Sylhet ০৭:৪৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জগন্নাথপুরে ঈদের কেনাকাটায় মানুষের ঢল

 

ঈদ যখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে। তখন বস্ত্র বিপণিতে উপচেপড়া ঢল নেমেছে ক্রেতাদের। কেনাকাটার ধুম পড়লেও বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত যেন ঈদ উৎসব। প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুরের প্রধান ব্যবসা কেন্দ্রে জগন্নাথপুর বাজারে এমন চিত্র এখন দিবা—রাত্রিই দেখা যাচ্ছে।
মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র তিনদিন বাকি। এ ঈদকে সামনে রেখে উপজেলা সদরের জগন্নাথপুর পৌর শহরের জগন্নাথপুর বাজারে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঈদের কেনাটানা করতে জগন্নাথপুর উপজেলাবাসীর সঙ্গে পার্শ্ববতীর্ দিরাই, শান্তিগঞ্জ, ছাতক, ওসমানিনগর ও নবীগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুয়ায়ী বিক্রেতারাও কোটি কোটি টাকার মালামাল বিপণিতে মজুদ করেছেন। ঈদের বেচাকেনা যখন জমে উঠছে তখনই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ক্রেতা বিক্রেতারা।
সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ঈদকে ঘিরে বিভিন্ন বিপণি বিতান আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। হরেকরকম পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঈদ কেনাকাটা করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাজার আসা লোকজন। বড় বড় বিপণি বিতান থেকে শুরু করে ফুটপাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। যার যার সাধ্য অনুয়ায়ী কেনাকাটা চলছে। ক্রেতাদের পদভারে মুখরিত ঈদ বাজার। ব্যবসায়ীরাও খুশি। তবে বিপত্তি ঘটাচ্ছে বিদ্যুৎ।
ছেলে—মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে ঈদ কেনাকাটা করতে আসা গুলনেহার বেগম বলেন, ঈদের কেনাকাটার আনন্দই আলাদা। তবে এ আনন্দে মলিন করে দিচ্ছে বিদ্যুৎ। গরমের মধ্যে বিদ্যুতের দীর্ঘ লোডশেডিংয়ে দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এক সাথে ঈদের কাপড় কিনতে আসলাম। মেয়ের জন্য ‘আলেয়া কাট’ জামাটি কিনেছি। অন্যদের জন্য জামা কাপড় দেখছি।
শাড়ি কিনতে আসা আরেক গৃহবধূ মিলি আক্তার বলেন, সব কিছুরই দাম বেড়েছে। সেই হিসেবে কাপড়ের দামও বেড়েছে। তবে গরমের মধ্যে লোডশেডিং এ রোজা রেখে বেশ কষ্ট হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, প্রতিবছরের মতো এবারের ঈদবাজারে তরুণীসহ নারীদের প্রধান আকর্ষণ নতুন কালেকশন। এবারের কালেকশনে শীর্ষে রয়েছে ইন্ডিয়ান এক অভিনেত্রীর নাম অনুসারে ‘আলেয়া কাট’ ও ‘পদ্মজা’ নামের দুটি জামা। আর এবার ঈদ মাঠ কাঁপাতে ওইসব বাহারি রঙের আলেয়া কাট ও পদ্মজা নামের নতুন দুইটি জামার প্রতি প্রতি ছোট—বড় সবার আকর্ষণ বেশি। পুরুষদের পোশাকের মধ্যে বেশি চলছে বিভিন্ন রঙের পাঞ্জাবি—পায়জামা, শার্ট, টি—শার্ট, ডেনিম প্যান্ট, জিনস ও গ্যাবাডিন প্যান্ট। তবে ঘন ঘন লোডশেডিং এ ব্যবসার ব্যাঘাত হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ঈদ উপলক্ষে বিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে দোকানি রনি দাস বলেন, সারা বছরের বিক্রি ঈদেই হয়। গত বছরের চেয়ে এবার ভালোই বিক্রি হচ্ছে। বেশির ভাগ ইন্ডিয়ান জামা বিক্রি হচ্ছে।
এম আর ফ্যাশনের মালিক কদ্দুস মিয়া বলেন, ক্রেতার সমাগম খুব ভালো। বেচা—বিক্রিও ভালো হচ্ছে। কিন্তু লোডশেডিংয়ের ফলে জেনারেটরে বাড়তি খরচ হচ্ছে।
জগন্নাথপুর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোশাহিদ ভূঁইয়া জানান, সকাল থেকে সেহরি পর্যন্ত ঈদের কেনাকাটা করছে। প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাদের ঢল। তবে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি বেড়েছে। বড় বড় ব্যবসায়ী জেনারেটার কিংবা আইপিএসর মাধ্যমে বিদ্যুতের সুবিদা পেলেও মাঝারি ও ছোট দোকানিগুলোতে বিদ্যুতের অভাবে কেনাবেচায় ব্যাহত হচ্ছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) কর্মকতার্ আজিজুস ইসলাম জানান, সারাদেশের বিদ্যুতের ঘাটতে রয়েছে। চাহিদা অনুয়ায়ী আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। তবে চেষ্টা করছি ঈদের হাটে, নামাজের সময়, সেহরি ও ইফতারের সময় বিদ্যুৎ চালু রাখতে।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে আমরা তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। সিসিটিভি ক্যামেরাসহ পুলিশ টহল মাঠে রয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আমাদের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জগন্নাথপুর যুব জমিয়তের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি শপথ অনুষ্ঠিত

জগন্নাথপুরে ঈদের কেনাকাটায় মানুষের ঢল

প্রকাশের সময় : ১২:৫৮:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ এপ্রিল ২০২৪

 

