Sylhet ০৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নলুয়া হাওরে বাম্পার ফলনে কৃষকের চোখে-মুখে হাসির ঝিলিক

মাঠে মাঠে সোনার ফসল। সেই ফসলের আধা-পাকা ধানের মৌ মৌ গর্ন্ধে মাতোয়ারা কৃষক। এমন চিত্র দেখা গেছে জেলার অন্যতম জগন্নাথপুরের সর্বৃহৎ নলুয়া হাওরে।

গতকাল রোববার সরেজমিনে হাওর ঘুরে দেখা যায়, বাতাসে দুলছে বোরো ফসলের শীষ। পাকা,আধা পাকা কৃষকের কষ্ঠার্জিত আবাদকৃত ফসল মাঠের পর মাঠ সুবাস ছড়াচ্ছে। এরমধ্যে এসব সব কাটার ধুমও পড়েছে। এবারের ভালো ফসলে কৃষকের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। কৃষকরা বলছেন, গত ৫০ বছরেও এমন ভালো ফসল হয়নি। এরছর যে ফসল হয়েছে। ভালো ভালো গোলায় তুলছে পারেই তাঁরা খুশি।
হাওরের বেশিরভাবে কৃষক জানালেন, ২০১৭ সােেল অকাল বন্যায় পাউবোর দুর্বলকৃত বেড়িবাঁধ ভেঙে হাওরের ফসলডুবির ঘটনায় কৃষক পরিবারে দুর্দিন এনে আসে। এরপর বড়ধরণের অকাল বন্যার বিপর্যয়ের ঘটনা না ঘটলেও অতি বৃষ্টি, খড়া ও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এবারের বাম্পারে ফলনে কৃষকরা আনন্দিত। তবে শ্রমিক সংকট থাকায় চিন্তায় আছেন তাঁরা। যেসব জমিতে বৃষ্টির পানি জমে সেসব জমিনে ধান কাটার মেশিন নিয়ে কাজ করা যায়না। এতে করে দুশ্চিতাও দেখা দিয়েছে।

নলুয়া হাওরের ভুরাখালি গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, এবার খুবই ভালো আবাদ হয়েছে। প্রতি কেদারে মিলছে ২০-২৫ মন ধান। ফলণেও আমরা খুবই খুশি। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে দুশ্চিন্তায় আছি। এরমধ্যে জমিনে পানি থাকায় ধান কাটার মেশিন কাজ করছে না। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে আছে। এরকম ১০ থেকে ১২ দিন থাকলেও গোলায় ধান ভরে উঠবে।
আরেক কৃষক সুলতান মিয়া জানান, চাহিদার চেয়ে ভালো ফলন হওয়াতে খুবই আনন্দিত। এবার ২০ কেদার জমিনে বোরো ফসল চাষাবাদ করেছি। এরমধ্যে ৫ কেদার জমির ধান কাটা শুরু করেছি স্থানীয় কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে। পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় হাওরে শ্রমিক সংকট রয়েছে। ভালো ভালো ফসল ঘরে তুলছে পারছে এবছর আমরা অন্যবছরের তুলনায় লাভবান হব।
নলুয়া হাওরে ব্যষ্টিত চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, এবছর যে ফলন হয়েছে, গত ৫০বছরেও বোরো জমিতে এমন ফসল হয়নি। বাস্পার ফলণে কৃষকের চোখে মুখে হাঁসির ঝিলিক ফু^ঁটেছে।
হাওর বাঁচাও জগন্নাথপুর উপজেলা আন্দোলন কমিটির আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম জানান, হাওরে শ্রমিক সংকট ও পর্যাপ্ত হারভেষ্টার মেশিন না থাকায় ধান কর্তণে কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ এবিষয়টির প্রতি আরো বেশি গুরুত্ব থাকা প্রয়োজন।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানায়, জগন্নাথপুরের নলুয়া, মইয়াম, পিংলার হাওরসহ ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিনে বোরো আবাদ করা হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাউসার আহমদ বলেন, হাওরে এখন ধান কাটার ধুম পড়েছে। এবারে খুবই ভালো আবাদ হয়েছে। শ্রমিক সংকট নেই দাবী করে তিনি বলেন, জগন্নাথপুরের সব কটি হাওরে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। পাশাপাশি ৭৫টি কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেশিন হাওরে ধান কাটছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

নিরীহ কারও নামে মামলা হলে আইনি প্রক্রিয়ায় প্রত্যাহার: আইজিপি

নলুয়া হাওরে বাম্পার ফলনে কৃষকের চোখে-মুখে হাসির ঝিলিক

প্রকাশের সময় : ০৩:৩২:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২২ এপ্রিল ২০২৪

