Sylhet ০৮:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তাহিরপুর বড়ছড়া শুল্ক ষ্টেশনে কয়লা আমদানিকারকের ডিপোতে থেকে ভারতীয় লং রেঞ্জ স্যূটিং রাইফেলস্ সহ তিন জন গ্রেফতার

সীমান্তের বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে কয়লা আমদানিকারকের ডিপোতে থাকা অফিস কক্ষ থেকে উচ্চ ক্ষমতা ভারতীয় লং রেঞ্জ স্যুটিং রাইফেলস সহ (স্নাইপার) তিন জনকে গ্রেফতার করেছে বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ (বিজিবি)।
গ্রেফতারকৃতরা হল, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম টেকেরঘাটের বড়ছড়ার আবুল মিয়া ওরফে আবুল মেইকারের ছেলে রাজু, একই উপজেলার একই গ্রামের আলতু মিয়ার ছেলে জালাল মিয়া, নুর আহমদের ছেলে রাসেল মিয়া।
শুক্রবার সন্ধায় সিলেট সেক্টরের ২৮- বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি)’র সুনামগঞ্জের অধিনায়ক লে. কর্নেল একে এম জাকারিয়া কাদির অস্ত্রসহ তিনজনকে গ্রেফতারের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজিবি’র দায়িত্বশীল সুত্র ও সীমান্তের স্থানীয়রা জানান, ব্যাটালিয়নের তাহিরপুরের টেকেরঘাট বিজিবি’র কোম্পানী হেডকোয়ার্টারের একটি টহল দল বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে এক কয়লা আমদানিকারকের ডিপোতে থাকা অফিস কক্ষ থেকে ওই তিন জনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেন শুক্রবার দুপুরে।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে থাকা মেসার্স শামীম ট্রেডার্স নামক কয়লা-চুনাপাথর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের লেদারবন্দ গ্রামের আফছার উদ্দিনের ডিপোতে থাকা অফিস কক্ষ থেকে অস্ত্রসহ ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে বিজিবি।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে থাকা কয়লা চুনাপাথর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের যে ডিপো কাম অফিস কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্যার করা হয় সেই প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী আফছার উদ্দিনের নিকট এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে মোবাইল ফোন কল করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।
এরপর প্রতিষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আফছার উদ্দিনের ছেলে শামীমের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, যে ডিপো কাম অফিস কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্যার করা হয়েছে সেটি ভাড়াকৃত জায়গায় আমাদের ডিপো বা অফিস হলেও আমরা কয়েকবছর ধরে ওই ডিপোতে আমদানিকৃত কয়লা- চুনাপাথর মজুদ করিনি, এক রকম পতিত ডিপো বা অফিস বলা যায়। অস্ত্র সহ তিন জন গ্রেফতারের বিষয়টি তিনি লোকমুখে জেনেছেন বলেও জানান ।
রাত ৮টায় বিজিবির ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে বিজিবির সিলেট সেক্টরের দায়িত্বশীল অফিসার জানান, আপাতত যে অস্ত্রটি উদ্যার করা হয়েছে সেই অস্ত্রের গায়ে মেইড ইন ভারত (ইন্ডিয়া ) লিখা রয়েছে। অস্ত্রটি মূলত লং রেঞ্জ রাইফেলস। অস্ত্রের সাথে অপটিক্যাল ল্যান্স ও অস্ত্রটি সেট করার উপকর পাওয়া গেছে। এ ধরণের অস্ত্র মূলত প্রাণঘাতি , অস্ত্রের সাথে জুড়ে থাকা অপটিক্যাল ল্যান্স দুরে থাকা টার্গেটকৃত ব্যাক্তিকে শব্দহীন ভাবে স্যুট করে আক্রমণ করার কাজে সন্ত্রাসীরা বহি:বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করে থাকে।
বিজিবির প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, কয়েক মামলায় সদ্য সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে জামিনে বেড়িয়ে আসা অপর এক ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসী সীমান্তের ওপার ভারত থেকে অস্ত্রটি সংগ্রহ করে অন্য কোন চক্রের নিকট বিক্রয় বা হস্তান্তরের জন্য।
প্রেস বিফিংকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র সিলেট সেক্টর কমান্ডার  কর্ণেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী সহ বিজিবি’র সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বশীল অফিসারগণ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার আ. ফ. ম আনোয়ার হোসেন খাঁন (পিপিএম) জানান, অস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃতদের থানায় সোপর্দ করে বিজিবি মামলা দায়ের করার পর এ মামলাটি নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে অস্ত্রের ধরণ, অস্ত্রের উৎস ও অস্ত্রটি কোন চক্রের নিকট বিক্রয় কিংবা হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছিল কি না? তা জানা যাবে।
সিলেট।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sylhet Vision

জনপ্রিয় সংবাদ

তাহিরপুর বড়ছড়া শুল্ক ষ্টেশনে কয়লা আমদানিকারকের ডিপোতে থেকে ভারতীয় লং রেঞ্জ স্যূটিং রাইফেলস্ সহ তিন জন গ্রেফতার

