বানিয়াচংয়ে ত্রিপল মার্ডার মামলার প্রধান আসামী বদরুল আলম ওরফে বদিরকে গ্রেফতার করেছে বানিয়াচং থানা পুলিশ। বদির গ্রেফতারের ঘটনায় গতকাল শনিবার বিকাল ৫টায় হবিগঞ্জ পুলিশ সুপারের পক্ষে বানিয়াচং থানায় সংবাদ সম্মেলন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) পলাশ রঞ্জন দে। বানিয়াচং উপজেলার ১৩নং মন্দরী ইউনিয়নের আগুয়া গ্রামে সিএনজি অটোরিকশার সিরিয়াল দেয়াকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার এক ভয়াবহ সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। এ সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত ৩ জনের প্রাণহানী ঘটেছে। ঘটনার পরপরই বানিয়াচং ও হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার বিপুল সংখ্যক পুলিশ সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে পুলিশের একাধিক টীম ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে এবং ত্রিপল মার্ডার এর সাথে জড়িতদের গ্রেফতারে বানিয়াচং থানাসহ বিভিন্ন জেলায় পুলিশ অভিযান চালায়। ইতিমধ্যে পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে সংঘর্ষের মূল নায়ক যাকে কেন্দ্রে করে এ ভয়াবহ সংঘর্ষের সূত্রপাত বদরুল আলম ওরফে বদির (৪৫) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় অবস্থান করছে। বানিয়াচং থানার একদল পুলিশ ব্রাহ্মমবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার অর্ন্তগত নুরপুর এলাকা থেকে নাসিরনগর থানা পুলিশের সহায়তায় আগুয়া গ্রামের ত্রিপল মার্ডার মামলার প্রধান আসামী সিএনজি অটোরিকশা ষ্ট্যান্ডের লাইন ম্যানেজার বদরুল আলম ওরফে বদিরকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত বদিরকে নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনাস্থলসহ আশ পাশের বিভিন্ন জায়গায় অভিযানে নামে থানা পুলিশ। তার দেয়া স্বীকারোক্তি অনুয়ায়ী ঘটনাস্থলের পাশ^বর্তী ডোবা থেকে সংঘর্ষে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র ফিকল, টেটাঁ, রামদাসহ বিপুল সংখ্যক দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত বদরুল আলম ওরফে বদিরকে গতকাল বিকালে আদালতে প্রেরন করা হলে বিজ্ঞ আদালত তার জামিন না-মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরন করেন। এ বিষয়ে অতিরিক্তি পুলিশ সুপার পলাশ রঞ্জন দে জানান, আগুয়া গ্রামের ত্রিপল মার্ডারের প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামীদের গ্রেফতারেও পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আর যেন কোন সহিংসতা না ঘটে এ জন্য আগুয়া গ্রামে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্রই পুলিশকে অবহিত করা হলে তাৎক্ষনিক পুলিশ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে বলেও তিনি জানান।
উল্লেখ্য, গত ৯ মে বৃহস্পতিবার বানিয়াচংয়ে মন্দরী ইউনিয়নের আগুয়া বাজারে সিএনজি অটো রিকশার সিরিয়াল দেয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিনত হয় আগুয়া গ্রাম। দুই ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়। তন্মধ্যে গুরুতর আহত সিরাজ মিয়া, লিলু মিয়া এবং কাদির মিয়া চিকিৎসাধীন অবস্থায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে মারা যান। গত শুক্রবার বাদ আছর জানাযার নামাজ শেষে একই স্থানে সিরিয়ালভাবে ৩জনকে দাফন করা হয়। ইতিমধ্যে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি শাহ মিজানুর রহমানসহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ ঘটনাস্থল আগুয়া গ্রাম পরিদর্শন করেছেন। এসময় তারা সুষ্টু বিচারের আশ^াস দিয়ে এ সকল গ্রাম্য দাঙ্গার পুনরাবৃত্তি না ঘটাতে এলাকাবাসীসহ সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট ময়েজ উদ্দিন শরীফ রুয়েল, নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ ইকবাল হোসেন খানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। এলাকায় শান্তির পরিবেশ বজায় রাখার স্বার্থে এসব ঘৃন্য গ্রাম্য দাঙ্গায় নিজেদের না জাড়াতে এলাকাবাসীর প্রতি আহবানও জানান তারা।
সংবাদ শিরোনাম :
বানিয়াচংয়ে ত্রিপল মার্ডার মামলার প্রধান আসামী বদরুল গ্রেফতার
- হবিগঞ্জ প্রতিনিধি::
- প্রকাশের সময় : ০৪:৪২:১৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১২ মে ২০২৪
- ৫৩
জনপ্রিয় সংবাদ