প্রশ্নফাঁসকাণ্ডে গ্রেপ্তার পিএসসির সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলী জানিয়েছেন, রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষার আগে প্রশ্ন ও এর উত্তর অফিস সহকারী সাজেদুলের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন তিনি। শুধু তা-ই নয়, পরীক্ষার দুই দিন আগে প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করাতে সাভারের রেডিও কলোনিতে চাকরিপ্রার্থীদের জন্য ৪০ হাজার টাকায় কক্ষ ভাড়া নিয়েছিলেন তারা।
ওই কক্ষে ৫০-৬০ জন চাকরিপ্রার্থীকে ফাঁস করা প্রশ্নের উত্তর মুখস্থ করান আবেদ আলী। এ জন্য একেকজনের কাছ থেকে সাত-আট লাখ টাকা করে নেওয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে (সিএমএম) সৈয়দ আবেদ আলী এই জবানবন্দি দেন বলে আদালত ও সিআইডি সূত্রে জানা গেছে। তবে শুধু সৈয়দ আবেদ আলী একা নন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১৭ জনের মধ্যে আরও ৫ জন আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন, চাকরিপ্রার্থীদের জন্য ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় নিরাপদ কক্ষ নিতেন তারা।
সেই পাঁচজন হলেন পিএসসির ডেসপাস রাইডার মো. খলিলুর রহমান, পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম, পানির ফিল্টার ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন, তার ছোট ভাই সায়েম হোসেন ও রাজধানীর বেসরকারি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লিটন সরকার।
আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে পিএসসির অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম বলেন, রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন তিনি পেয়েছিলেন পিএসসির এক সদস্যের কক্ষে থাকা ট্রাংকে। ওই প্রশ্ন তিনি সৈয়দ আবেদ আলী ও খলিলুর রহমানের কাছে ৭৫ লাখ টাকায় বিক্রি করেছিলেন।
সিআইডি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ২০০৫ সাল থেকে ক্যাডার ও নন-ক্যাডারের অন্তত ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের সঙ্গে জড়িত গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। গত রবি ও সোমবার রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত পিএসসির দুই উপপরিচালক, এক সহকারী পরিচালক ও সাবেক গাড়িচালকসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। মঙ্গলবার তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্টন থানায় সরকারি কর্ম কমিশন আইনে মামলা হয়।
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার তৌহিদুল ইসলাম আজ একটি গণমাধ্যমকে বলেন, আদালত জবানবন্দি নিয়ে গ্রেপ্তারদের মধ্যে প্রথমে ৬ জনকে ও পরবর্তীতে ১১ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অপরদিকে যারা আদালতে জবানবন্দি দেননি তাদের রিমান্ডে পেতে আদালতে আবেদন করা হবে বলে জানান সিআইডির এই কর্মকর্তা