ঈদ যখন দুয়ারে কড়া নাড়ছে। তখন বস্ত্র বিপণিতে উপচেপড়া ঢল নেমেছে ক্রেতাদের। কেনাকাটার ধুম পড়লেও বিদ্যুৎ বিপর্যয়ে বিধ্বস্ত যেন ঈদ উৎসব। প্রবাসী অধ্যুষিত জগন্নাথপুরের প্রধান ব্যবসা কেন্দ্রে জগন্নাথপুর বাজারে এমন চিত্র এখন দিবা—রাত্রিই দেখা যাচ্ছে।
মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র তিনদিন বাকি। এ ঈদকে সামনে রেখে উপজেলা সদরের জগন্নাথপুর পৌর শহরের জগন্নাথপুর বাজারে ক্রেতাদের ঢল নেমেছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঈদের কেনাটানা করতে জগন্নাথপুর উপজেলাবাসীর সঙ্গে পার্শ্ববতীর্ দিরাই, শান্তিগঞ্জ, ছাতক, ওসমানিনগর ও নবীগঞ্জ উপজেলার হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটছে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুয়ায়ী বিক্রেতারাও কোটি কোটি টাকার মালামাল বিপণিতে মজুদ করেছেন। ঈদের বেচাকেনা যখন জমে উঠছে তখনই বিদ্যুৎ বিভ্রাটের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন ক্রেতা বিক্রেতারা।
সরেজমিনে শহরের বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, ঈদকে ঘিরে বিভিন্ন বিপণি বিতান আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। হরেকরকম পসরা সাজিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঈদ কেনাকাটা করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বাজার আসা লোকজন। বড় বড় বিপণি বিতান থেকে শুরু করে ফুটপাত পর্যন্ত ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। যার যার সাধ্য অনুয়ায়ী কেনাকাটা চলছে। ক্রেতাদের পদভারে মুখরিত ঈদ বাজার। ব্যবসায়ীরাও খুশি। তবে বিপত্তি ঘটাচ্ছে বিদ্যুৎ।
ছেলে—মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে ঈদ কেনাকাটা করতে আসা গুলনেহার বেগম বলেন, ঈদের কেনাকাটার আনন্দই আলাদা। তবে এ আনন্দে মলিন করে দিচ্ছে বিদ্যুৎ। গরমের মধ্যে বিদ্যুতের দীর্ঘ লোডশেডিংয়ে দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এক সাথে ঈদের কাপড় কিনতে আসলাম। মেয়ের জন্য ‘আলেয়া কাট’ জামাটি কিনেছি। অন্যদের জন্য জামা কাপড় দেখছি।
শাড়ি কিনতে আসা আরেক গৃহবধূ মিলি আক্তার বলেন, সব কিছুরই দাম বেড়েছে। সেই হিসেবে কাপড়ের দামও বেড়েছে। তবে গরমের মধ্যে লোডশেডিং এ রোজা রেখে বেশ কষ্ট হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, প্রতিবছরের মতো এবারের ঈদবাজারে তরুণীসহ নারীদের প্রধান আকর্ষণ নতুন কালেকশন। এবারের কালেকশনে শীর্ষে রয়েছে ইন্ডিয়ান এক অভিনেত্রীর নাম অনুসারে ‘আলেয়া কাট’ ও ‘পদ্মজা’ নামের দুটি জামা। আর এবার ঈদ মাঠ কাঁপাতে ওইসব বাহারি রঙের আলেয়া কাট ও পদ্মজা নামের নতুন দুইটি জামার প্রতি প্রতি ছোট—বড় সবার আকর্ষণ বেশি। পুরুষদের পোশাকের মধ্যে বেশি চলছে বিভিন্ন রঙের পাঞ্জাবি—পায়জামা, শার্ট, টি—শার্ট, ডেনিম প্যান্ট, জিনস ও গ্যাবাডিন প্যান্ট। তবে ঘন ঘন লোডশেডিং এ ব্যবসার ব্যাঘাত হচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
ঈদ উপলক্ষে বিক্রি কেমন হচ্ছে জানতে চাইলে দোকানি রনি দাস বলেন, সারা বছরের বিক্রি ঈদেই হয়। গত বছরের চেয়ে এবার ভালোই বিক্রি হচ্ছে। বেশির ভাগ ইন্ডিয়ান জামা বিক্রি হচ্ছে।
এম আর ফ্যাশনের মালিক কদ্দুস মিয়া বলেন, ক্রেতার সমাগম খুব ভালো। বেচা—বিক্রিও ভালো হচ্ছে। কিন্তু লোডশেডিংয়ের ফলে জেনারেটরে বাড়তি খরচ হচ্ছে।
জগন্নাথপুর বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোশাহিদ ভূঁইয়া জানান, সকাল থেকে সেহরি পর্যন্ত ঈদের কেনাকাটা করছে। প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাদের ঢল। তবে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ে ভোগান্তি বেড়েছে। বড় বড় ব্যবসায়ী জেনারেটার কিংবা আইপিএসর মাধ্যমে বিদ্যুতের সুবিদা পেলেও মাঝারি ও ছোট দোকানিগুলোতে বিদ্যুতের অভাবে কেনাবেচায় ব্যাহত হচ্ছে।
জগন্নাথপুর উপজেলা আবাসিক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) কর্মকতার্ আজিজুস ইসলাম জানান, সারাদেশের বিদ্যুতের ঘাটতে রয়েছে। চাহিদা অনুয়ায়ী আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। তবে চেষ্টা করছি ঈদের হাটে, নামাজের সময়, সেহরি ও ইফতারের সময় বিদ্যুৎ চালু রাখতে।
জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ঈদকে সামনে রেখে আমরা তিন স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি। সিসিটিভি ক্যামেরাসহ পুলিশ টহল মাঠে রয়েছে। কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আমাদের নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।