সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের তৎপরতা স্বাভাবিক হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে। তবে সালুটিকর- গোয়াইনঘাট, গোয়াইনঘাট- রাধানগর ও হাতির পড়া- ফতেহপুর সড়কগুলোর বিচ্ছিন্ন অংশ বন্যার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় যানচলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে সারিঘাট হয়ে সিলেট সদরের সাথে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে এবং যান চলাচল করছে। অন্যান্য সড়কগুলোতে ভাঙ্গা ভাঙ্গা জায়গায় যতটুক সম্ভব যান চলাচল করছে।
গত চার দিন ধরে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টি কারণে পাহাড়ি ঢল নামে। পাশাপাশি স্হানীয়ভাবে ভারী বৃষ্টিও হয়। এ সময় নদ-নদীর পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় উপজেলায় তৃতীয় দফা বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৫১টি গ্রাম ও ১৫শ হেক্টর আবাদি জমি ডুবে গিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়, ভেসে গেছে শতশত পুকুরের মাছ। অসংখ্য বাসাবাড়িও হয়েছে প্লাবিত।
জানা যায় উপর্যুপরি বন্যায় বিপর্যস্ত জনজীবন। মানুষের বাড়িঘরে পানি উঠে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছেন নিম্মাঞ্চলের মানুষজন। ঘরে কোমর সমান পানি উঠায় অনেকের ঘরে ঠিকমত চুলাও জ্বলছে না। ১ম ও ২য় দফা বন্যায় ১৬০ মেট্রিকটন জিআর চাল, ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ছাড়াও রান্না করা খাবার, শিশু খাদ্য ও গো-খাদ্য বিতরণ করে গোয়াইনঘাট উপজেলা প্রশাসন।
পাশাপাশি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ইমরান আহমদ এমপি এ উপজেলা সাড়ে ৪ হাজার প্যাকে শুকনো খাবার ও ২ হাজার ৭০০ টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেন। তৃতীয় দফা বন্যায় বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রের ৯৮ জন মানুষকে নিয়মিত রান্না করা খাবার দেওয়ার পাশাপাশি উপজেলায় সাড়ে ২৪ মেট্রিকটন জিআর চাল বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শীর্ষেন্দু পুরকায়স্থ জানান তৃতীয় দফা বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে ৯৮ জন মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
এ ব্যাপারে গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ তৌহিদুল ইসলাম বলেন স্থানীয় ভারি বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে গোয়াইনঘাট উপজেলায় সৃষ্ট তৃতীয় দফা বন্যয় বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রিত ৯৮ জন মানুষের মাঝে নিয়মিত রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। পাশাপাশি উপজেলায় বন্যার্ত মানুষের মাঝে সাড়ে ২৪ মেট্রিকটন জিআর চাল বিতরণ করা হচ্ছে।