সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় মৌখিকভাবে ইট ভাটা ভাড়া নিয়ে এলাকাবাসীর কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাত করেছেন জনৈক মাহবুবুর রহমান ওরফে শামসুল হক। মাদারীপুর জেলার রাজৈব উপজেলার দক্ষিণ হোগলা গ্রামের শিপন খাঁনের স্ত্রী সানজিদা রহমান এ অভিযোগ করেন।
তিনি রোববার (২৪ মার্চ ) সকাল ১১টায় সংবাদ সম্মেলন করে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলাধীন নন্দিরগাঁও ইউনিয়নে তার মালিকানাধীন নওয়াগাঁও ব্রিক্সস ফিল্ড (এনবিএফ) কার্যালয়ে লিখিত বক্তব্যে এ অভিযোগ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি আপন বড় বোনের স্মামী ঢাকার বনশ্রী ডি-ব্লক ৯নং বাসার বাসিন্দা মৃত ওয়াজের আলীর ছেলে মাহবুবুর রহমান ওরফে শামসুল হকের বিরুদ্ধে নিজের বিনিয়োগ করা, স্হানীয় ব্যবসায়ীদের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন সানজিদা। প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে নিজ শালিকার ইট ভাটা দখলের পাঁয়তারা করছেন বলেও দাবি করছেন তিনি। মাহবুবুর রহমান আত্মগোপনে গিয়ে তার স্ত্রী হাসিনা মমতাজের মাধ্যমে একাধিক জিডি ও কোর্টে মামলা ছাড়াও বিভিন্ন মিডিয়ায় ভূল ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে ইট ভাটার মালিক ও আমার ইট ভাটার বর্তমান ভাড়াটিয়াসহ সম্মানিত ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরে গিয়ে প্রতিষ্টানের বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি সাধনে ভুল তথ্য সরবরাহ করেছেন যার সাথে আমি বা আমার প্রতিষ্টানের কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। মাহবুবুর রহমানের প্রকৃত নাম শামসুল হক। তিনি ২০১৬ সালের দিকে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার নন্দিরগাওঁ ইউনিয়নের নন্দিরগাওঁ মৌজায় অবস্থিত জিয়াউল হকের মালিকানাধীন ইট ভাটাটি মেসার্স বিসমিল্লাহ ব্রিকস ফিল্ড নামে পার্টনারশিপ ব্যবসা শুরু করেন।
এসময় নানা কৌশল অবলম্বন করে আমার স্বামী শিপন খানকে ফিল্ডে মৌখিক ভাবে পার্টনারশিপ দিয়ে ফুসলিয়ে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। আমি আমার স্বামী শিপন খানের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তীতে গত ১১ জুলাই ২০২৩ থেকে ৩০ জুন ২০২০ পর্যন্ত সময়ের জন্য ইট ভাটা পরিচালনার জন্য এস কামরুল হাসান আমিরুলের সাথে এক ভাড়াটিয়া চুক্তি নামা সম্পাদন করে তাকে ভাটার দখল বুঝিয়ে দেয়া হয়।
তিনি ব্যবসা পরিচালনার স্বার্থে ‘বিদ্যুৎ বিল’সহ সকল বিল পরিশোধ করে ‘নোয়াগাঁও ব্রিক্স ফিল্ড’ নামে অফিস স্থাপন করে মাহবুবুর রহমানের নিকট যারা পাওনাদার ছিলেন তাহাদের ৫ কোটি টাকা দেনা ক্রমান্বয়ে শোধ করছেন। এ অবস্থায় আত্মগোপনে থাকা মাহবুবুর রহমান তার স্ত্রী হাসিনা মমতাজের মাধ্যমে মাহবুবুর রহমানের পক্ষে ‘সিলেট পরিবেশ অধিদপ্তরে’ নোয়াগাঁও ব্রিক্স ফিল্ড নামীয় ইট ভাটার অনুকূলে জারিকৃত পরিবেশ ছাড়পত্র বাতিলের জন্য জাল জালিয়াতিপূর্ণভাবে সৃষ্ট আমার নামীয় জাল চুক্তিনামা দাখিল করে মিথ্যা তথ্য দিয়ে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর পরিবেশ অধিদপ্তরে মিথ্যা বর্ণনায় একখানা আবেদন করেন।
চতুর মাহবুবুর রহমান তথ্য গোপন করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সিলেটের জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্র্যাট ৪নং আমলী আদালত সিলেটে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন (নং ৩৭)। এই মামলায় বাদিনী যেসব ডকুমেন্টস জমা দিয়েছেন সেই ডকুমেন্টসে নোটারী পাবলিক সিলেট বাংলাদেশের মাধ্যমে সম্পাদিত যৌথ অংশীদার ব্যবসয়াীক দলিলে ৯(ক) নিজ নিজ মূলধন বিনিয়োগের হিসাবে মাহবুবুর রহমানের নিকট আমার স্বামী শিপন খানের ১.৯৫ কোটি টাকা পাবেন বলে সুস্পষ্ট প্রমান রয়েছে। তাদের দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় উল্লেখ করেছেন যে মাহবুবুর রহমান দুই মাস ভাটায় আসেন নি, যাহা সত্য নহে তার প্রমান ২০২১ সালের ২,৩,৪ ও ৫ মারচ এর দৈনিক জমা খরচের খাতায় নিজ হস্তে লিখিত হিসাব যা সব সময় ইট ভাটায় রক্ষিত থাকে। অথচ তারা মামলায় উল্লেখ করেছেন তিনি ফেব্রুয়ারী মাস থেকে দুই মাস ইট ভাটায় যান নি।
এছাড়াও বিভিন্ন গণমাধ্যমে আমি সানজিদা রহমান, আমার স্বামী শিপন খান এবং আমার মালিকানাধীন নওয়াগাওঁ ব্রিকস ফিল্ডের ভাড়াটিয়া এস কামরুল হাসান আমিরুলের বিরুদ্ধে মানহানিকর অপ-প্রচার চালাচ্ছে। মাহবুবুর রহমান ও হাসিনা মমতাজ মিথ্যা তথ্য দিয়ে মানহানিকর অপ-প্রচারের বিরুদ্ধে আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তাদের সকল অপকর্ম ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে আমি অচিরেই আইনী পদক্ষেপ নিচ্ছি। বৈধভাবে ইট ভাটা পরিচালনাসহ সার্বিক বিষয়ে তিনি প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ ও সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।