সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বাড়ছে। গতকাল শুক্রবার ৫৫ জন শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে অধিকাংশ শিশু ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।
৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরেজমিনে দেখা গেছে, ৫৫ জন শিশু নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে। আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে অধিকাংশ ৬ মাস থেকে ২ বছরের বয়সী। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড রয়েছে। তবে সাধারণ ওয়ার্ডে নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত শিশুদের সংখ্যা বাড়ায় মেঝেতে জায়গা করে দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়ার পরিবর্তন, অত্যধিক গরম, অপরিচ্ছন্ন খোলা খাবার এবং দূষিত পানি হঠাৎ ডায়রিয়া বাড়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা।
জগন্নাথপুর পৌরসভার ভবানীপুর এলাকার আমিনা বেগম তার পাঁচ মাস বয়সী মেয়েকে ডায়রিয়া ও বমির জন্য শিশু (ডায়রিয়া) ওয়ার্ডে গত বুধবার ভর্তি করিয়েছেন। এখন ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে এলেও তার সন্তানের এখনো জ্বর রয়েছে।
হবিবপুর এলাকার রিপা বেগম নামের এক গৃহবধূ বলেন, তাঁর এক বছরের শিশুসন্তান পাঁচ দিন ধরে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর এখন কিছুটা ভালো আছে।
একই এলাকার সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আবু তাহের তাঁর সাড়ে পাঁচ বছরের মেয়ের জ্বর-সর্দি হলে চার দিন আগে হাসপাতালে ভর্তি করান।
আরেক গৃহবধূ তাঁর আট মাসের মেয়েকে ডায়রিয়ার লক্ষণ নিয়ে একই ওয়ার্ডে গত বৃহস্পতিবার ভর্তি করিয়েছেন। বর্তমানে তাঁর সন্তান সুস্থ আছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স স্টাফ তমা রানী বলেন, দুদিন ধরে শিশুদের পাশাপাশি বয়স্করাও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আওলাদ তালুকদার মুগ্ধ বলেন, প্রতিদিনই নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ৫৫ জন শিশু ভর্তি আছে। তাদের মধ্যে ৭ জন শিশু ডায়রিয়া এবং বাকিরা নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত।
জগন্নাথপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শারমিন আরা আশা বলেন, কয়েক দিন ধরে শিশুদের নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রকোপ লক্ষ করা যাচ্ছে। তাদের বিশেষ নজরদারিতে রেখে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে ডায়রিয়া রোগী বেড়েছে। এ সময়ে শিশুদের প্রতি যত্নশীল থাকতে হবে।