Sylhet ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কি কারণে হত্যা করা হয়েছিল মুনতাহাকে?

নিখোঁজের আটদিন পর সিলেটের কানাইঘাটে অপহৃত শিশু মুনতাহার মরদেহ পাওয়া গেছে বাড়ির পাশে। হত্যার পর বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ডোবা থেকে লাশ সরানোর সময় প্রতিবেশী নারীকে হাতেনাতে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। পুলিশের ধারণা, পূর্ব শত্রুতার জেরে মুনতাহার সাবেক প্রাইভেট শিক্ষিকা অপহরণ করে হত্যা করেছে। প্রতিবেশি ও মুনতাহার শিক্ষক মারজিয়াকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় ক্ষোভ ছিল তার পরিবারের উপর। এছাড়া মারজিয়ার উপর চুরির অপবাদ দেওয়ার ক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৩ তারিখ রাতেই মুনতাহাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ডোবায় ফেলে রাখা হয়।
গত ৩ নভেম্বর সকালে নিখোঁজ হয় কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদলের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে ৫ বছরের কণ্যা শিশু মুনতাহা। দিনভর অনেক খোঁজাখুজির পর মুনতাহা ফিরে না আসায় থানায় জিডি করে পরিবার।
নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর, ভোররাতে প্রতিবেশী আলিফজান বিবি, লাশ ডোবা থেকে পুকুরে ফেলার সময় হাতেনাতে আটক করা হয় তাকে। এ ঘটনায় হতবাক এলাকার মানুষ। এ ঘটনার পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আগুন দিয়েছে ঘাতক পরিবারের বাসায়।
মুনতাহা চাচা কয়সর আহমেদ, মুনতাহার সাবেক গৃহশিক্ষিকা মার্জিয়া পুর্ব শত্রুতার জেরে অপহরণ করে হত্যা করে। পরে, বাড়ির পাশে ডোবায় কাঁদার নিচে পুঁতে রাখে। গতরাত আনুমানিক ৩ টার দিকে মারজিয়ার মা আলিফজান বিবি সেই লাশ সরিয়ে নিতে গেলে জনতার হাতে আটক হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সিলেটের  পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো রফিকুল ইসলাম জানান, মারজিয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৩ নভেম্বর রাতেই মুনতাহাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ডোবায় ফেলেরাখা হয়। মারজিয়াকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় ক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে মারজিয়া, তার মা আলিফজান বিবিকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিখোঁজের পর মুনতাহার ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আলোচিত নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।
এদিকে মুনতাহার বাবা বলেন, মুনতাহার বাবা মা আগে ছিল আমার। এখন মুনতাহা ১৮ কোটি জনতার।বাংলার মানুষ যেভাবে আমার মুনতাহার প্রতি ভালবাসা দেখিয়েছেন,আমরা কোন দিন ভূলতে পারব না।বাংলার মানুষ যে ভাবে চাইবে সেভাবে বিচার হবে।  হত্যাকারীদের কোন ক্ষমা নেই।

সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান  জানান,আমরা ঘটনার রহস্য উৎঘাটন করেছি।অপরাধীদের কোন ছাড় নেই।তুচ্ছ একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে,এত বড় একটা ঘটনা ঘটিয়েছে।এ ঘটনায় পত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কিছু লোক জড়িত। জড়িতদের ব্যাপারে শীঘ্রই আপনাদের জানানো হবে।
 এদিকে আজ(১০নভেম্বর) দুপুরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পোস্টমর্টেমের পর সন্ধায় পারিবারিক কবরস্থানে মুনতাহার দাফন সম্পূর্ণ করা হয়েছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Sylhet Vision

জগন্নাথপুর যুব জমিয়তের নবনির্বাচিত কমিটির পরিচিতি শপথ অনুষ্ঠিত

কি কারণে হত্যা করা হয়েছিল মুনতাহাকে?