প্রকাশের সময় : ০৩:৪০:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২৪

সীমান্তের বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে কয়লা আমদানিকারকের ডিপোতে থাকা অফিস কক্ষ থেকে উচ্চ ক্ষমতা ভারতীয় লং রেঞ্জ স্যুটিং রাইফেলস সহ (স্নাইপার) তিন জনকে গ্রেফতার করেছে বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন বাংলাদেশ (বিজিবি)।
গ্রেফতারকৃতরা হল, সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের উওর শ্রীপুর ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম টেকেরঘাটের বড়ছড়ার আবুল মিয়া ওরফে আবুল মেইকারের ছেলে রাজু, একই উপজেলার একই গ্রামের আলতু মিয়ার ছেলে জালাল মিয়া, নুর আহমদের ছেলে রাসেল মিয়া।
শুক্রবার সন্ধায় সিলেট সেক্টরের ২৮- বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়ন (বিজিবি)’র সুনামগঞ্জের অধিনায়ক লে. কর্নেল একে এম জাকারিয়া কাদির অস্ত্রসহ তিনজনকে গ্রেফতারের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজিবি’র দায়িত্বশীল সুত্র ও সীমান্তের স্থানীয়রা জানান, ব্যাটালিয়নের তাহিরপুরের টেকেরঘাট বিজিবি’র কোম্পানী হেডকোয়ার্টারের একটি টহল দল বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে এক কয়লা আমদানিকারকের ডিপোতে থাকা অফিস কক্ষ থেকে ওই তিন জনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেন শুক্রবার দুপুরে।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে থাকা মেসার্স শামীম ট্রেডার্স নামক কয়লা-চুনাপাথর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের লেদারবন্দ গ্রামের আফছার উদ্দিনের ডিপোতে থাকা অফিস কক্ষ থেকে অস্ত্রসহ ওই তিন জনকে গ্রেফতার করে বিজিবি।
শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বড়ছড়া স্থল শুল্ক স্টেশনে থাকা কয়লা চুনাপাথর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের যে ডিপো কাম অফিস কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্যার করা হয় সেই প্রতিষ্ঠানের সত্বাধিকারী আফছার উদ্দিনের নিকট এ প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে মোবাইল ফোন কল করা হলে তিনি ফোন কল রিসিভ করেননি।
এরপর প্রতিষ্ঠানের সার্বিক পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আফছার উদ্দিনের ছেলে শামীমের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, যে ডিপো কাম অফিস কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্যার করা হয়েছে সেটি ভাড়াকৃত জায়গায় আমাদের ডিপো বা অফিস হলেও আমরা কয়েকবছর ধরে ওই ডিপোতে আমদানিকৃত কয়লা- চুনাপাথর মজুদ করিনি, এক রকম পতিত ডিপো বা অফিস বলা যায়। অস্ত্র সহ তিন জন গ্রেফতারের বিষয়টি তিনি লোকমুখে জেনেছেন বলেও জানান ।
রাত ৮টায় বিজিবির ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারে বিজিবির সিলেট সেক্টরের দায়িত্বশীল অফিসার জানান, আপাতত যে অস্ত্রটি উদ্যার করা হয়েছে সেই অস্ত্রের গায়ে মেইড ইন ভারত (ইন্ডিয়া ) লিখা রয়েছে। অস্ত্রটি মূলত লং রেঞ্জ রাইফেলস। অস্ত্রের সাথে অপটিক্যাল ল্যান্স ও অস্ত্রটি সেট করার উপকর পাওয়া গেছে। এ ধরণের অস্ত্র মূলত প্রাণঘাতি , অস্ত্রের সাথে জুড়ে থাকা অপটিক্যাল ল্যান্স দুরে থাকা টার্গেটকৃত ব্যাক্তিকে শব্দহীন ভাবে স্যুট করে আক্রমণ করার কাজে সন্ত্রাসীরা বহি:বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যবহার করে থাকে।
বিজিবির প্রাথমিক জিঙ্গাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায়, কয়েক মামলায় সদ্য সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে জামিনে বেড়িয়ে আসা অপর এক ছিনতাইকারী ও সন্ত্রাসী সীমান্তের ওপার ভারত থেকে অস্ত্রটি সংগ্রহ করে অন্য কোন চক্রের নিকট বিক্রয় বা হস্তান্তরের জন্য।
প্রেস বিফিংকালে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)র সিলেট সেক্টর কমান্ডার  কর্ণেল মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম চৌধুরী সহ বিজিবি’র সুনামগঞ্জ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বশীল অফিসারগণ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার রাতে সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার আ. ফ. ম আনোয়ার হোসেন খাঁন (পিপিএম) জানান, অস্ত্রসহ গ্রেফতারকৃতদের থানায় সোপর্দ করে বিজিবি মামলা দায়ের করার পর এ মামলাটি নিবিড় তদন্তের মাধ্যমে অস্ত্রের ধরণ, অস্ত্রের উৎস ও অস্ত্রটি কোন চক্রের নিকট বিক্রয় কিংবা হস্তান্তর করার প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছিল কি না? তা জানা যাবে।
সিলেট।