মাঠে মাঠে সোনার ফসল। সেই ফসলের আধা-পাকা ধানের মৌ মৌ গর্ন্ধে মাতোয়ারা কৃষক। এমন চিত্র দেখা গেছে জেলার অন্যতম জগন্নাথপুরের সর্বৃহৎ নলুয়া হাওরে।

গতকাল রোববার সরেজমিনে হাওর ঘুরে দেখা যায়, বাতাসে দুলছে বোরো ফসলের শীষ। পাকা,আধা পাকা কৃষকের কষ্ঠার্জিত আবাদকৃত ফসল মাঠের পর মাঠ সুবাস ছড়াচ্ছে। এরমধ্যে এসব সব কাটার ধুমও পড়েছে। এবারের ভালো ফসলে কৃষকের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা যাচ্ছে। কৃষকরা বলছেন, গত ৫০ বছরেও এমন ভালো ফসল হয়নি। এরছর যে ফসল হয়েছে। ভালো ভালো গোলায় তুলছে পারেই তাঁরা খুশি।
হাওরের বেশিরভাবে কৃষক জানালেন, ২০১৭ সােেল অকাল বন্যায় পাউবোর দুর্বলকৃত বেড়িবাঁধ ভেঙে হাওরের ফসলডুবির ঘটনায় কৃষক পরিবারে দুর্দিন এনে আসে। এরপর বড়ধরণের অকাল বন্যার বিপর্যয়ের ঘটনা না ঘটলেও অতি বৃষ্টি, খড়া ও শিলাবৃষ্টিতে কৃষকের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। এবারের বাম্পারে ফলনে কৃষকরা আনন্দিত। তবে শ্রমিক সংকট থাকায় চিন্তায় আছেন তাঁরা। যেসব জমিতে বৃষ্টির পানি জমে সেসব জমিনে ধান কাটার মেশিন নিয়ে কাজ করা যায়না। এতে করে দুশ্চিতাও দেখা দিয়েছে।

নলুয়া হাওরের ভুরাখালি গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান বলেন, এবার খুবই ভালো আবাদ হয়েছে। প্রতি কেদারে মিলছে ২০-২৫ মন ধান। ফলণেও আমরা খুবই খুশি। তবে শ্রমিক সংকটের কারণে দুশ্চিন্তায় আছি। এরমধ্যে জমিনে পানি থাকায় ধান কাটার মেশিন কাজ করছে না। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে আছে। এরকম ১০ থেকে ১২ দিন থাকলেও গোলায় ধান ভরে উঠবে।
আরেক কৃষক সুলতান মিয়া জানান, চাহিদার চেয়ে ভালো ফলন হওয়াতে খুবই আনন্দিত। এবার ২০ কেদার জমিনে বোরো ফসল চাষাবাদ করেছি। এরমধ্যে ৫ কেদার জমির ধান কাটা শুরু করেছি স্থানীয় কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে। পর্যাপ্ত শ্রমিক না থাকায় হাওরে শ্রমিক সংকট রয়েছে। ভালো ভালো ফসল ঘরে তুলছে পারছে এবছর আমরা অন্যবছরের তুলনায় লাভবান হব।
নলুয়া হাওরে ব্যষ্টিত চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, এবছর যে ফলন হয়েছে, গত ৫০বছরেও বোরো জমিতে এমন ফসল হয়নি। বাস্পার ফলণে কৃষকের চোখে মুখে হাঁসির ঝিলিক ফু^ঁটেছে।
হাওর বাঁচাও জগন্নাথপুর উপজেলা আন্দোলন কমিটির আহবায়ক সিরাজুল ইসলাম জানান, হাওরে শ্রমিক সংকট ও পর্যাপ্ত হারভেষ্টার মেশিন না থাকায় ধান কর্তণে কিছুটা বিঘ্নিত হচ্ছে। স্থানীয় কৃষি বিভাগ এবিষয়টির প্রতি আরো বেশি গুরুত্ব থাকা প্রয়োজন।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্র জানায়, জগন্নাথপুরের নলুয়া, মইয়াম, পিংলার হাওরসহ ১৫টি হাওরে ২০ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিনে বোরো আবাদ করা হয়েছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাউসার আহমদ বলেন, হাওরে এখন ধান কাটার ধুম পড়েছে। এবারে খুবই ভালো আবাদ হয়েছে। শ্রমিক সংকট নেই দাবী করে তিনি বলেন, জগন্নাথপুরের সব কটি হাওরে প্রায় ১০ হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। পাশাপাশি ৭৫টি কম্বাইন্ড হারভেষ্টার মেশিন হাওরে ধান কাটছে।