ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সাথে জড়িত সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতাকে গণধোলাই দিয়ে হত্যা করার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হন মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ জুলাই রাতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অন্যতম কারিগর ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে গণধোলাই দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেয় শিক্ষার্থীরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারও মৃত্যু হয়। ছাত্রলীগের সাবেক এই নেতার বিরুদ্ধে পূর্বে মাদক ব্যাবসা, জমিদখল, অস্ত্রবাজি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে।
ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, বিপ্লবোত্তর পরিস্থিতিতে প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধস্পৃহা একটি সাংস্কৃতিক রূপ নিচ্ছে; যা আমাদের হাজার হাজার ছাত্র-জনতার জীবনের বিনিময়ে অর্জিত সাফল্যকে ম্লান করে দিতে পারে। অপরাধী যত বড় অপরাধ করে থাকুক না কেন, আইনের আওতায় তার বিচার হতে হবে। ঢাবি ও জাবিতে মব কিলিংয়ের মতো হত্যাকাণ্ড দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম দুর্বলতা ও ব্যর্থতার স্পষ্ট প্রতিফলন। আমরা এ ধরনের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সাদেক আব্দুল্লাহ স্বাক্ষরিত এক বার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে নেতারা সমাজের সব অংশের জনগণের কাছে সহিংসতার বিরুদ্ধে একত্রিত হয়ে আওয়াজ তুলতে আহ্বান জানান।
তারা বলেন, “একটি সুস্থ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।”
ছাত্রশিবিরের নেতারা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন এবং ছাত্রজনতাকে সকল প্রকার মব জাস্টিস বা মব কিলিং বন্ধ করতে উদাত্ত আহ্বান জানান। সেই সাথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিষ্ক্রিয়তা পরিহার করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মব জাস্টিস বন্ধে কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।