প্রকাশের সময় : ১২:৪৩:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪
নিখোঁজের আটদিন পর সিলেটের কানাইঘাটে অপহৃত শিশু মুনতাহার মরদেহ পাওয়া গেছে বাড়ির পাশে। হত্যার পর বাড়ির পাশে পরিত্যক্ত ডোবা থেকে লাশ সরানোর সময় প্রতিবেশী নারীকে হাতেনাতে আটক করেছে স্থানীয় জনতা। পুলিশের ধারণা, পূর্ব শত্রুতার জেরে মুনতাহার সাবেক প্রাইভেট শিক্ষিকা অপহরণ করে হত্যা করেছে। প্রতিবেশি ও মুনতাহার শিক্ষক মারজিয়াকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় ক্ষোভ ছিল তার পরিবারের উপর। এছাড়া মারজিয়ার উপর চুরির অপবাদ দেওয়ার ক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটে। স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৩ তারিখ রাতেই মুনতাহাকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর ডোবায় ফেলে রাখা হয়।
গত ৩ নভেম্বর সকালে নিখোঁজ হয় কানাইঘাট উপজেলার সদর ইউনিয়নের বীরদলের ভাড়ারিফৌদ গ্রামের শামীম আহমদের মেয়ে ৫ বছরের কণ্যা শিশু মুনতাহা। দিনভর অনেক খোঁজাখুজির পর মুনতাহা ফিরে না আসায় থানায় জিডি করে পরিবার।
নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর, ভোররাতে প্রতিবেশী আলিফজান বিবি, লাশ ডোবা থেকে পুকুরে ফেলার সময় হাতেনাতে আটক করা হয় তাকে। এ ঘটনায় হতবাক এলাকার মানুষ। এ ঘটনার পর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী আগুন দিয়েছে ঘাতক পরিবারের বাসায়।
মুনতাহা চাচা কয়সর আহমেদ, মুনতাহার সাবেক গৃহশিক্ষিকা মার্জিয়া পুর্ব শত্রুতার জেরে অপহরণ করে হত্যা করে। পরে, বাড়ির পাশে ডোবায় কাঁদার নিচে পুঁতে রাখে। গতরাত আনুমানিক ৩ টার দিকে মারজিয়ার মা আলিফজান বিবি সেই লাশ সরিয়ে নিতে গেলে জনতার হাতে আটক হয়। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সিলেটের  পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) মো রফিকুল ইসলাম জানান, মারজিয়ার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ৩ নভেম্বর রাতেই মুনতাহাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর ডোবায় ফেলেরাখা হয়। মারজিয়াকে শিক্ষকতা থেকে অব্যাহতি দেওয়ায় ক্ষোভ থেকে এই হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ। আটক করা হয়েছে মারজিয়া, তার মা আলিফজান বিবিকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনার সাথে আর কেউ জড়িত আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিখোঁজের পর মুনতাহার ছবি ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আলোচিত নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি স্বজন ও এলাকাবাসীর।
এদিকে মুনতাহার বাবা বলেন, মুনতাহার বাবা মা আগে ছিল আমার। এখন মুনতাহা ১৮ কোটি জনতার।বাংলার মানুষ যেভাবে আমার মুনতাহার প্রতি ভালবাসা দেখিয়েছেন,আমরা কোন দিন ভূলতে পারব না।বাংলার মানুষ যে ভাবে চাইবে সেভাবে বিচার হবে।  হত্যাকারীদের কোন ক্ষমা নেই।

সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান  জানান,আমরা ঘটনার রহস্য উৎঘাটন করেছি।অপরাধীদের কোন ছাড় নেই।তুচ্ছ একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে,এত বড় একটা ঘটনা ঘটিয়েছে।এ ঘটনায় পত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে কিছু লোক জড়িত। জড়িতদের ব্যাপারে শীঘ্রই আপনাদের জানানো হবে।
 এদিকে আজ(১০নভেম্বর) দুপুরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পোস্টমর্টেমের পর সন্ধায় পারিবারিক কবরস্থানে মুনতাহার দাফন সম্পূর্ণ করা হয়েছে।