদেশের অবস্থান ছিল পঞ্চম। আর ভারতের অবস্থান ছিল অষ্টম।

আইকিউএয়ারের বিজ্ঞানী ক্রিস্টি চেস্টার শ্রোডার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় বায়ুদূষণ অত্যন্ত প্রকট। দেশগুলোর চাষাবাদ পদ্ধতি, শিল্প ও বিপুলসংখ্যক জনসংখ্যা বায়ুদূষণের পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে। এসব দেশের বায়ুমান ভালো অবস্থানে ফেরার আগে আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আইকিউএয়ারের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে বিশ্বের দূষিত শীর্ষ ১০০টি শহরের মধ্যে ৯৯টি ছিল এশিয়ায়। ওই বছর শুধু ভারতের ৮৩টি শহর বিশ্বের দূষিত শহরের তকমা পেয়েছে। এসব শহরের বায়ুমান ডব্লিউএইচওর নির্ধারিত মানের চেয়ে ১০ গুণের বেশি খারাপ।

২০২৩ বিশ্বের মাত্র ৯ শতাংশ বা ৭ হাজার ৮০০ এর কয়েকটি বেশি শহরের বায়ুমান ডব্লিউএইচওর মান ধরে রাখতে পেরেছে। ডব্লিউএইচও নির্দেশনা মতে, কোনো শহরের প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে এমপি২.৫ পাঁচ মাইক্রোগ্রামের বেশি হতে পারবে না।

আইকিউএয়ার প্রতিদিন ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিশ্বের শহরগুলোর বায়ুমান প্রকাশ করে। এতে প্রতিদিন সকালে বায়ুমান সূচক (একিউআই) ১৭০-২৭০ স্কোর নিয়ে শীর্ষ পাঁচের মধ্যে থাকে ঢাকা।

একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে বাতাসের মান ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে ধরা হয়। তা ১৫০ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে সব মানুষের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ মনে করা হয়।

একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১+ স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

সূত্র : রয়টার্স, আইকিউএয়ার

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মাধবপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মামলায় পাঁচ সাংবাদিককে আসামি

বায়ু দূষণে বাংলাদেশ এগিয়ে

প্রকাশের সময় : ০২:৪৯:৩৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪

১৩ মার্চ সকালে রাজধানীর গাবতলীতে। ছবি : আরিফুল আমিন

১৩ মার্চ সকালে রাজধানীর গাবতলীতে।

বাংলাদেশ বায়ুদূষণে ২০২৩ সালে এক নম্বর অবস্থানে ছিল। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে ছিল যথাক্রমে পাকিস্তান ও ভারত। 

মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) বায়ুমান বিষয়ক সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের একটি বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে ২০২৩ সালে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম২.৫ ছিল ৭৯ দশমিক ৯ মাইক্রোগ্রাম, যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) নির্ধারিত পরিমাণের চেয়ে প্রায় ১৫ গুণ বেশি।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা পাকিস্তানের বাতাসে পিএম২.৫ ছিল ৭৩ দশমিক ৭ মাইক্রোগ্রাম। একই সময়ে বাতাসে ৫৪ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম পিএম২.৫ নিয়ে ২০২৩ সালে বিশ্বে তৃতীয় শীর্ষ দূষিত দেশ ছিল ভারত।

২০২২ সালে বিশ্বে সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ ছিল মধ্য আফ্রিকার দেশ চাদ। দ্বিতীয় স্থানে ছিল পাকিস্তান। আর তৃতীয় স্থানে ছিল ইরান। তখন বাংলাদেশের অবস্থান ছিল পঞ্চম। আর ভারতের অবস্থান ছিল অষ্টম।

আইকিউএয়ারের বিজ্ঞানী ক্রিস্টি চেস্টার শ্রোডার বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন ও ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় বায়ুদূষণ অত্যন্ত প্রকট। দেশগুলোর চাষাবাদ পদ্ধতি, শিল্প ও বিপুলসংখ্যক জনসংখ্যা বায়ুদূষণের পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে। এসব দেশের বায়ুমান ভালো অবস্থানে ফেরার আগে আরও খারাপ হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

আইকিউএয়ারের তথ্যমতে, ২০২৩ সালে বিশ্বের দূষিত শীর্ষ ১০০টি শহরের মধ্যে ৯৯টি ছিল এশিয়ায়। ওই বছর শুধু ভারতের ৮৩টি শহর বিশ্বের দূষিত শহরের তকমা পেয়েছে। এসব শহরের বায়ুমান ডব্লিউএইচওর নির্ধারিত মানের চেয়ে ১০ গুণের বেশি খারাপ।

২০২৩ বিশ্বের মাত্র ৯ শতাংশ বা ৭ হাজার ৮০০ এর কয়েকটি বেশি শহরের বায়ুমান ডব্লিউএইচওর মান ধরে রাখতে পেরেছে। ডব্লিউএইচও নির্দেশনা মতে, কোনো শহরের প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে এমপি২.৫ পাঁচ মাইক্রোগ্রামের বেশি হতে পারবে না।

আইকিউএয়ার প্রতিদিন ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিশ্বের শহরগুলোর বায়ুমান প্রকাশ করে। এতে প্রতিদিন সকালে বায়ুমান সূচক (একিউআই) ১৭০-২৭০ স্কোর নিয়ে শীর্ষ পাঁচের মধ্যে থাকে ঢাকা।

একিউআই স্কোর ১০১ থেকে ১৫০-এর মধ্যে হলে বাতাসের মান ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে ধরা হয়। তা ১৫০ থেকে ২০০-এর মধ্যে হলে সব মানুষের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’ মনে করা হয়।

একিউআই স্কোর ২০১ থেকে ৩০০-এর মধ্যে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ এবং ৩০১+ স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যা বাসিন্দাদের জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।

বাংলাদেশে একিউআই নির্ধারণ করা হয় দূষণের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে। সেগুলো হলো- বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন (ও৩)।

দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণে ভুগছে ঢাকা। এর বাতাসের গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে যায় এবং বর্ষাকালে কিছুটা উন্নত হয়।

সূত্র : রয়টার্স, আইকিউএয়ার